ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

এ লজ্জা আমরা কোথায় রাখবো?

মিনার মনসুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
এ লজ্জা আমরা কোথায় রাখবো?

|| মিনার মনসুর ||
একাত্তরে যারা গণহত্যা ও গণধর্ষণে মদদ জুগিয়েছিল, যারা বেছে বেছে দেশের সেরা সন্তানদের হত্যা করেছিল অথবা হত্যার প্ররোচনা দিয়েছিল পাকিস্তানি নরঘাতকদের, তারাই যে আজকের জঙ্গিদের আদি পিতা তাতে কোনো সংশয় নেই। বাংলাদেশে বিকাশমান জঙ্গিবাদের আরও শেকড় আছে- এটা নিশ্চিত। তবে প্রধান শেকড়টি যে জামায়াত তা বোঝার জন্যে জঙ্গিদের স্বীকারোক্তির প্রয়োজন নেই; প্রয়োজন নেই বড়ো মাপের কোনো গবেষণারও। এ জন্যে শুধু পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী হত্যার বিবরণগুলোতে একবার চোখ বোলানোই যথেষ্ট। এ জাতির অন্য অনেক দুর্ভাগ্যের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি দুর্ভাগ্য হচ্ছে- আমরা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যতোটা গলাবাজি করেছি, কাজের কাজ সে তুলনায় কিছুই করিনি। আমাদের চোখের সামনে যে-সব ভয়াবহ যুদ্ধাপরাধের ঘটনা ঘটেছে শুধু সেগুলো যত্নের সঙ্গে গ্রন্থিত ও সংকলিত করে জনসমক্ষে তুলে ধরার কাজটিও করা হয়নি গত ৪৭ বছরে। সেই কাজগুলো করা হলে আজ আর স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি তর্জনগর্জন করার সুযোগ পেতো না। সুযোগ পেতো না রাতকে দিন আর দিনকে রাত করার। আর যারা নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বলে দাবি করেন তাদেরও আবেগসর্বস্ব বক্তৃতার প্রয়োজন হতো না। কাজই কথা বলতো এবং তা আমাদের অজস্র মেঠো বক্তৃতার চেয়ে বেশি শক্তিশালী হতো।  

২.

একাত্তরের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি ঘাতকদের গণহত্যাযজ্ঞের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সেই রাতেই ঘরে ঘরে তল্লাশি চালিয়ে তারা হত্যা করেছিল বাংলার অনেক ঋষিতুল্য কৃতি সন্তানকে। তাদের একজন ছিলেন ইংরেজির অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা। শহীদ অধ্যাপকের স্ত্রী বাসন্তী গুহঠাকুরতা লিখেছেন:

‘জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা বাংলাদেশের মাটিতে, নয় আকাশে বাতাসে- পঞ্চভূতে মিশে আছে। তার হৃদয়টা বাংলাদেশের বাঙালী হৃদয়ে মিশে থাক। বাংলার মুনীর চৌধুরী, আর মোফাজ্জলকে যে পাওয়াই গেল না। অনেক সাংবাদিক, সাহিত্যিকের লাশও তো খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাদের পেতে হলে সারা বাংলাদেশের মাটি চষতে হতো। নদীতে তো লাশ এক জায়গায় থাকে না। তাঁদের কঙ্কাল কি তাহলে নদীমাতৃক বাংলাদেশ ছেড়ে নীল সমুদ্রে পাড়ি জমিয়েছে? অসীম নীল আকাশের নীচে নীল জলে তলিয়ে গেছে? এই কি নীলনকশার পরিণতি?’ (একাত্তরের স্মৃতি, পৃ-১৬২)।

হ্যাঁ, এর পেছনে একটি নীলনকশা যে ছিল, সেটা তখনই বোঝা গিয়েছিল। নীলনকশা ছাড়া শত শত শিক্ষক, চিকিৎসক ও আইনজীবীকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে হাত-পা বেঁধে হত্যা করা কখনও সম্ভব নয়। বাংলা একাডেমি যে প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে শুধু প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ের ৯৬৮ জন শিক্ষককে হত্যা করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজের শহীদ শিক্ষক এবং সারাদেশের আইনজীবী ও সাংবাদিকদের নাম এখানে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। (শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মারকগ্রন্থ, পৃ-৮৩)।

হত্যার টার্গেট ও ধরন দেখেও এর পেছনের নীলনকশাটি বোঝা যায়। সেই নীলনকশাটি ছিল বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করে বাংলাদেশকে স্থায়ীভাবে মেধাশূন্য ও পঙ্গু করে ফেলা। তাই বাঙালিদের সকল আন্দোলন-সংগ্রামের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ই ছিল তাদের আক্রমণের প্রথম ও প্রধান লক্ষ্যবস্তু। একাত্তরের ২৫ মার্চ নীলনকশার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছিল বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যার মধ্য দিয়ে, বিজয়ের পূর্বমুহূর্তেও তারা নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের হাত থেকে রক্ষা পাননি। এগুলো কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয়; বরং একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটানো হয়েছে। আর এ পরিকল্পনার সঙ্গে কারা ছিল, কারা সেটা বাস্তবায়ন করেছে এবং কারা ঘাতকদের পথ দেখিয়ে নিয়ে গেছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়িতে বাড়িতে তা এতোটাই স্পষ্ট ও সর্বজনবিদিত যে বাঙালির মতো একটি আত্মবিস্মৃত ও ইতিহাসবিমুখ জাতির পক্ষেও তার ভয়াবহতা বিস্মৃত হওয়া কঠিন।

বিজয়ের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে, ১৫ ডিসেম্বর বিকেলে, নিজ বাসা থেকে অপহৃত হয়েছিলেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের স্বনামখ্যাত চিকিৎসক প্রফেসর ডা. ফজলে রাব্বি। আর এর অসহায় প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন তাঁর স্ত্রী ডা. জাহানারা রাব্বি। তিনি লিখেছেন:

‘‘...বাবুর্চি এলো- ফিসফিস করে বললো, ‘সাহেব বাড়ি ঘিরে ফেলেছে ওরা।’ তিনি (ফজলে রাব্বি) সোজা সামনের বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালেন। আমিও গিয়ে দাঁড়ালাম। হ্যাঁ, বহু রাজাকার, আলবদর, আর্মি। একটা সাদা কাদা মাখানো মাইক্রোবাস, একটি জীপ। তিনি নিচু গলায় পেছনে না ফিরেই বললেন, ‘টিংকুর আম্মা, আমাকে নিতে এসেছে।’ অপহরণের তিনদিন পর তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল বধ্যভূমি থেকে।” তাঁর স্ত্রী লিখেছেন: ‘১৮ ডিসেম্বর। তাঁর মৃতদেহ খুঁজে বাড়ি আনলো আমার এক আত্মীয়। হ্যাঁ, তিনি ঘুমিয়ে আছেন শান্তিতে। মুখটা ডানদিকে একটু হেলানো। বাঁ দিকের গালের হাড়ে ও কপালের বাঁ পাশে বুলেটের ছিদ্র। সারাটা বুকে বহু বুলেটের চিহ্ন- কত আমি গুনিনি।’ (শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মারকগ্রন্থ, পৃ-১৯)।

বুদ্ধিজীবী হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান লিখেছেন:

‘আমার এম এ ক্লাসের ছাত্র ছিল সাংবাদিক আ. ন. ম. গোলাম মোস্তফা আর কলেজ শিক্ষক রফিকুল ইসলাম। অনার্স ক্লাসের ছাত্র ছিল রামকৃষ্ণ অধিকারী- পরে সেও কলেজে যোগ দেয়। সাবসিডিয়ারি ক্লাসের ছাত্র ছিল সাংবাদিক সৈয়দ নজমুল হক। কী ট্রাজেডি মানবজীবনের! এদের মতোই ছাত্র ছিল আরো একজন- আলবদরের সংগঠক হিসেবে সে অনেকের সঙ্গে ধরে নিয়ে যায় তার এবং আমার শিক্ষক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীকে।’ (মুক্তিযুদ্ধ এবং তারপর, আনিসুজ্জামান, পৃ-১৯)।

প্রখ্যাত চিকিৎসক আলীম চৌধুরীও আলবদর বাহিনীর বর্বরতার শিকার হয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে তাঁর স্ত্রী শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী ও ছোটভাই আবদুল হাফিজ চৌধুরী গণতদন্ত কমিশনকে জানান, একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর আলবদররা তাদের বাসায় আসে। এর আগে তারা ৪৫ মিনিট মাওলানা মান্নানের (ইনকিলাবের প্রতিষ্ঠাতা ও জে. এরশাদ সরকারের ধর্মমন্ত্রী) বাসায় ছিল। সেখান থেকে এসে তারা ডা. আলীম চৌধুরীকে ধরে নিয়ে যায়। স্বাধীনতার পর আজিমপুরের একটি বাসা থেকে পলাতক মাওলানা ধরা পড়েন। সেই সময় মাওলানা মান্নান স্বীকার করেছিলেন যে তার সরাসরি ছাত্র এমন ৩ জন আলবদরই ডা. আলীম চৌধুরীকে ধরে নিয়ে গেছে। (আমাদের সময়, ১৩ ডিসেম্বর ২০০৫)।

৩.

বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের ঘাতক হিসেবে বারবার যে নামগুলি উচ্চারিত হচ্ছে, কারা সেই আলবদর, আলশামস ও রাজাকার? কী তাদের পরিচয়? বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষগ্রন্থ’এর শুরুতে এ-প্রসঙ্গে বলা হয়েছে: ‘আলবদর আলশামস শিক্ষিত তরুণ, ধর্মান্ধতা যাদের চরিত্র লক্ষণ; বিদেশী প্রভুদের ক্রীড়ানক হিসেবে দেশকে বুদ্ধিজীবী-শূন্য করতে তারাই মাতৃভূমির সন্তানদের, দেশের বিবেকদের চিনিয়ে দিয়েছে, হত্যা করার জন্যে তুলে নিয়ে গেছে।’

এ ব্যাপারে আরও সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে ‘একাত্তরের বধ্যভূমি ও গণকবর’ শীর্ষক গ্রন্থে। সেখানে বলা হয়েছে:

‘ঢাকা শহর আলবদর বাহিনীর প্রধান ছিলেন আশরাফুজ্জামান। বদর বাহিনীর সর্বাধিনায়ক ছিলেন মতিউর রহমান নিজামী। আলবদর বাহিনী অক্টোবর মাস থেকেই বুদ্ধিজীবী হত্যার প্রস্তুতি নিতে থাকে। এই বাহিনী নভেম্বর মাসেই অনেক বুদ্ধিজীবীর কাছে হুঁশিয়ারী পত্র পাঠায়। ...ঢাকা শহর জামায়াতে ইসলামীর দফতর সম্পাদক মওলানা এ. বি. এম. খালেক মজুমদার ছিলেন ঢাকায় বুদ্ধিজীবী হত্যার অন্যতম নেতা। খালেক মজুমদার সাংবাদিক সাহিত্যিক শহীদুল্লাহ কায়সার হত্যায় সরাসরি জড়িত ছিলেন বলে জানা যায়। ...আলবদর হাইকমান্ড সদস্য আশরাফুজ্জামান বদর বাহিনীর প্রধান ঘাতক ছিলো বলে জানা যায়। বিশেষত ঢাকার সাতজন বুদ্ধিজীবীকে আশরাফুজ্জামান নিজেই গুলি করে হত্যা করে বলে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। সাংবাদিক আ. ন. ম. গোলাম মোস্তফাকে সেই ধরে নিয়ে আসে। কেবল ঢাকার বুদ্ধিজীবী হত্যা অভিযানেই ৫০০ বদর বাহিনীর সদস্যকে নিয়োজিত করা হয়। এই হত্যা পরিকল্পনার অপারেশন ইনচার্জ ছিলো জামাত নেতা চৌধুরী মঈনুদ্দিন।’ (একাত্তরের বধ্যভূমি ও গণকবর, পৃষ্ঠা-১৬-১৭)।

৪.

ওপরে উদ্ধৃত তথ্য থেকে এটা স্পষ্ট যে আলবদর, আলশামস প্রভৃতি বাহিনীর মূল নিয়ন্ত্রণ ছিল জামায়াতের হাতে। জামায়াতের মতিউর রহমান নিজামীই ছিলেন বুদ্ধিজীবীদের ঘাতক আলবদরদের সর্বাধিনায়ক। সারা দেশে যে-সব শিক্ষক, চিকিৎসক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়েছিল তাদের অধিকাংশই ছিলেন একেবারেই নির্বিরোধ মানুষ। মাটির মানুষ বলতে যা বোঝায় তাই। এদের সঙ্গে জামায়াতের কোনো বিরোধ ছিল না; ছিল না আলাপ-পরিচয়ও। তারপরও খুবই ঠান্ডা মাথায় নৃশংসভাবে এদেরকে হত্যা করা হয়েছে। রায়ের বাজারসহ বিভিন্ন বধ্যভূমিতে যে-সব মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল, প্রায় সবারই হাত-পা ছিল দড়ি দিয়ে শক্ত করে বাঁধা। অনেকের চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছিল। তারপর তাদেরকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে কিংবা গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। একেক জনের দেহে ছিল অসংখ্য গুলির চিহ্ন। এ ধরনের বর্বরতা কি ভাবা যায়? বাংলার ইতিহাসে কি এ ধরনের বর্বরতার কোনো নজির আছে? তবে এটা সত্য যে এ ধরনের বর্বরতা আমরা আফগানিস্তানে দেখেছি তালেবানদের শাসনামলে। জঙ্গি হামলার উৎস নিয়ে যাদের মনে ক্ষীণ সন্দেহ আছে আমি তাদের একাত্তরের জামায়াতি বর্বরতার সঙ্গে আজকের জঙ্গিদের বর্বরতা মিলিয়ে দেখতে বলি। দুটিকে মিলিয়ে দেখলেই আজকের জঙ্গিদের সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক স্পষ্ট হয়ে যাবে। নতুন করে কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণের প্রয়োজন হবে না।

৫.

যুদ্ধের কৌশল হিসেবে বুদ্ধিজীবী হত্যা ও নারী ধর্ষণ আদিম শুধু নয়, অব্যর্থও বটে। একাত্তরে এদেশের মুক্তিকামী মানুষের ওপরও সেই অস্ত্রের নিষ্ঠুরতম ব্যবহার করেছিল পাকিস্তানি সামরিক জান্তা। নিরস্ত্র জনতার বিরুদ্ধে পূর্ণ সামরিক প্রস্তুতি নিয়ে তারা সেদিন একতরফাভাবে যে-যুদ্ধের সূচনা করেছিল, সেই যুদ্ধের লক্ষ্য ছিল এই জনপদটিকে স্থায়ীভাবে কবরস্থানে পরিণত করা। জীবিত মানুষেরা থাকবে, কিন্তু তাদের কোনো প্রাণস্পন্দন থাকবে না। তাদের মুখ ও মস্তিষ্ক থাকবে, কিন্তু তারা কথা বলবে না; ভাববে না নিজেদের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নিয়ে। ভাবনাচিন্তার সব দায়দায়িত্ব নিঃশর্তভাবে ছেড়ে দেবে শাসকদের দয়া-দাক্ষিণ্যের ওপর। দাসত্বকেই বরণ করে নেবে নিজেদের অলঙ্ঘ্য নিয়তি হিসেবে। সেজন্যেই বুদ্ধিজীবী হত্যা, সেজন্যেই নারীধর্ষণ। শত শত মাইল দূর থেকে আসা বিজাতীয় বর্বর একটি সেনাবাহিনী এটা করতেই পারে, কিন্তু এদেশের জল-হাওয়ায় বেড়ে উঠা কিছু মানুষ ধর্মের নামে এমন একটি পৈশাচিক কাজে কীভাবে অংশ নিতে পারে সক্রিয়ভাবে সেটাই হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। সেই ঘটনার পর এই যে প্রায় অর্ধশতক অতিক্রান্ত হতে চললো, তারা কি অনুতপ্ত হয়েছে? ক্ষমা প্রার্থনা করেছে স্বজাতির কাছে? উত্তর হলো- না। তারপরও তারা রাজনীতি করছে! এদেশের মানুষের কাছে ভোটও চাচ্ছে! তার চেয়েও বড় পরিহাস হলো, আরও কিছু দল ও ব্যক্তি যারা নিজেদের মস্তবড়ো দেশপ্রেমিক ও মানবতাবাদী বলে দাবি করেন, তারা তাদের সর্বতোভাবে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছেন, এখনো দিয়ে যাচ্ছেন নির্বিকারভাবে।

জাতি হিসেবে এ লজ্জা আমরা কোথায় রাখবো?

লেখক: কবি ও সাংবাদিক (বিভাগীয় প্রধান, সম্পাদকীয় বিভাগ, ইত্তেফাক)




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ ডিসেম্বর ২০১৮/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়