ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

গৃহিণীর যখন মন খারাপ

আফরোজা জাহান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪৭, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গৃহিণীর যখন মন খারাপ

মডেল : আফরি, ছবি : অপূর্ব খন্দকার

আফরোজা জাহান : ভালো লাগছে না বা মন ভালো নেই আমাদের ব্যস্ত জীবনের সঙ্গে এই শব্দগুলো যেন মিশে গিয়েছে। পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে কারো না কারো মুখে এই কথাটা আমাদের শোনা হয় নিত্যদিন।

 

কিন্তু প্রসঙ্গটা আসে যখন একজন গৃহিণীর, তখন তা কিন্তু মোটেও অবহেলার নয়। সংসারের প্রতিটি কাজ, সন্তানের দেখা শোনা, পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের আবদার পূরণ থেকে শুরু করে সব একা হাতে সামাল দেয় একজন গৃহিণী। পরিবারের কেউ অসুস্থ, সেবা করা। সন্তান বা স্বামীর মন ভালো নেই তা ঠিক করা, অনির্ধারিতভাবে এসব কাজও বর্তায় একজন নারী বা গৃহিণীর ওপর।

 

সংসার ঠিক রাখা, পরিবারের সবাইকে ভালো রাখার দায়িত্ব যে পালন করছে তারও মন খারাপ হয়, মাঝে মাঝে তারও কিছু ভালো লাগে না, মন চায় সব কাজ থেকে একটু ছুটি নিতে। কিন্তু সংসারের সব ভার যার কাঁধে, শত মন খারাপের মাঝেও সংসার, পরিবারের সবার প্রতি দায়িত্বগুলো তাকেই ঠিকমতো পালন করতে হয়।

 

তাই মন খারাপ করে দায়িত্ব পালন না করে, আসুন মন ভালো করার কিছু উপায় জেনে নেই। নয়তো মন খারাপটা মনে জেকে বসলে তা মানসিক সমস্যার কারণ হতে পারে।

 

সূর্য উঠার আগেই অনেক গৃহিণীর দিন শুরু হয়। সকালে উঠে কাজে ঝাঁপিয়ে না পড়ে আগে প্রার্থনা করুন। প্রার্থনা মনে শান্তি দেয়। সমস্যা মোকাবিলায় মানসিকভাবে শক্তি দেয়।

 

* প্রার্থনার পর অল্পস্বল্প শরীরচর্চা করলে শরীর এর সঙ্গে মন ও প্রফুল্ল থাকে। সময় না থাকলে ঘরের মাঝেই ফ্রি-হ্যান্ড এক্সারসাইজ করে নিতে পারেন।

 

* প্রকৃতির মাঝে থাকলে মানুষের মন ভালো হয়ে যায় খুব সহজে। ঘরে থাকা গাছের যত্ন নিলে, বাগানে সময় দিলে অশান্ত মন শান্ত হয়ে যায়।

 

* সংসারের সব কাজ প্রতিনিয়ত একা হাতে সামলালে একঘেয়েমি চলে আসতে পারে। তাই ঘরের কাজ বয়স অনুসারে ভাগ করে দিন। এমনকি বাচ্চাদেরও তার উপযোগী কাজ দিন। এতে তারাও দায়িত্ব নিতে শিখবে, আপনিও সময় পাবেন।

 

* সবাইকে সময় দেবার পাশাপাশি নিজেকেও সময় দিন। শত কাজের মাঝেই নিজেকে সময় দিতে হবে। সেই সময়টুকু আপনার যা ভালো লাগে করুন। ছোটবেলার যে শখটা নানা দায়িত্ব আর কাজের চাপে হারিয়ে গিয়েছিল তাই ফিরিয়ে আনুন। নিজেকে নতুন করে ফিরে পাবেন। সঙ্গে মন খারাপও জায়গা নিতে পারবে না।

 

* খুব বেশি মন খারাপ থাকলে, কাছেপিঠে কোথাও থেকে ঘুরে আসুন। দরকার হলে একাই ঘুরে আসুন। নিজের বা পরিবারের জন্য কিছু কেনাকাটা করুন। কিন্তু বাহিরে থাকা সময় সংসার বা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করবেন না। তাহলে মন ভালো হবে না।

 

* নিজের জন্যই সাজুন। ঘরের আটপৌরে পোশাক বাদ দিয়ে একটা সুন্দর রুচিসম্মত পোশাক পড়ুন। তুলে রাখা গহনাগুলো থেকে যা ভালো তাই পড়ুন। নিজেকে ফিটফাট, সুন্দর লাগলে মন অনেকটাই ভালো হয়ে যাবে।

 

অন্য সদস্যদের করণীয় :

* একজন গৃহিণী একটি ঘরের প্রাণ। তাই পরিবারের সকলকে তার দিকে নজর রাখতে হবে, যেমন তিনি অন্যদের রাখেন।

 

* একজন গৃহিণী সংসারের দায়িত্ব পালন করতে করতে নিজের অনেক ইচ্ছা, চাহিদা ভুলে যায়। যার ফলে অজান্তেই মনে খারাপ লাগা জন্ম নেয়। পরিবারের সদস্যদের এই ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। মা, স্ত্রীকে সময় দিন।

 

* পরিবারের আনন্দ সুখের জন্য যে মানুষটা সবার পছন্দ মনে রাখে, সেই মানুষটাকে কোনো উপলক্ষ্য ছাড়াই তার পছন্দের কিছু উপহার দিন বা তার পছন্দের কোনো জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যান। দেখবেন মানুষটা কত খুশি হবে, নতুনভাবে প্রাণ ফিরে পাবে সকল কষ্ট, দুশ্চিন্তা, ঝামেলা ভুলে।

 

* আত্নবিশ্বাস, মানুষকে সকল খারাপ কিছুর সঙ্গে লড়াই করার সাহস দেয়। তাই মা, স্ত্রী, বউ মার আত্নবিশ্বাস বাড়িয়ে তোলা ও রক্ষার জন্য পরিবারের সদস্যদের ভূমিকা পালন করতে হবে। যাতে ছোট ছোট সমস্যা, দুশ্চিন্তা থেকে তারা নিজেদের বাঁচিয়ে রাখতে পারে। নয়তো সাধারণ মন খারাপ মানসিক সমস্যা বা হতাশার দিকে মোড় নিতে পারে।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৯ ডিসেম্বর ২০১৬/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়