ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ভাবমূর্তি আরো সমুজ্জ্বল হবে

এনএ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:১৬, ৫ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ভাবমূর্তি আরো সমুজ্জ্বল হবে

জাতিসংঘ বাংলাদেশ থেকে আরো শান্তিরক্ষী চেয়ে পাঠিয়েছে। সুদানে দায়িত্ব পালনের জন্য ৮৫০ সদস্যের একটি সমন্বিত শান্তিরক্ষী দল পাঠানোর অনুরোধ করেছে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম।

 

বাংলাদেশের জন্য বিষযটি অত্যন্ত মর্যাদার। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের সামরিক, আধাসামরিক ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা বিশ্বশান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় যে অবদান রেখে চলেছেন, এর মধ্য দিয়ে তা আরো সম্প্রসারিত হবে।

 

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সর্বাধিক শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীরদের পেশাদারিত্ব, সাহসিকতা, নিষ্ঠা ও সততার ফলেই আজকের এই অর্জন সম্ভব হয়েছে।

 

গত বছর অক্টোবরে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের শীর্ষ সম্মেলনে এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বশান্তি রক্ষায় বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। জাতিসংঘের তরফে বাংলাদেশ থেকে আরো শান্তিরক্ষী সদস্য চাওয়ার অনুরোধ তারই প্রতিফলন।

 

বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহৎ বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের খাত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন । বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ বাহিনী এখন বিশ্বে সর্বোচ্চ শান্তিসেনা প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সেনা, নৌ, বিমান ও পুলিশবাহিনী আন্তর্জাতিক মান অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে। যে কারণে বাংলাদেশ বীরের জাতি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

 

শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের নারীরাও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছেন। সশস্ত্র বাহিনীর ১৭৬ জন এবং পুলিশ বাহিনীর ৬০৩ জন নারী কর্মকর্তা তাদের কর্মের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন।

 

শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু ১৯৮৮ সালে ইউএন ইরান-ইরাক মিলিটারি অবজারভেশন গ্রুপ (ইউনিমগ) মিশনে, ১৫ জন সেনা পর্যবেক্ষক প্রেরণের মাধ্যমে । সেই প্রক্রিয়ায় ইতিমধ্যে বাংলাদেশের প্রায় দেড় লাখ সদস্য দায়িত্ব পালন করে দেশে ফিরেছেন। ভবিষ্যতে এই ধারা অব্যাহত এবং তা আরো জোরদার হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

 

১৯৯০-৯১ সালে প্রথম আরব উপসাগরীয় যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে কোয়ালিশন বাহিনীতে বাংলাদেশের ২১৯৩ জন সেনা সদস্য অংশগ্রহণ করে। সেটিই ছিল জাতিসংঘের বাইরে  একক কোনো দেশের নেতৃত্বে শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের প্রথম অংশগ্রহণ। বাংলাদেশি সেনাদের পেশাদারি দক্ষতা, আন্তরিকতা ও পক্ষপাতহীতা অল্পদিনের মধ্যেই দেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খ্যাতি এনে দিতে সক্ষম হয়। এই বাস্তবতায় বাংলাদেশ জাতিসংঘ মিশনে আরো বেশি মাত্রায় অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ হয়।

 

গত দুই দশকের অধিক সময় ধরে বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে আসছে। একবিংশ শতাব্দীতে বাংলাদেশ প্রকৃত অর্থে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সর্ববৃহৎ সেনা প্রদানকারী দেশ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছে। এটি নিঃসন্দেহে আমাদের দেশের জন্য গর্বের বিষয়। আমাদের প্রত্যাশা, জাতিসংঘের নতুন দল পাঠানোর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি আরো সমুজ্জ্বল হবে।

 

 

 

রাইজিংবিডি/৪ ডিসেম্বর ২০১৬/এনএ/টিআর

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়