![]() |
নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা : বিপুলসংখ্যক দর্শনার্থীদের সমাগমে সার্কিট হাউজ মাঠে খুলনার উন্নয়ন মেলা প্রাঙ্গণ মুখরিত হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা মেলায় ঘুরে সরকারের উন্নয়নের নানা বিষয়ে অবহিত হচ্ছে।
মেলার প্রধান ফটকে শোভা পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর হাস্যোজ্জল ছবিসহ ‘শেখ হাসিনার দর্শন সব মানুষের উন্নয়ন’ লিখিত পোস্টার। মেলার বিভিন্ন স্টলের প্রদর্শনীতে সেবার নানা দিক তুলে ধরা হয়।বুধবার বিকেলে সেরা স্টলকে পুরস্কৃত করার মধ্য দিয়ে মেলা শেষ হবে। এর আগে ৯ জানুয়ারি বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে খুলনার উন্নয়ন মেলার উদ্বোধন করেন।
সরেজমিনে গিয়ে মেলায় প্রায় ১১০টি স্টলে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর ও সংস্থাকে উন্নয়ন সেবা নানা দিক প্রদর্শনী করতে দেখা যায়। জনসেবায় উন্নয়নমূলক কার্যক্রম প্রদর্শনে বিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে।
বিগত আট বছরে খুলনাতে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে অসংখ্য উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়েছে। মেলায় তারই উল্লেখযোগ্য কিছু বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে।
এর মধ্যে গণপূর্ত-১ কর্তৃক খুলনায় ১৩টি হাসপাতাল ভবন, ৬টি থানা ভবন সংস্কার, ৭টি র্যাব কমপেক্স, নতুন পাসপোর্ট অফিস, সিজেএম আদালত ভবন, নতুন সার্কিট হাউজ নির্মাণসহ মোট ৪০টি নতুন স্থাপনা নির্মাণ করেছে।
গণপূর্ত-২ বিভাগের জেলা পুলিশ ও কেএমপির ছয়তলা ব্যারাক, নতুন খালিশপুর থানা ভবন, রেঞ্জ রিজার্ভে চারতলা ব্যারাক, কয়রায় নতুন থানা ভবন নির্মাণ কাজ শেষ করেছে।
এ ছাড়া নতুন জেলা কারাগার, মুক্তিযোদ্ধা কমপে¬ক্স, টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট, ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
খুলনা জেলা পরিষদ প্রায় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মন্দির উন্নয়ন, ঈদগাহ, এতিমখানা, কবরস্থান স্থাপন ও উন্নয়ন করেছে। আরো ২ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে গল্লামারী স্মৃতিসৌধ নির্মাণ, কম্পিউটার ল্যাব নির্মাণ, ডিজিটাল সেন্টার স্থাপনে সহায়তা ছাড়াও দরিদ্র মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি প্রদান করেছে।
এলজিইডি খুলনার তত্ত্বাবধানে পাকা রাস্তা ৮৮৪ কিলোমিটার, ব্রিজ-কালভার্ট ১৭৯৭ কিলোমিটার, সাইক্লোন শেল্টার ৫৩টি, প্রাইমারি স্কুল ৩৪৩টি, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ৬টি, ইউপি কমপ্লেক্স ১৭টি, উপজেলা পরিষদ ভবন ১টি, উপজেলা সার্ভার স্টেশন ১টি নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
ওজোপাডিকো লি. এর গৃহীত পদক্ষেপে গ্রাহক বেড়েছে ৩ লাখ ৮২ হাজার ২৭৮ জন, সিস্টেম লস কমেছে ২ দশমিক ২৪ শতাংশ, নতুন ৩৩ কেভি লাইন স্থাপন ১৯৮ কিলোমিটার, নতুন ১১ ও ০.৪ কেভি লাইন ১৩২৩ কিলোমিটার, ১৭৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ব্যবহার বৃদ্ধিসহ ৬৬৯ টি প্রিপেইড মিটার স্থাপন বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এসেছে।
খুলনা ওয়াসার তত্ত্বাবধানে ডিপ টিউবওয়েল স্থাপন ৪৪টি, ওভারহেট ট্যাংক নির্মাণ ১১টি, ট্রান্সমিশন পাইপ লাইন স্থাপন ১৩ কিলোমিটার, ডিস্ট্রিবিউশন পাইপ লাইন যথাক্রমে ৫৯ কিলোমিটার এবং ২২০ কিলোমিটার স্থাপন সম্পন্ন, রিজার্ভার নির্মাণ ৭টি, গৃহসংযোগ মিটার ৭ হাজার ৫০০ স্থাপন করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর জানায়, খুলনার বটিয়াঘাটা, তেরখাদা ও দিঘলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে ৩১ শয্যা হতে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ করা হয়েছে। ৫১টি নতুন কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণসহ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণ ও সংস্কার সম্পন্ন হয়েছে।
এ ছাড়া বৃহৎ প্রকল্পের মাঝে ৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনা ও বেনাপোল আধুনিক রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণ, ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক খুলনা জেলা স্টেডিয়াম নির্মাণ, ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে জেলা ও বিভাগীয় শিল্পকলা একাডেমি নির্মাণ, ২ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনা পানি সরবরাহ প্রকল্প (খুলনা ওয়াসা) বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।
খুলনার জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান জানান, মেলায় খুলনার সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরা হচ্ছে। এতে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা গেছে। বিকেলে সমাপনী অনুষ্ঠানে সেরা স্টল নির্বাচিত করে পুরস্কৃত করা হবে।
রাইজিংবিডি/খুলনা/১১ জানুয়ারি ২০১৭/মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/রিশিত