ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

রাজশাহীতে দুই কিশোরকে গাছে বেঁধে নির্যাতন

তানজিমুল হক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:২৭, ৯ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রাজশাহীতে দুই কিশোরকে গাছে বেঁধে নির্যাতন

দুই কিশোরকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী : ছাগল চুরির অপরাধে দুই কিশোরকে গাছে বেঁধে নির্যাতন চালিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্য ও তার সহযোগীরা।

বুধবার রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার আন্দুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ওই দুই কিশোর উপজেলার আমগাছী সাহার বানু উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। আন্দুয়া গ্রামের ইউপি সদস্য আব্দুল মোতালেব ওই দুই কিশোরের পরিবারের কাছ থেকে ১৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছেন। তবে এ টাকা তিনি নিজের পকেটেই পুরেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

কথিত ওই গ্রাম্য সালিশে উপস্থিত ছিলেন ঝালুকা ইউপি চেয়ারম্যান মোজাহার আলী মণ্ডল, ইউপি সদস্য মির্জা আব্দুল লতিফ ও আব্দুল মোতালেবসহ স্থানীয় মাতব্বরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার হাড়িয়াপাড়া গ্রামের জিয়াউর রহমানের ছেলে জার্জিস হোসেন (১৬) ও পলাশবাড়ী গ্রামের সেকু আলীর ছেলে রতন আলী (১৫) মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আন্দুয়া গ্রামের রেজাউল করিম নামে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে একটি ছাগল চুরি করে নিয়ে যায়। ভোরে হরিয়ান বাজার দিয়ে যাওয়ার সময় নৈশপ্রহরীরা ছাগলসহ তাদের আটক করে। পরে ওই দুই কিশোরের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে আন্দুয়া গ্রামে খবর দিলে সকালে ইউপি সদস্য আব্দুল মোতালেব তাদের নিজ জিম্মায় ছাড়িয়ে নিয়ে যান।

এরপর দুপুরে ছাগলের মালিক রেজাউলের বাড়ির পাশে সালিশ বসানো হয়। সালিশে ওই দুই কিশোরকে গাছে বেঁধে বেধড়ক পেটানো হয়। পরে তাদের পরিবারের লোকজনকে ডেকে পাঠানো হয়। এরপর তাদের কাছ থেকে ১৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

জরিমানার এ টাকার মধ্যে আড়াই হাজার টাকা ছাগল মালিককে দেওয়া হয়। বাকি টাকা নিজের কাছেই রেখে দেন ইউপি সদস্য আব্দুল মোতালেব। এরপর ওই দুই কিশোরকে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

নির্যাতনের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য আব্দুল মোতালেব বলেন, ‘ছাগল চুরির কথা প্রথমে তারা স্বীকার না করায় তাদের গাছে বেঁধে রাখা হয়। তবে তাদের নির্যাতন করা হয়নি।’

জরিমানার ১৬ হাজার টাকা কার কাছে আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আড়াই হাজার টাকা ছাগল মালিককে দেওয়া হয়েছে। যারা ওই দুই কিশোরকে ধরতে সহযোগিতা করেছেন তাদের কিছু টাকা দেওয়া হয়েছে। কিছু টাকা গ্রামের মসজিদেও দান করা হয়েছে। সালিশে উপস্থিত ইউপি চেয়ারম্যান মোজাহার আলী মণ্ডলের সঙ্গে পরামর্শ করেই এসব করা হয়েছে।’

ইউপি চেয়ারম্যান মোজাহার আলী মণ্ডল বলেন, ‘আমি ব্যস্ত আছি। এখন কথা বলতে পারব না।’

দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুহুল আলম জানান, কেউ এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

 

রাইজিংবিডি/রাজশাহী/৯ মার্চ ২০১৭/তানজিমুল হক/উজ্জল/এএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়