ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

রবীন্দ্র সুরের মূর্ছনায় গ্রন্থমেলার পঞ্চম দিন

রাহাত সাইফুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০৩, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রবীন্দ্র সুরের মূর্ছনায় গ্রন্থমেলার পঞ্চম দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘অমর একুশে বইমেলা-২০১৮’ এর আজ পঞ্চম দিন শেষ হয়েছে। আজ সোমবার বাংলা একাডেমি চত্বর সুরের মূর্ছনায় মাতিয়েছেন রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী শামা রহমান, স্বর্ণময়ী মণ্ডল, আব্দুর রশীদ, স্বপ্নীল সজীব।

রবীন্দ্রপ্রেমীদের জন্য সন্ধ্যাটি ছিল চমৎকার। শিল্পী শামা রহমান শ্রোতাদের নিরাশ করেননি। তাদের পছন্দের সঙ্গে নিজের পছন্দ মিলিয়ে রবীন্দ্রনাথের গানে ভরিয়ে দিয়েছেন সবার মন-প্রাণ। তিনি কয়েকটি রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করেন।

এ ছাড়া রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী স্বর্ণময়ী মণ্ডল, আব্দুর রশীদ, স্বপ্নীল সজীব গান পরিবেশন করেন। সংগীত সন্ধ্যায় তবলায় ছিলেন রবীন্দ্রনাথ পাল, গিটারে ছিলেন শাহরাজ চৌধুরী তপন, কি-বোর্ডে ছিলেন সুনীল কুমার সরকার।

সোমবার বিকেল ৩টায় শুরু হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ১১৬টি। বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘আ জ ম তকীয়ূল্লাহ : জীবন ও কর্ম’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আলী ইমাম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন রতন সিদ্দিকী ও শান্তা মারিয়া। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক।

আলী ইমাম বলেন, ‘ভাষাসংগ্রামী আ জ ম তকীয়ূল্লাহ ছিলেন আমাদের সমাজে এক ব্যতিক্রমী ধারার মানুষ, স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল। আজীবন সুগভীর এক বিশ্বাসের প্রতি অবিচল নিষ্ঠাবান ছিলেন তিনি। সেই বিশ্বাস তাকে বলীয়ান করেছিল। জীবনে চলার পথের নানাবিধ প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করার দীপ্ত সাহস যুগিয়েছিল। নানাবিধ বিপর্যয় ও সংকটের মধ্যেও তার সেই বিশ্বাসে বিন্দুমাত্র চিড় ধরেনি। প্রজ্ঞা তাকে সত্যান্বেষী করেছিল। দৃঢ়চিত্ততা তাকে সাহসী করেছিল। তার প্রবল প্রত্যয়ী মনোভাব তাকে কর্মী করেছিল। তার সেই বিশ্বাস হল সাম্যবাদ। সম্পদের সুষম বণ্টনের ভেতর দিয়ে যে সমাজব্যবস্থা গড়ে উঠবে। আজীবন তিনি প্রগতিশীল সকল আন্দোলনে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। স্বপ্ন দেখেছেন শোষণহীন সমাজব্যবস্থার। সাম্য-মৈত্রী-স্বাধীনতা শান্তির পথে তিনি ছিলেন আলোর অভিযাত্রী।’

আলোচকবৃন্দ বলেন, ভাষাসংগ্রামী প্রগতিশীল রাজনীতিক এ জে এম তকীয়ূল্লাহ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি অনন্য নাম। মহান রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে তার বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা জাতি চিরকাল শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণে রাখবে। তকীয়ূল্লাহ গৃহীত ১৯৪৮ কালপর্বের ভাষা আন্দোলনের আলোকচিত্রগুচ্ছ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে চেতনাকে প্রসারিত করতে ভূমিকা রেখে চলেছে। প্রগতিশীল রাজনৈতিক বিশ্বাসের কারণে তিনি পাকিস্তান সরকার কর্তৃক কারানির্যাতনসহ নানা নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। কিন্তু নিজের সংগ্রামী অবস্থান থেকে কখনো বিচ্যুত হননি।

তারা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ যে বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুসরণ করে তার সংস্কারেও এ জে এম তকীয়ূল্লাহ পালন করেছেন অগ্রণী ভূমিকা। তার আত্মজীবনী পলাতক জীবনের বাঁকে বাঁকে ধারণ করেছে আমাদের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনের অনুপুঙ্খ চিত্র। তার জীবনসংগ্রামের গৌরবজনক ইতিহাস উত্তরপ্রজন্মকে আলোর দিশা দেবে সব সময়।

সভাপতির বক্তব্যে আহমদ রফিক বলেন, ‘একটি আদর্শ, বৈষম্যহীন, সমতাভিত্তিক সমাজ গড়ার জন্যই তকীয়ূল্লাহ্ পরিপূর্ণ সংগ্রামী ও আত্মদানমূলক জীবন যাপন করে গেছেন। তার সাম্যবাদী আদর্শে সুবিধাবাদ, সুবিধাভোগ ও সমঝোতার কোনো স্থান ছিল না। আজকের বহুধাভিত্তিক সমাজে মানবকল্যাণের জন্য তকীয়ূল্লার আদর্শকে সামনে রেখেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’

মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘অশ্বিনীকুমার দত্ত : জীবন ও কর্ম’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বদিউর রহমান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন আসাদ চৌধুরী, সৈয়দ বদরুল আহ্সান, ড. জালাল আহমেদ ও মো. মনিরুজ্জামান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. হারুন-অর-রশিদ। সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/রাহাত/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়