ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ওয়ালটন ফ্রিজে হাসানুরের মোটরসাইকেলের স্বপ্নপূরণ

জাকির হুসাইন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০৬, ১২ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ওয়ালটন ফ্রিজে হাসানুরের মোটরসাইকেলের স্বপ্নপূরণ

হাসানুর এবং তার শ্বশুরের হাতে লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার এবং মোটরসাইকেল তুলে দেওয়া হচ্ছে

জাকির হুসাইন : ছোটবেলা থেকেই মোটরসাইকেল চালানোর শখ হাসানুর মিয়ার। নিজের একটি মোটরসাইকেল হবে, এই স্বপ্ন তার বহু দিনের। কিন্তু নানা কারণে অপূর্ণ ছিল তার সেই স্বপ্ন। এদিকে নতুন সংসার উপলক্ষে মেয়েকে (হাসানুরের স্ত্রী) একটি ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে দেন মেয়ের বাবা। সেই ফ্রিজেই পূরণ হয় হাসানুরের মোটরসাইকেলের স্বপ্নও।

হাসানুর মিয়ার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার যাত্রাপাশার প্রথমরেখ গ্রামের বাসিন্দা তিনি। নয় ভাইবোনের মধ্যে সবার বড় হাসানুর। বড় ভাই হওয়ায় সংসারের দায়িত্ব আসে তার কাঁধে। সে কারণে পাঁচ বছর আগে বাহরাইনে যান তিনি। সম্প্রতি ছুটিতে বাড়ি আসেন হাসানুর। বাবা-মা, ভাই-বোনদের দাবি এবার তাকে বিয়ে করতে হবে। তাই সবার পছন্দে গত ১ ডিসেম্বর বিয়ে করেন হাসানুর।

হাসানুরের শ্বশুর মেয়েকে ফ্রিজ-টিভিসহ বেশ কিছু প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিকস পণ্য দেবেন বলে ঠিক করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৪ ডিসেম্বর হবিগঞ্জ শহরের টাউন হল রোডে টি আর ইলেকট্রো মার্টে ফ্রিজ কিনতে যান তিনি। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন ওয়ালটনের ডিজিটাল ক্যাম্পেইন চলছে। সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকার ওয়ালটন পণ্য ক্রয়ে মিলছে ২০০ টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত নিশ্চিত ক্যাশ ভাউচার।

টি আর ইলেকট্রো মার্ট থেকে মেয়ের জন্য ২১ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে একটি ওয়ালটন ফ্রিজ কেনেন হাসানুরের শ্বশুর। জামাইয়ের ভাগ্য কেমন, অনেকটা সেই কৌতুহল থেকেই হাসানুরের নাম ও মোবাইল নম্বর দিয়ে পণ্যটির রেজিস্ট্রেশন করেন। কী আশ্চর্য! সেই ফ্রিজে মিলে যায় লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার। পরে যখন হাসানুরের মোটরসাইকেলের স্বপ্নের বিষয়ে জানতে পারেন, তখন সেই লাখ টাকার ভাউচারে তাকে একটি ওয়ালটন মোটরসাইকেল কিনে দেন। পূর্ণ হয় হাসানুরের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন।

এ প্রসঙ্গে হাসানুর মিয়া বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে আমি মোটরসাইকেল চালাতে পছন্দ করি। নিজের একটি মোটরসাইকেল থাকবে, এটাও সব সময় আশা করতাম। কিন্তু পরিবারের সবার বড় হওয়াতে আমার সে আশা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। তাই বিদেশে গিয়ে অর্থ উপার্জন করেছি। ভেবেছিলাম এবারই সে সুযোগটা নেব। কিন্তু বাবা-মা আমার বিয়ের আয়োজন করেন। বিয়েতে বেশ টাকা-পয়সা খরচ হবে ভেবে আপাতত মোটরসাইকেল কেনার স্বপ্ন চাপা দিয়ে রাখতে হয়।’

তিনি বলেন, ‘কিন্তু ভাগ্যে থাকলে ঠেকায় কে? আমাদের দেওয়ার জন্য ওয়ালটন ফ্রিজ কেনার পর শ্বশুর আব্বা আমার মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেন। তাতেই মিলে গেল এক লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার। আর পূরণ হলো আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন।’

হাসানুর এবং তার শ্বশুরকে নিয়ে ক্যাশ ভাউচার এবং মোটরসাইকেলসহ পিকআপে করে ব্যান্ড পার্টি সহযোগে আনন্দ মিছিল


তবে ওয়ালটনের ডিজিটাল ক্যাম্পেইন বা ক্যাশ ভাউচারের ব্যাপারে কিছু জানতেন না হাসানুর। তাই যখন তার মোবাইলে লাখ টাকার মেসেজ আসে, তিনি তখন বিষয়টা ভুয়া বলেই ধরে নিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, ‘আমি তখন বাড়িতে ছিলাম। আমার মোবাইলে একটা মেসেজ আসে ঠিকই। কিন্তু প্রথমে আমি তার আগা-মাথা কিছুই বুঝিনি। ফালতু মনে করে রেখে দেই। এর কিছুক্ষণ পরে শোরুম থেকে ফোন করে আমাকে জানানো হলো আমি নাকি লাকি ম্যান। আমার ভাগ্যে এক লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার মিলে গেছে। বিস্তারিত সব জানার পর আমার যে কেমন ভালো লাগে তা বলে বুঝাতে পারব না। আমার কপালে এত বড় পুরস্কার জেনে অজান্তেই চোখে পানি চলে আসে। এই খবর স্ত্রীকে জানালে সেও দারুণ খুশি হয়। আমার শ্বশুর-শাশুড়িসহ তাদের পরিবার এবং আমার বাবা-মা, ভাই-বোনসহ সব আত্মীয়-স্বজনও অনেক খুশি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই একটি মোটরসাইকেলের মালিক হতে চেয়েছিলাম। ওয়ালটনের সৌজন্যে লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার দিয়ে আমার সে স্বপ্ন আজ পূরণ হয়েছে।’

ওয়ালটন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘অন্যান্য কোম্পানির চেয়ে ওয়ালটন পণ্যের দাম অনেক সাশ্রয়ী। আমাদের হবিগঞ্জে ওয়ালটনের ব্যাপক সুনাম আছে। অনেকেই ওয়ালটন পণ্য ব্যবহার করে। আমাদের বাড়িতেও ওয়ালটনের বিভিন্ন পণ্য ব্যবহৃত হচ্ছে। আমি ওয়ালটন কোম্পানি সাফল্য কামনা করছি।’

টি আর ইলেকট্রো মার্ট এর স্বত্বাধিকারী মো. মোদারিছ আলী টেনু জানান, পরের দিন (৫ ডিসেম্বর) আনন্দঘন পরিবেশে হাসানুর এবং তার শ্বশুরের হাতে লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার এবং সেই টাকায় কেনা মোটরসাইলের চাবি তুলে দেওয়া হয়। এ সময় তিনি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের প্রতিনিধি সালেহ আহমেদ রাসেল ও সোহেল রানা, শোরুম ব্যবস্থাপক চিন্ময় হংসুক এবং ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। পরে হাসানুর এবং তার শ্বশুরের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে ব্যান্ড পার্টি নিয়ে পিকআপে করে শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বেড়ানো হয়, যা ওই এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলে।

উল্লেখ্য, ক্রেতাদের দোরগোড়ায় অনলাইনে দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করেছে ওয়ালটন। এই কার্যক্রমে ক্রেতাদের অংশগ্রহণকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিদিন দেওয়া হচ্ছে নিশ্চিত ক্যাশ ভাউচার। ওয়ালটন প্লাজা এবং পরিবেশক শোরুম থেকে ১০ হাজার টাকা বা তার বেশি মূল্যের পণ্য কিনে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করে সর্বনিম্ন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পাচ্ছেন ক্রেতারা। ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার এই সুযোগ থাকবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ ডিসেম্বর ২০১৭/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়