ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

শিশুদের জন্য ইন্টারনেট : ইউনিসেফ ও ফেসবুকের যৌথ উদ্যোগ

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০৪, ৩০ মার্চ ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শিশুদের জন্য ইন্টারনেট : ইউনিসেফ ও ফেসবুকের যৌথ উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : অনলাইনে শিশুদের ব্যাপক উপস্থিতি সত্ত্বেও তাদের ডিজিটাল দুনিয়ার বিপদ থেকে সুরক্ষিত রাখতে এবং তাদের নিরাপদ অনলাইন কনটেন্ট ব্যবহারের সুযোগ বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে খুব সামান্যই কাজ হয়েছে। এ অবস্থায় ইউনিসেফ ও ফেসবুক শুক্রবার থেকে বছরব্যাপী একটি ব্যাপক সচেতনতামূলক কর্মসূচি শুরু করেছে।

এ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভো থিয়েটারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ১০০টিরও বেশি স্কুলের ১০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী, শিক্ষক, বাবা-মা, গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারকগণ, শিল্পখাতের নেতৃবৃন্দ, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের শীর্ষ ৫০ ইন্টারনেট পণ্য এবং ২০ লাখ অনলাইন ভিজিটর সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণ করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াসেফ ওসমান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি এডওয়ার্ড বেগবেদার বলেন, ‘ইন্টারনেট তৈরি হয়েছিল বড়দের জন্য। তবে শিশু ও তরুণ জনগোষ্ঠী ক্রমবর্ধমান হারে এটি ব্যবহার করছে। ডিজিটাল প্রযুক্তি ক্রমবর্ধমান হারে তাদের জীবন ও ভবিষ্যৎকে প্রভাবিত করে। তাই ডিজিটাল নীতিমালা চর্চা ও পণ্যে শিশুদের প্রয়োজন, শিশুদের দৃষ্টিভঙ্গি ও শিশুদের বক্তব্য আরো ভালোভাবে প্রতিফলিত হওয়া উচিত।’

‘বিশ্ব শিশু পরিস্থিতি ২০১৭ : ডিজিটাল দুনিয়ার শিশুরা’ শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী ইন্টারনেটের যথাযথ ব্যবহার সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞানের অভাব, শিশুদের ব্যক্তিগত তথ্যের অপব্যবহার, তাদের ক্ষতিকর কনটেন্ট ব্যবহারের দিকে ঠেলে দেওয়া ও অনলাইনে নিগ্রহের শিকার হওয়াসহ ঝুঁকি ও ক্ষতির মুখে পড়ার মাত্রা বৃদ্ধি করে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সর্বত্রই মোবাইল ডিভাইসের উপস্থিতি বড়দের তত্ত্বাবধান ছাড়াই অনেক শিশুর অনলাইনে প্রবেশের সুযোগ বাড়িয়েছে, যা একইসঙ্গে সম্ভাব্য অনেক বিপদও বাড়িয়েছে।

ফেসবুকের ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার প্রোগাম প্রধান রিতেশ মেহতা বলেন, ‘দিনে দিনে শিশুরা অনলাইনে অনেক বেশি সময় ব্যয় করছে, তাই তাদেরকে অনলাইনে নিজেদের নিরাপদ রাখা এবং নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে জানানো খুবই জরুরি। অনলাইনে শিশুদের নিরাপত্তা, বর্তমান সময়ের শিশু, তাদের মা-বাবা ও শিক্ষকদের জন্য খুবই জরুরি। আমাদের এই সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা নিরাপত্তা ও প্রযুক্তির বিষয়ে শিশুদের সাথে কথোপকথন চালিয়ে যেতে চাই- যেমনটা আমরা তাদের শেখাই কীভাবে জনাকীর্ণ জায়গায়, খেলার মাঠে ও স্কুলে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হয়।’

শিশুদের জন্য অনলাইন নিরাপত্তার পক্ষে প্রচারণা চালাতে ইউনিসেফ ও ফেসবুকের মধ্যে সাম্প্রতিক এই সহযোগিতার লক্ষ্য হচ্ছে আরো কার্যকর নীতিমালা প্রণয়নে এবং শিশুদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানে আরো দায়িত্বশীল বাণিজ্যিক কার্যক্রমে সহায়তা দেওয়া, যার মধ্যে রয়েছে- সব শিশুর জন্য উচ্চ-মানসম্পন্ন অনলাইন উপকরণসমূহ সহজলভ্য করা। অপব্যবহার, নিগ্রহ, পাচার, সাইবার উৎপীড়ন ও অনুপযুক্ত বিষয়ের মুখোমুখী হওয়াসহ অনলাইনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার হাত থেকে শিশুদের সুরক্ষা প্রদান করা। অনলাইনে শিশুদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও পরিচয় সুরক্ষিত রাখা। শিশুদের অনলাইনে সম্পৃক্ত ও নিরাপদ রাখতে তাদের ডিজিটাল শিক্ষা প্রদান করা। অনলাইনে শিশুদের সুরক্ষিত রাখে এবং তাদের উপকারে আসে এমন নৈতিক মান ও চর্চাসমূহকে এগিয়ে নিতে বেসরকারি খাতের ক্ষমতাকে কাজে লাগানো। ডিজিটাল নীতিমালার কেন্দ্রে শিশুদের রাখা।’

ইউনিসেফ জানায়, বছরব্যাপী এই কর্মসূচির লক্ষ্য হচ্ছে ডিজিটাল এই যুগে শিশুদের কল্যাণের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলো বিস্তারের মাধ্যমে ‘অনলাইন ঝুঁকি’ থেকে শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সব মিলিয়ে আড়াই কোটি বাংলাদেশি শিশু এবং তাদের বাবা-মা ও শিক্ষকদের কাছে পৌঁছানো।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ মার্চ ২০১৮/সাওন/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়