ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

কবিকে সুবর্ণ অভিবাদন

সাইফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:২৪, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কবিকে সুবর্ণ অভিবাদন

রাইজিংবিডি ডেস্ক : গত ১০ ফেব্রুয়ারি ছিল কবি কাজী জহিরুল ইসলামের ৫২তম জন্মদিন। ১৯৬৮ সালের এই দিনে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার খাগাতুয়া গ্রামে, মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। কবির বর্তমান আবাসস্থল নিউ ইয়র্কের বন্ধুরা তার জন্মদিন উপলক্ষে জ্যামাইকার স্টার কাবাব মিলনায়তনে এদিন ‘সুবর্ণ অভিবাদন’ এর আয়োজন করেন।

কনকনে শীত উপেক্ষা করে সকাল এগারটা থেকে উপস্থিত হতে থাকেন শিল্পী, সাংবাদিক, কবি, সাহিত্যিকেরা। ফুলে ফুলে প্রায় ঢেকে যান কবি। তার বিশাল প্রতিকৃতিসহ চমৎকার একটি ব্যানার ডিজাইন করে ঢাকা থেকে পাঠান শিল্পী রাগীব আহসান। কাজী জহিরুল ইসলামের অর্ধশত জীবন বর্ণাঢ্য, বিচিত্র, বহুরঙের বিভায় উজ্জ্বল। তার প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ৫৫।  ভ্রমণ করেছেন অর্ধশতাধিক দেশ। বহু বিচিত্র অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ তার ঝুলি।

কবি ও কথাসাহিত্যিক কাজী জহিরুল ইসলামের জীবনের নানা দিক নিয়ে লিখেছেন বরেণ্য লেখক, সাংবাদিক, শিল্পীরা। সেসব রচনা এবং কবির বেশকিছু সাক্ষাৎকার নিয়ে সত্তরের দশকের গুরুত্বপূর্ণ কবি ড. মাহবুব হাসানের সম্পাদনায় অয়ন প্রকাশন থেকে বেরিয়েছে ৪০০ পৃষ্ঠার সুবিশাল গ্রন্থ ‘অর্ধশতকের উপাখ্যান’। এদিন গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন হয়। বন্ধু, শুভানুধ্যায়ীরা তাৎক্ষণিকভাবে বইটি সংগ্রহ করেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন পরিবেশ আন্দোলন কর্মী সৈয়দ ফজলুর রহমান। কবির কবিতা থেকে পাঠ ও শুভেচ্ছা বক্তব্যের পরে শুভানুধ্যায়ী পরিবেষ্টিত হয়ে কেক কেটে জমকালো জন্মদিন পালন করেন কবি কাজী জহিরুল ইসলাম।


কবির কবিতা থেকে পাঠ করেন নাট্যজন খাইরুল ইসলাম পাখি, লুবনা কাইজার, নাসরিন চৌধুরী, লুৎফা শাহানা, শিমু আফরোজ, ভায়লা সালিনা লিজা, রওশন হক, রবিউল আফিজ, রূপা খান, জুলি রহমান। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন আজকাল পত্রিকার সম্পাদক মনজুর আহমেদ, পরিচয় পত্রিকার সম্পাদক নাজমুল আহসান, এখন সময় পত্রিকার সম্পাদক কাজী শামসুল হক, কবি ড. মাহবুব হাসান, ছড়াকার শাহ আলম দুলাল, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ পত্রিকার উপদেষ্টা সম্পাদক আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু, অভিনেত্রী রেখা আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা কাজী শফিকুল হক, মুক্তিযোদ্ধা ফেরদৌস নাজমী, আজকাল পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক শাহবউদ্দীন সাগর, স্বপ্না ইমাম, জন জে কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড. রাজু ভৌমিক, মুক্তিযোদ্ধা আলী সাঈদ টিপু, গাংচিল এর সম্পাদক খান শওকত, কবি স্বপ্ন কুমার, ফরহাদ ইসলাম, সাংবাদিক শামীম আল আমিন, কবি আশরাফুন নাহার লিউজা, আরিফ মাহমুদ শৈবাল প্রমুখ।

মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী তাজুল ইমাম অসুস্থতার জন্য আসতে না পারলেও লিখিত শুভেচ্ছা বক্তব্য পাঠান যেটি পড়ে শোনান তার স্ত্রী স্বপ্না ইমাম। খান শওকত কবিকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি খচিত উত্তরীয় পরিয়ে সম্মানিত করেন।

মনজুর আহমেদ বলেন, কবি কাজী জহিরুল ইসলামকে আমি চিনেছি অনেক পরে। দেখা সাক্ষাৎ হওয়ার আগেই আমি যে কাজী জহিরুল ইসলামকে চিনতাম তিনি একজন অনবদ্য কথা সাহিত্যিক, ভ্রমণ লেখক, যিনি আমাকে বহু বহুবার নিয়ে গিয়েছেন আফ্রিকার আত্মার ভেতরে।

কাজী শামসুল হক বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম নেই কিন্তু কাজী জহিরুল ইসলাম আছেন। তার অসামান্য প্রতিভাই আমাদেরকে তার প্রতি আকৃষ্ট করেছে। আমরা এই কবিকে ঘিরেই আমাদের শিল্প-সাহিত্যের চর্চাকে বেগবান করে তুলতে পারি।

ড. মাহবুব হাসান বলেন, আমি শুধু দুজন কবির সামগ্রিক কর্মকাণ্ড নিয়ে গ্রন্থ সম্পাদনা করেছি। একজন আবিদ আজাদ আর অন্যজন কাজী জহিরুল ইসলাম, কারণ তারা অন্যদের চেয়ে আলাদা। জহিরের সঙ্গে আমার দেখাই হয়নি, তখন তার ক্রিয়াপদহীন কবিতা পড়ে আমি মুগ্ধ হয়েছি।

আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু বলেন, তিনি হয়েছেন কবি। তার সবচেয়ে বড় গুণ তিনি অনবরত লিখতে পারেন এবং লেখার মান ঠিক রেখেই তা তিনি করেন।
 


খান শওকত বলেন, আমার বিচারে কাজী জহিরুল ইসলাম এক বিস্ময়কর প্রতিভা এবং তিনি প্রকৃত অর্থেই একজন ভালো মানুষ। নিজে লেখেন এবং অন্যদের দিয়েও লেখান। সুস্থ সংস্কৃতি বিকাশে নানান রকম কর্মকাণ্ড করে মাতিয়ে রাখেন সবাইকে।

শাহাব উদ্দীন সাগর বলেন, জহির ভাই আমার প্রিয় কবি। তার কবিতায় এমন কিছু আছে যা পাঠককে মুগ্ধ করে। তিনি সমসাময়িক বিষয় কবিতায় তুলে আনেন এবং অতি সুক্ষ্ণভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন।

শিল্পী মিতা হোসেন কবিকে নিবেদন করে রবীন্দ্রনাথের গান পরিবেশ করেন। রেখা আহমেদ এবং জুলি রহমান অভিনয়ের মধ্য দিয়ে অভ্যাগতদের আনন্দে মাতিয়ে রাখেন। উপস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন জুলি রহমান এবং শামীম আল আমিন। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন মুক্তি জহির, শিমু আফরোজ, জুলি রহমান এবং রওশন হক।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/সাইফ      

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়