ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

পাহাড়ি টিলায় একসঙ্গে লেবু ও আনারসের আবাদ

মামুন চৌধুরী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪০, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পাহাড়ি টিলায় একসঙ্গে লেবু ও আনারসের আবাদ

পাহাড়ি টিলায় লেবুর ফলন দেখাচ্ছেন শেখর দেববর্মা

মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ : এ জেলার বাহুবলের কালিগজিয়া ত্রিপুরা পল্লীর পাশে পাহাড়ি টিলার আরেক সৌন্দর্য্য লেবু বাগান। সে সৌন্দর্য্যকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে লেবু গাছের ফাঁকে ফাঁকে রোপণকৃত আনারসের ফলন।

পতিতই পড়ে ছিল এই পাহাড়ি টিলা। ত্রিপুরা পল্লীর বাসিন্দা শেখর দেববর্মা এ পতিত জমিটা আবাদ করে প্রথমে রোপণ করেন লেবু গাছ। রোপনের বছর যেতেই গাছে ধরা পড়ে লেবু। শুধু লেবুর আয়ের উপর ভর করে এগোতে সমস্যা হচ্ছিল। তাই লেবুর সঙ্গে পরিকল্পনা করেন আনারস চাষের।

উন্নত জাতের চারা সংগ্রহ করে লেবু গাছের ফাঁকে ফাঁকে আনারস চারাগুলো রোপন করা হয়। ধরা পড়ে আনারস। লেবুর সঙ্গে আনারসের ভাল ফলন দেখে উৎসাহ বেড়ে যায় তার। পুরো জমিতে আবাদ করে তিনি  আরও আনারসের চারা রোপন করে যাচ্ছেন। শেখর দেববর্মা শ্রমিক সঙ্গে নিয়ে নিয়মিত শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন। পুরো দিনটাই লেবু ও আনারস গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে তাকে।

এসব চাষে তিনি কোন বিষ প্রয়োগ করছেন না। কিছু পরিমাণে সার ও ব্যাপকভাবে গরুর গোবর ব্যবহার করছেন। তাতে ভাল ফলন আসছে। তার চাষ দেখে অন্য চাষিরাও লেবু ও আনারস চাষে মনযোগী হয়েছেন। পতিত পড়ে থাকা বিরাণ টিলা এখন ফলে ভরপুর। যা দেখে চোখ জুড়িয়ে যায় যে কারোরই।

আলাপকালে শেখর দেববর্মা বলেন, ‘পরিশ্রম করলেই ভাল ফল আশা করা যায়। তাই শ্রম দিয়ে যাচ্ছি। এর ফলও পাচ্ছি।’

তিনি জানান, ফলনকৃত এসব ফসল পাইকারি বাজারে বিক্রি করছেন। কালিগজিয়া থেকে শহরে যেতে রাস্তার বিরাট সমস্যা। রাস্তার সুবিধা থাকলে ফলনকৃত জিনিসপত্র সহজে পরিবহনে করে গন্তব্যে নিয়ে যেতে পারতেন। অন্যদিকে ভাল সড়ক পেলে এখানের বাসিন্দাদেরও চলাচলে কষ্ট কমে যেতো। তিনি জরুরী ভিত্তিতে এখানে রাস্তা নির্মাণের দাবি জানান।



পাইকারি লেবু ক্রেতা রমিজ মিয়া বলেন, পাহাড়ি আনারস ও লেবু বিষমুক্ত হওয়ায় ক্রেতাদের কাছে এখানের ফল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ পাহাড়ি এলাকায় বার মাস লেবু ও আনারস চাষ হচ্ছে। ভাল দাম পাওয়ায় পাহাড়িদের ফসল চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে।

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোঃ ফজলুর রহমান বলেন, ‘পাহাড়ি এলাকায় এখন ব্যাপকভাবে লেবু আনারসসহ নানা ফসলের চাষ হচ্ছে। চাষাবাদকে এগিয়ে নিতে আমরা কৃষকদের নানাভাবে উৎসাহিত করছি। অনেক সময় প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’

এ ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ইসহাক মিয়া বলেন, ‘পাহাড়ে প্রচুর ঘাস পাওয়া যায়। এসব প্রাকৃতিক খাবার পেয়ে গরু পালন করা সহজ। আর গরুর গোবর ব্যবহার করে চাষিরা নানা ধরণের ফসল চাষে এগিয়ে আসছেন।’



রাইজিংবিডি/ হবিগঞ্জ/১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/মামুন চৌধুরী/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়