ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

সয়াখাদ্য উৎপাদন ও বিপণনে প্রশিক্ষণ

ফজলে আজিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:২০, ২৩ অক্টোবর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সয়াখাদ্য উৎপাদন ও বিপণনে প্রশিক্ষণ

ফজলে আজিম: জাপানিদের খাদ্য তালিকায় সয়াবিন গুরুত্বপূর্ণ অংশ দখল করে আছে। এর কারণ হচ্ছে সয়াবিনের পুষ্টিগুণ, যা অন্যান্য খাবারের চেয়ে একে আলাদা করে দিয়েছে। সয়াবিনের কোনো অংশই ফেলনা নয়। পুরোটাই পুষ্টিগুণে অনন্য ও বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় খাওয়া যায়।

সয়াবিন থেকে তৈরি হচ্ছে দুধ, বিস্কুট, পাউরুটি, কেকসহ বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক খাবার। বিভিন্ন ধরনের তরকারি রান্নায়ও সয়াবিন ব্যবহার করা যায়। যে কোনো সবজির সাথে সয়াবিন দিলে রান্নার স্বাদ বেড়ে যায়। এ নিয়ে জাপান সরকারের অর্থায়নে বেশি কিছু প্রকল্প রয়েছে যশোরের শার্শা উপজেলায়। এখানে সয়াবিনের তৈরি বিভিন্ন খাবার তৈরি, প্রশিক্ষণ ও বিপণনে কাজ করে যাচ্ছে জাপান বাংলাদেশ কালচারাল এক্সচেঞ্জ এসোসিয়েশন (জেবিসিইএ)।

 


স্থানীয়রা প্রতিষ্ঠানটিকে জাপানি অফিস নামেই চেনে। স্থানীয়দের সয়াবিন চাষে উদ্ধুদ্ধকরণ ও এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে সচেতন করতে প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। যে কেউ উদ্যোক্তা হয়ে কাজ শুরু করতে চাইলে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা রয়েছে। জেবিসিইএ প্রজেক্টের সয়া প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাহিনা খাতুন জানান, প্রকল্পটি জাপান সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত। আমরা এখানে স্থানীয়দের সয়াবিন চাষে উদ্বুদ্ধ করছি। কখন কীভাবে সয়াবিন চাষ করতে হয় এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। এছাড়াও সয়াপণ্যের পুষ্টিগুণ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরির কাজ করে আসছি।

এখানে আমরা সয়াবিন দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরির বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। যে কেউ চাইলে এ প্রকল্পের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পারেন। এ বিষয়ে আমরা প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে থাকি। বিশেষ করে সয়াবিন দিয়ে কিভাবে বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করা যায় সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। স্থানীয় বাজারে সয়াবিনের তৈরি সয়াদুধ, কেক, বিস্কুট, পাউরুটি ও সয়া দোনাটের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বলে তিনি জানান।

যে কেউ চাইলে অল্প পুঁজিতে সয়া পণ্যের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তবে সাফল্য পেতে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে বলে তিনি জানান। এখন অনেক সচেতন বাবা-মা পরিবারের সদস্যদের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে নিয়মিত সয়াদুধ খাওয়াচ্ছেন। সয়াদুধের বাজারও দিনদিন প্রসার লাভ করছে।
 


সয়াদুধের পুষ্টিগুণ: সয়াবিনে আমিষের পরিমাণ বেশি। সয়াদুধে গরুর দুধের চেয়ে ১২গুণ, অন্যান্য ডালের তুলনায় দুইগুণ, গমের তুলনায় ৪গুণ, চালের তুলনায় ৬গুণ, ডিমের তুলনায় ৪গুণ বেশি আমিষ রয়েছে।

যশোরের বেশ কয়েকটি স্কুলে স্কুল মিল প্রকল্প চালু রয়েছে। সেখানে বাচ্চাদের দুপুরের খাবার সরবরাহ করা হয়। খাবারের তালিকায় থাকে সয়াখিচুড়ি, সয়া তরকারি ও ভাত, সয়াডাল, সয়াপাউরুটি ও সয়াদুধ। একেকদিন একেক খাবার সরবরাহ করা হয়। স্থানীয়ভাবে করা এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিয়মিত সয়া খাবারের অভ্যাসের ফলে স্কুলের শিক্ষার্থীদের উচ্চতা বৃদ্ধি ও শারীরিক গঠন আগের চেয়ে অনেক মজবুত হয়েছে। পড়াশোনায়ও তারা আগের চেয়ে ভালো করছে। ‍অসুস্থতার কারণে স্কুলে আসতে না পারা শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও কমে গেছে। সব বয়সীদের জন্য সয়াবিন হচ্ছে একটি আদর্শ খাবার।

বিস্তারিত জানতে: [email protected], www.jbcea.org

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ অক্টোবর ২০১৭/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়