ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘খাদ্যঘাটতি মোকাবিলায় জিএম ফসলের দিকে যেতে হবে’

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৫০, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘খাদ্যঘাটতি মোকাবিলায় জিএম ফসলের দিকে যেতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জিএম ফসলের চাষ হচ্ছে। জিএম ফসল কোথাও কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে তা জানা যায়নি। আমাদের অধিক জনসংখ্যার খাদ্যঘাটতি মোকাবিলায় জিএম ফসলের দিকে যেতে হবে। আমরা সাবধানতা অবলম্বন করব, কিন্তু রক্ষণশীলতার বেড়াজালে নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করব না, তা হবে না।’

বুধবার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল অডিটরিয়ামে ‘ফিড দ্য ফিউচার বায়োটেকনোলজি পটেটো পার্টনারশিপ’ প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এ কথা বলেন।

মন্ত্রী আরো বলেন, ‘বর্তমানে আমরা আলুর সিঙ্গেল জিন নিয়ে কাজ করছি। শিগগিরই আমরা থ্রি-আর জিন নিয়ে কাজ করব। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে আলুর একটি নতুন জাত বের করা হলে আলুর মারাত্মক ক্ষতিকর নাবী ধ্বসা রোগের আক্রমণ ও ক্ষতি থেকে কৃষকরা রক্ষা পাবে।’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ কৃষি সেক্টরে অনেক এগিয়েছে। আলু উৎপাদনে আমরা বিশ্বে সপ্তম এবং এশিয়াতে তৃতীয় অবস্থানে আছি। বর্তমানে আলুতে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমাদের আলু ২৭টি দেশে রপ্তানিও হচ্ছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আলু রপ্তানিতে কিছু সমস্যা থাকলেও তা আমরা কাটিয়ে উঠতে পারব।’

হাইব্রিড ফসলের বিষয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৬ সালে যখন আমরা হাইব্রিড চালু করলাম তখন বিভিন্ন মহল থেকে অনেক ঋণাত্মক সমালোচনার সম্মুখীন হই। সে সময় শেখ হাসিনার সরকারের সঠিক সিদ্ধান্তের কারণে এখন আমরা অসময়ে এবং সারা বছর বিভিন্ন ধরনের সবজি পাচ্ছি। বিজ্ঞানীদের নতুন অবদানের কথা অস্বীকার করে আমরা বসে থাকি নাই। আমরা ধানেরও হাইব্রিড উৎপাদন করছি। হাইব্রিড সবজির মতো হাইব্রিড ধান কৃষক গ্রহণ করেছে আগ্রহ সহকারে। প্রচলিত ধানের ফলন যেখানে ৪-৫ টন সেখানে হাইব্রিড ধানের ফলন ১০ টন পর্যন্ত হচ্ছে। আমাদের বিজ্ঞানী ও কৃষকরা অনেক কষ্ট করে সফলতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।’

কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা প্রতিরোধী জাত উদ্ভাবনের জন্য বিটি বেগুনকে অনুমোদন দেই। যার সুফল আমাদের কৃষকরা পাচ্ছে। যেখানে বেগুনে শতকরা ২৫-৮০ ভাগ কীটনাশক স্প্রে করা হতো, উৎপাদন খরচ বেশি, পরিবেশের ক্ষতি ও স্বাস্থ্যহানি ঘটত। বিটি বেগুন চাষ প্রচলিত বেগুন চাষ থেকে অনেক বেশি লাভ হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে দেশের ৬৪টি জেলায় ৭ হাজার কৃষকের মাঝে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সরকারের প্রণোদনা কর্মসূচিতেও বিটি বেগুনকে উৎসাহিত করা হচ্ছে।’

কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পিপিসি) মোহাম্মদ নজমুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. ভাগ্য রানী বণিক ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. আবুল কালাম আযাদ।

এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ইউএসএইড বাংলাদেশের এফটিএফ প্রোগ্রাম লিডার ডেভিড ওয়েস্টারলিংক।

ফিড দ্য ফিউচার বায়োটেক পটেটো পার্টনারশিপ বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মিশিগান স্টেট ইউনির্ভাসিটির অধ্যাপক ও ফিড দ্য ফিউচার বায়োটেকনোলজি পটেটো পার্টনারশিপ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. ডেভিড ডাউচেস।

মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনটিটিউটের প্রাক্তন মহাপরিচালক ড. মো. রফিকুল ইসলাম মণ্ডল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রাখ হরি সরকার।

উল্লেখ্য, মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট যৌথ উদ্যোগে থ্রিআর-জিন প্রযুক্তির মাধ্যমে আলুর নাবী ধ্বসা রোগ প্রতিরোধী জাত উদ্ভাবনের লক্ষ্যে ইউএসএইড এর অর্থায়নে প্রকল্পের কাজ বিএআরআইতে শুরু হতে যাচ্ছে। প্রকল্পটির প্রাথমিক কারিগরি কাজ ইতোমধ্যে মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি, আমেরিকায় সম্পন্ন হয়েছে। অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রণালয়াধীন বিভিন্ন সংস্থার প্রধান, সিনিয়র কর্মকর্তা, সম্প্রসারণবিদ, বিজ্ঞানী ও আলু চাষি উপস্থিত ছিলেন।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ ‍ডিসেম্বর ২০১৭/সাওন/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়