ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

আরো পাঁচটি উচ্চফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন

হাসমত আলী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৪৩, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আরো পাঁচটি উচ্চফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর : বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) বিজ্ঞানীরা আরো পাঁচটি নতুন জাতের ধান উদ্ভাবন করেছেন। জাতগুলো হলো- ব্রি ধান৮২, ব্রি ধান৮৩, ব্রি ধান৮৪, ব্রি ধান৮৫ ও ব্রি ধান৮৬ ।

উদ্ভাবিত জাতগুলো অল্প দিনে উচ্চফলনশীল হওয়ায় দেশের মোট ধান উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে বলে মনে করছেন ব্রির বিজ্ঞানীরা। এ জাতগুলো জাতীয় কারিগরি কমিটিতে বুধবার চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে।

ব্রি ধান৮৬ জাতটিতে জৈব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বোরো  মৌসুমের সবচেয়ে জনপ্রিয় জাত ব্রি ধান২৮ এর মতোই জনপ্রিয় হয়ে উঠবে এ জাত।  আর ব্রি ধান৮২ তে কৃষক পাবে সবচেয়ে উচ্চফলন, যা উৎপাদিত হবে স্বল্পতম সময়ে।

ব্রির মহাপরিচালক ড.  মো. শাহজাহান কবীর বলেন, ‘উদ্ভাবিত নতুন পাঁচটি জাতের মধ্যে তিনটি আউশ মৌসুমের ও দুটি বোরো মৌসুমের। আউশ মৌসুমকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্য রয়েছে সরকারের।  সে জন্যই আমরা এবার আউশের ওপর  জোর দিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘বোরোতে এখন পর্যন্ত যত জাত আছে সদ্য উদ্ভাবিত ব্রি ধান৮৪  তে তার  চেয়ে  বেশি পরিমাণে জিংক রয়েছে। ব্রি ধান৭৪ জাতের ধানে ২৪ শতাংশ জিংক থাকলেও নতুন জাতে এর পরিমাণ ২৭ দশমিক ৬।’

ব্রির পরিচালক (গবেষণা) ড. তমাল লতা আদিত্য এ বিষয়ে বলেন, প্রথমবারের মতো একটি জাতে জৈব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।’

ব্রি ধান ৮২ : রোপা আউশ  মৌসুমের স্বল্পকালীন একটি জাত। এর জীবনকাল ১০০  থেকে ১০৫ দিন। এ জাতটির গড় ফলন হেক্টরে সাড়ে ৪ টন থেকে সাড়ে ৫ টন পর্যন্ত। আকৃতি মাঝারি মোটা এবং এর রং সাদা। এর চাল থেকে ভাত হবে ঝরঝরে। প্রতিটি দানায় প্রোটিনের পরিমাণ ৭ দশমিক ৬ শতাংশ। এর ১০০০ টি পুষ্ট ধানের ওজন প্রায় ২৩ দশমিক ৮৪ গ্রাম।

ব্রি ধান ৮৩ :  বোনা আউশ মৌসুমের একটি জাত। এর গড় ফলন হেক্টরে ৪ টন থেকে সাড়ে ৫ টন পর্যন্ত, যা প্রচলিত ব্রি ধান ৪৩ এর চেয়েও ১ টন  বেশি। এ জাতীয় ধানের গাছের উচ্চতা ১০৫ সে. মি.। জীবনকাল ১০০ থেকে ১০৫ দিন। চাল মাঝারি মোটা ও সাদা এবং এ ধরনের চাল থেকে হওয়া ভাত হবে ঝরঝরে। দানায় প্রোটিনের পরিমাণ ৭ শতাংশ।

ব্রি ধান ৮৪ :  বোরো মৌসুমের একটি স্বল্পমেয়াদি জাত। একই সঙ্গে এটি উচ্চফলনশীল জিংক সমৃদ্ধও। এর জীবনকাল ১৪০ থেকে ১৪৫ দিন  এবং  হেক্টরে গড় ফলন ৬ থেকে সাড়ে ৬ টন। গাছের উচ্চতা ৯৬ সে. মি.। এই জাতের ধান থেকে হওয়া চালের আকার আকৃতি লম্বা চিকন এবং চালের রং লালচে বাদামি। ভাত ঝরঝরে। দানায় জিংকের পরিমাণ ২৭ দশমিক ৬ শতাংশ এবং প্রোটিনের পরিমাণ ৮ দশমিক ৩ শতাংশ।

ব্রি ধান ৮৫:  রোপা আউশ মৌসুমের নতুন এ জাতটির গড় ফলন সাড়ে ৪ টন থেকে সাড়ে ৫ টন পর্যন্ত। গাছের উচ্চতা ১১০ সে. মি.। এই জাতের জীবন কাল বন্যামুক্ত পরিবেশে ১০৬ থেকে ১১০ দিন। চালের আকার আকৃতি লম্বা ও মাঝারি চিকন এবং রং সাদা। ভাত ঝরঝরে। দানায় প্রোটিনের পরিমাণ ৮ দশমিক ১ শতাংশ।

ব্রি ধান ৮৬ : ব্রির  জৈব প্রযুক্তি বিভাগ (এন্থার কালচার) ব্যবহারের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো উদ্ভাবন করেছে ‘ব্রি ধান ৮৬’। গড় ফলন ৬ টন থেকে সাড়ে ৬ টন পর্যন্ত। উপযুক্ত পরিবেশ পেলে এর ফলন ৮ টন পর্যন্ত হতে পারে। জীবনকাল ১৪০ থেকে ১৪২ দিন। চালের আকার আকৃতি লম্বা ও চিকন এবং রং সাদা। দানায়  প্রোটিনের পরিমাণ প্রায় ১০ শতাংশ।



রাইজিংবিডি/ গাজীপুর / ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭/ হাসমত আলী/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়