ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

কৃষি শুমারি শুরু ৯ ফেব্রুয়ারি

হাসিবুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:০৫, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কৃষি শুমারি শুরু ৯ ফেব্রুয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক : জনবল সংকট নিয়ে শুরু হচ্ছে স্বাধীন বাংলাদেশে পঞ্চমবারের মতো কৃষি শুমারি। ৯ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই শুমারি।

সোমবার সকালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোতে ‘কৃষি শুমারি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) ২০১৮’ প্রকল্পের দ্বিতীয় জোনাল অপারেশন পরিচালনার লক্ষ্যে বিভাগীয় ও জেলা শুমারি সমন্বয়কারীদের প্রশিক্ষণের উদ্বোধন হয়।

প্রশিক্ষণ উদ্বোধন করে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) বিকাশ কিশোর দাস ও পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আবুয়াল হোসেন কৃষি শুমারির জনবল সংকটের কথা জানান।

কৃষি শুমারির দ্বিতীয় জোনাল অপারেশনে সারা দেশের ১ লাখ ৬৭ হাজার ৬টি এলাকায় গণনা কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এতে অংশ নেবেন ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮১৫ জন গণনাকারী। অর্থাৎ প্রতিটি এলাকার জন্য একজনেরও কম গণনাকারী গণনা কাজ সম্পন্ন করবেন।

এ ছাড়া ২২ হাজার ৩৭৩ জন সুপারভাইজার, ২১৯ জন সহকারী জেলা সমন্বয়কারী, ৭৮ জন জেলা সমন্বয়কারী এবং ১০ জন বিভাগী সমন্বয়কারী কাজ করবেন এই প্রকল্পের আওতায়।

জনবল সংকটের কারণে কৃষি শুমারির কাজ কঠিন হবে বলে মনে করেন আবুয়াল হোসেন। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘জনবলের সংকট রয়েছে। যেসব জেলায় জনবল সংকট রয়েছে, সেসব জেলায় তাদের কাজ অনেক বেশি কঠিন হবে।’

বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) ‘ওয়ার্ল্ড প্রোগ্রাম ফর দ্য সেনসাস অব অ্যাগ্রিকালচার ২০২০’ গাইডলাইন মোতাবেক এই কৃষি শুমারি পরিচালিত হবে।

প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) জাফর আহাম্মদ খান জানান, কৃষি শুমারিতে শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদসহ পোল্ট্রি সাব-সেক্টরে ও বড় পরিসরে পর্যায়ক্রমিক পরিসংখ্যান প্রস্তুত করা; কৃষিখাতের কাঠামোগত পরিবর্তন সংক্রান্ত উপাত্ত প্রদান করা; ভূমি ব্যবহার, জমি চাষের প্রকার ও ফসল বৈচিত্র্যের পরিসংখ্যান প্রদান করা; প্রাণিসম্পদ ও পোল্ট্রি উপখাতের উপাত্ত সংগ্রহ করা; সেচ, কৃষি উপকরণ ও যন্ত্রপাতি সম্পর্কে উপাত্ত প্রদান করা; মৎস্য সাব-সেক্টরের মৌলিক উপাত্ত প্রদান করা; ক্ষুদ্র প্রশাসনিক এলাকার কৃষিবিষয়ক মৌলিক তথ্য সরবরাহ করা এবং কৃষিবিষয়ক বিভিন্ন জরিপের জন্য সেম্পল ফ্রেম সরবরাহ করা হবে।

এ সময় পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আবুয়াল হোসেন বলেন, ‘দেশব্যাপী একটি শুমারি পরিচালনা করা একটি কঠিন কাজ। কৃষি শুমারি, ১০ বছর পর পর হচ্ছে। বাংলাদেশ এখন আর কৃষির ওপর নির্ভরশীল নয়। জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খাদ্য উৎপাদনও বাড়ছে। আমাদের চাহিদার সমান আমরা উৎপাদন করছি। এটা আমাদের ব্যাপক সফলতা। কৃষকদের আন্তরিকতার জন্য ধন্যবাদ। এবার যে শুমারি হবে, সেখানে আমরা প্রকৃত চিত্র পাব, আগের তুলনায় আমাদের কোন খাতে অগ্রগতি হয়েছে। শুধু কৃষির উৎপাদন নয়, এর সঙ্গে যন্ত্রপাতি, সেচসহ সার্বিক বিষয়ে আমরা প্রকৃত চিত্র পাব।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যদি জানতে পারি, জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কী সম্পদ আছে, কী ঘাটতি আছে– এসবের সঠিক তথ্য থাকে তাহলে ভবিষ্যত পরিকল্পনা করতে সহজ হবে।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) বিকাশ কিশোর দাস বলেন, ‘গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের রকেট গতিতে উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু কৃষির ক্ষেত্রে একটু ব্যতিক্রম রয়েছে। অন্য সেক্টরের সঙ্গে কৃষি কুলিয়ে উঠতে পারেনি। এর বহুবিধ কারণ রয়েছে।’

‘দীর্ঘ সময় নিয়ে কৃষক চাষ করে, কিন্তু লাভ নেই’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ দেশে দরিদ্রতা কখনই পিছু ছাড়েনি। প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে। কৃষি নিয়ে আমরা যতই গর্ব করি, এখানে সেকেন্ড থটের বিষয় রয়েছে। এ জন্য সঠিক তথ্যের প্রয়োজন। সেই কাজটিই করতে যাচ্ছে।’

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহারিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. কৃষ্ণা গায়েন বলেন, ‘আমি আশা করব, প্রথম জোনাল অপারেশনে ছিলেন, আপনারা জানেন আপনাদের চ্যালেঞ্জগুলো কী। জোনাল অপারেশনে যে দিকনির্দেশনা আছে, সেটা আপনারা ভালোভাবে দেখে নেবেন।’

স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৭ সালে প্রথম কৃষি শুমারি হয়। এরপর ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৪ সালের কৃষি শুমারিতে দুই ভাগে পৌর এলাকাসহ সব কৃষি খানা গণনার আওয়াতায় আনা হয়। ১৯৯৬ সালের ‍কৃষি শুমারিতে সব শহর ও পল্লী এলাকার কৃষি খানাকে পৃথক প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে আওতায় আনার পরিকল্পনা থাকলেও শুধু পল্লী এলাকার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সর্বশেষ ২০০৮ সালে সব শহর ও পল্লী এলাকার সব কৃষি খানা ভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/হাসিবুল/ইভা     

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়