ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

রপ্তানির সম্ভাবনাময় খাত মধু : কৃষিমন্ত্রী

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৭, ১০ মার্চ ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রপ্তানির সম্ভাবনাময় খাত মধু : কৃষিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : মধুকে রপ্তানির সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি বলেন, মূল্যবান মৌ সম্পদ এবং মধু উৎপাদন ও বিপণনের মাধ্যমে স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আর্জন সম্ভব।

রোববার রাজধানীর আ কা মু গিয়াস উদ্দিন মিলকি অডিটরিয়াম চত্বরে জাতীয় মৌ মেলা-২০১৯ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী।

তিন দিনব্যাপী এবারের মৌ মেলার প্রতিপাদ্য হচ্ছে-‘ফলন, আয় ও পুষ্টি বাড়াতে মৌ চাষ করি’। এবারের মেলায় মোট ৬০টি স্টল রয়েছে। মেলা আগামী ১২ মার্চ পর্যন্ত চলবে।

অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী বলেন, মৌ চাষ সম্প্রসারণ পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি পরাগায়ণের মাধ্যমে ফল ও ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই ফসলের মাঠে মৌ চাষ কৃষকের জন্য বাড়তি আয়ের সংস্থান করে থাকে। মৌ সম্পদের টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করার জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার, প্রসেসিং ও বাজার জাত অপরিহার্য। মধু উৎপাদন, বিপণন, প্রসেসিং নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন। মৌচাষের বিষয়টি স্বল্পশ্রম ও স্বল্প পুঁজির বিনিয়োগের তুলনায় অধিক মুনাফা লাভের সম্ভাবনাময় পেশা ও ব্যবসা হিসেবে জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে। তবে আমাদের সম্ভাবনার সর্বোচ্চ অংশটুকু নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়েও মৌ চাষ ও বিপণনে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রয়োজন রয়েছে। এ খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মোট ৩০ শতাংশ নারী জড়িত।

কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, দেশের উন্নয়নে চাই কৃষিসহ ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে সুউচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন। কৃষিকে প্রকৃত বাণিজ্যিক কৃষিতে রুপান্তর করতে হবে। এজন্য বাজার জাত বিপণন ও রপ্তানি অপরিহার্য। জাপান আমাদের দেশ থেকে মধু রপ্তানি করে। তাহলে সে দেশে আরো অনেক কিছু রপ্তানি করা যাবে সেগুলো বের করতে হবে। আমাদের প্রক্রিয়াজাত ও দেশীয় ব্র্যান্ড না থাকায় কাচা মধুও রপ্তানি করতে হচ্ছে। মৌমাছি প্রকৃতির বন্ধু। পরিবেশ দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে মৌমাছির বিভিন্ন প্রজাতি আজ বিপন্ন প্রায়। তাই প্রকৃতির সুরক্ষায় সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে।

উল্লেখ্য, মধু এখন রপ্তানি পণ্য তালিকায় নাম লিখিয়েছে। ফসলের মাঠে মৌমাছি বিচরণ করলে সেখানে বাড়তি পরাগায়ণের কারণে ফসলের উৎপাদন ১৫-২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে। মৌচাষের মাধ্যমে মধু আহরণে সমৃদ্ধি ও শষ্য বা মধুভিত্তিক কৃষিজ উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। মৌসুমে সরিষা, ধনিয়া, তিল, কালিজিরা, লিচুসহ আবাদ হয় মোট প্রায় ৭ লাখ হেক্টর জমিতে বা বাগানে, এখানে মাত্র ১০ শতাংশ জায়গায় মৌ বাক্স বসিয়ে মধু আহরণ করে। জড়িত প্রায় ২৫ হাজার মৌ-চাষিসহ মধু শিল্পে জড়িত প্রায় ২ লাখ মানুষ। উৎপাদন প্রায় ৬ হাজার টন। ফসলের এই পুরো সেক্টরটিকে মধু আহরণের আওতায় আনতে পারলে ফসলের উৎপাদন দ্বিগুণেরও বেশি হবে। দেশে এখন প্রায় সাড়ে ছয় লাখ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়। পুরো সরিষার মাঠ মধু সংগ্রহের আওতায় আনা গেলে উৎপাদন যেমন বাড়বে তেমনি ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মীর নুরুল আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.  নাসিরুজ্জামান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ব বিভাগের অধ্যাপক মো. আহসানুল হক স্বপন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ মার্চ ২০১৯/হাসান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়