ছোটগল্প || ঠিকানা
শীলা বৃষ্টি || রাইজিংবিডি.কম
|| শীলা বৃষ্টি ||
মেয়েটি যখন ট্রেন থেকে নামে তখনও সূর্য ভালোভাবেই রয়েছে। শহরটাকে দেখাচ্ছে শহরের মতো। মাত্র কয়েকটি শব্দ তার সম্বল যেগুলোর ওপর ভরসা করে জীবনে প্রথমবারের মতো এই শহরে আসা। শব্দগুলো তার করোটিতে চক্রের আবর্ত নিয়ে ঘুরতে থাকে ইয়াকুব সওদাগর, ষোলোশহর চৌরাস্তার মোড় এবং গলির মুখে সেলুন।
স্টেশন ষোলোশহর নয়, কাজেই তাকে প্রথমেই ষোলোশহরের খোঁজ করতে হয়। রিকশাঅলা বলল, জায়গাটা তার চেনা কিন্তু মেয়েটি রিকশাঅলাকে এমন একটা ভাব দেখাল যাতে সে বুঝতে পারে যে, সে ওখানে থাকে অথবা তার প্রায়ই যাওয়া হয়। ষোলোশহরে এসে সে দেখল, জায়গাটা ঢাকা শহরের মতোই গমগমে আর হইচইয়ে ভরা। আন্দাজে একটা পান দোকানদারের কাছে গিয়ে সে জিজ্ঞেস করল- ভাই, ইয়াকুব সওদাগরের বাড়িটা কোন দিকে?
মাথা নেড়ে দোকানি তার অজ্ঞতা জানাল। তবে সে মেয়েটিকে একটি ক্ষীণ সম্ভাবনার ইঙ্গিতও দিল। রাস্তা পেরোলেই মসজিদ। কাছেধারে সেই নামের কেউ থাকলে মসজিদের লোক নিশ্চয়ই তাকে চিনবে। মোয়াজ্জিনও চিনতে পারে, ইমাম সাহেবও চিনতে পারে। তখন নামাজের ওয়াক্তের খানিকটা দেরি থাকায় মেয়েটির মনে একটা সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে দেখা দিল।
হ্যাঁ, মোয়াজ্জিনই চিনল এবং আশাপ্রদ ব্যাপার, গলির মুখেই সেলুন। সেলুন বামে রেখে তিনশো গজ এগিয়ে গেলেই সওদাগরের বাড়ি। এত সহজে গন্তব্যে পৌঁছানো হবে ভেবে মেয়েটি অল্পক্ষণের জন্যে তার যাত্রার ক্লান্তি ভুলে যায়। মজার ব্যাপার, বাড়িটির নামও ‘ইয়াকুব ভিলা’, যেন তার বাড়ি খুঁজে পাওয়ার সুবিধার জন্যেই এমন নাম রাখা। আরো মজার ব্যাপার- গেটে দেখা দেন স্বয়ং ইয়াকুব সওদাগরই। মেয়েটি সালাম দিয়ে বলল, আমার নাম মিনা, আমি আপনার ছেলে মালেকের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি।
শুনে সওদাগর প্রথমে আকাশ থেকে পড়ে, তারপর সোজা হয়ে দাঁড়ায়। আল্লাহ তাকে কোনো ছেলেসন্তান দেননি এবং তার চারটে কন্যা। তারা সবাই স্বামীর ঘরে এবং তার চার মেয়ের কারও স্বামীর নামই মালেক নয়। নিশ্চয়ই কোথাও একটা গলদ ঘটেছে।
মেয়েটি সরল বিশ্বাসে সওদাগরকে তার অসহায়ত্বের কথা জানায়। মালেককে তার খুব দরকার, এতোটাই দরকার যে তাকে না পেলে জীবনে দেখা দেবে চরম বিপন্নতা। শুনে ইয়াকুব সওদাগরের দয়া হয় এবং সে মেয়েটিকে জানায়- আল ফালাহ গলিতে একজন ইয়াকুব সওদাগর আছে। তবে তার সাংসারিক খোঁজখবর তার জানা নেই।
মেয়েটি এবার বেরিয়ে আসে ইয়াকুব ভিলা থেকে। লোকটাকে তার অবিশ্বাস হয় না। তবুও সে নিকটের লন্ড্রিতে বসে থাকা একজনকে জিজ্ঞেস করে- আচ্ছা, ইয়াকুব সাবের কি কোনো ছেলেসন্তান নাই?
সেই লোক সমর্পিত ভঙ্গিতে বলে- ওয়রওলা ন চাইলে থাইবো হডেত্তুন!
আল ফালাহ গলিটা দূরে নয়। তবে খানিকটা হেঁটে রাস্তা পেরোতে হয়। যাক, এখানেও গলির মুখে সেলুন আছে, তবে পাশাপাশি দুটি। প্রথম সেলুনের একটা লোক মিনাকে আশ্বস্ত করে, পাঁচটা বাড়ি পরেই ইয়াকুব সওদাগর থাকে। কাছে গেলেই মনে বেশ একটা ইতিবাচক আবহ জেগে ওঠে মিনার। বাড়িটা লোকে ভরপুর। কেউ একজন জোরে গান শোনে- ও আমার রসিয়া বন্ধু রে, তুমি কেন কোমরের বিছা হইলা না।
মিনাকে তখন ক্লান্তি একটু-একটু করে আচ্ছন্ন করছে। তার তীব্র পিপাসা বোধ হয়। ক্ষুধা তাকে আক্রমণ করেছে আরও আগে। একটা চায়ের দোকানে বড় কড়াইতে পেঁয়াজু ভাজা হচ্ছে। মজাদার তৈলাক্ত ঘ্রাণ তার ক্ষুধা উস্কে দেয়। কষ্টে নিজেকে সামলে নিয়ে সে ইয়াকুব সওদাগরের বাড়ির দিকে যায়। জানা গেল এটা ইয়াকুব নামের সওদাগরেরই বাড়ি তবে বাড়িঅলা নিঃসন্তান। গোটা বাড়িতে তাদের তিন ভাইয়ের সংসার। এবং এই দুর্দিনেও সেটি একটি উল্লেখযোগ্য একান্নবর্তী পরিবার। মিনাকে দেখে বড় বউয়ের মন আর্দ্র হলে সে তাকে একটা সন্দেশ আর এক গ্লাস পানি খেতে দেয়। কথায়-কথায় মিনার মনের সঞ্চিত দুঃখের কথাও তার অনেকখানি জানা হয়ে যায়। মালেক তার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং শীঘ্র তাদের মধ্যে বিয়ে হওয়ার কথা। কিন্তু মাসখানেক হলো তার কোনো সংবাদ নেই। এখন হতে পারে সে তাকে বিয়ের ফাঁদে ফেলে চম্পট দিয়েছে অথবা সে কোনো দুর্ঘটনার শিকার। তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায় এবং দিনে রাতের কোনো সময়েই সংযোগ মেলে না। মেজো বউ আবার খানিকটা সন্দেহবাতিকগ্রস্ত। শুনে বলল, বৌতকিয়া এইল্যা কয়। কই মন গলাইতো চায়, ফরে খইবো আঁই বড় মুসিবতত ফইজ্জিই, আঁরে এককানা সাহাইয্য গরন।
দুর্বোধ্যপ্রায় বাক্যগুলোর মানে বুঝতে মিনার কষ্ট হয় বেশ। যদিও এর বিরোধিতায় সে দৃঢ়তার সঙ্গে তার অবস্থান ব্যক্ত করে। কোনো করুণা বা অর্থের সহায়তা নয়, সে কেবল মালেক নামের যুবকটির খোঁজ করছে।
মিনার সৌভাগ্যই বলতে হবে। আরেকজন ইয়াকুব সওদাগরের খোঁজ পাওয়া যায় এবং তার সম্ভবত চারটে ছেলে আছে। যদিও আল ফালাহর ইয়াকুব সেই ইয়াকুব সম্পর্কে এর বেশি জানে না। যতটুকু তার জানা সে অনুযায়ী মিনা হাঁটতে থাকে। সামনের অনিশ্চিত রাস্তাটা হঠাৎ সরু হয়ে আসে। তখন সে হাতের কাপড়ের ব্যাগ গুছিয়ে উল্টো দিকে রহমান নগরের গলির দিকে পা বাড়ায়। হাঁটতে-হাঁটতে ভেতরের ক্ষুধাটাকে আশ্বস্ত করবার প্রাণপণ চেষ্টা করে। হয়তো সূর্য নিভে যাবার ইঙ্গিতে সে তার পথের শেষেরও একটা মিল খুঁজে পায়। আর নিশ্চয়ই কোনো ইয়াকুবকে খুঁজতে হবে না তার। এই তার শেষ ইয়াকুব এবং এই ইয়াকুব যদি আসল ইয়াকুব হয় তবে তার মূল লক্ষ্য মালেকও হবে আসল মালেকই। কাজেই এক আসলের মধ্যে দুই আসলের লুকিয়ে থাকা মিনার মনের আশাকে কেবলই প্রেরণা যোগাতে থাকে।
আল ফালাহর ইয়াকুবেরা যেমন বলেছিল তেমনই বড় বাড়ি, আলিশান! চারদিকে অনেকগুলো নারকেলের গাছ দেখে মনে হয় এরা নারকেল কিনে তো খায়ই না, পারলে বিক্রিও করে। ভারী লোহার গেট বাড়ির আভিজাত্য বেশ গম্ভীরভাবে ধরে রেখেছে। একজন মাঝবয়েসি দারোয়ান এসে তাকে জিজ্ঞেস করে, খারে চন যে?
ইয়াকুব সওদাগরের ছেলে মালেকের খোঁজ জানতে চাইলে দারোয়ানের মাঝে এক ধরনের চাঞ্চল্য দেখা দেয়। তাকে সে বড় বাড়ির সামনের যে ঘরে বসতে দেয়, সেটাও একটি বিশাল কক্ষ। মুহূর্তের মধ্যে বাড়ি লোকজনের আগমন ঘটে এবং তারা এসেই সামনের সেই ঘরে জড়ো হয় যেখানে মিনা বসে আছে। দেখে মিনার আনন্দ ধরে না, সবাই এত উৎসাহ নিয়ে দেখতে এসেছে তাকে! ভেবে অনেক কষ্টের মধ্যেও মিনার ভালো লাগতে শুরু করে। কিন্তু সেটা স্বল্পস্থায়ী। সপ্তাহখানেক আগে গৃহপরিচালনার কাজে যোগ দেওয়া একটা যুবতি বাড়ির সবাইকে খাবারের সঙ্গে ধুতুরা বা কিছু একটা মিশিয়ে টাকা-পয়সা এবং সোনাদানা নিয়ে পালিয়েছে। তারই জের তখনও বিদ্যমান বাড়িতে। কেউ মারা না পড়লেও বিশাল ধকল বয়ে গেছে সবার ওপর দিয়ে। বাড়ির বড় বউ তখনও হাসপাতালে। ইয়াকুব সওদাগরের ছোট ছেলে আবদুল মালেক হাসপাতালে তার বড় ভাবির তদারকিতে ব্যস্ত। ঘটনাটা মর্মান্তিক হলেও মিনার জেনে ভালো লাগে যে আবদুল মালেকের দেখা মিলেছে। তারা চার ভাই, অন্য তিনজন- আবদুল মোতালেব, আবদুল আজিজ এবং আবদুল মাবুদ। বাপের নামে আবদুল না থাকলেও প্রতিটি ছেলেই আবদুল-যুক্ত। মিনার স্থির বিশ্বাস, আবদুল মালেকের খোঁজ মিলেছে।
মিনার কথা শুনে ইয়াকুব সওদাগর এবং তার অন্য ছেলেরা এবং বাড়ির অন্যান্য লোকেরাও ঠিক বুঝতে পারে না তাদের মধ্যকার সম্পর্কের সূত্র। শুনে মিনা বলে, যদি তারা মনে করে যে, সবই তার বানানো গল্প তাহলে তারা অন্তত আবদুল মালেকের আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুক। তারা মালেকের নিজের মুখেই শুনুক যে মালেক মিনাকে বিয়ে করবে বলে কথা দিয়েছে কি না? মালেক তার সঙ্গে এমনই ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সেতুতে দাঁড়ানো যে, আজ বলতে গেলে মিনা বাধ্য হয়ে তার খোঁজে বেরিয়েছে যখন তার অনুপস্থিতিতে সেতুর অন্য দিকটির ধ্বসে পড়বার উপক্রম। তবু ইয়াকুব-বাড়ির লোকেরা কেমন বোকা-বোকা দৃষ্টি নিয়ে মিনাকে পরখ করে। কারণ তাদের কাছে বাড়ির সবচেয়ে বোকা-সরল ছেলেটির নাম আবদুল মালেক। এমন দুর্দিনে কেউ যখন এক মিনিট সময় দিতে চায় না তখন একমাত্র আবদুল মালেকই ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাসপাতালে গিয়ে বসে থাকে বড় বউয়ের বেডের পাশে। সেই মালেক এক রমণীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়েছে এবং তাকে বিয়ে করবে বলে কথা দিয়েছে এবং কথা দিয়ে হঠাৎ হাওয়া হয়ে গেছে- এমন জটিল ধারাবাহিকতার কথা মালেকের সূত্রে ভাবতে পারাটা সত্যি তাদের সাধ্যে কুলোয় না। তারা কেউ মিনাকে বিশ্বাস করে, কেউ করে না। তারা ভাবে মিনা সেই রমণীদের একজন যে সুযাগে পেলে আবারও তাদের সবাইকে খাবারের সঙ্গে ধুতুরা মিশিয়ে অজ্ঞান করে বাতাসে মিশে যাবে। ঠিক আছে, আবদুল মালেক কখন আসে তার কী কোনো ঠিক আছে! বরং তাকে খবর দেওয়া হোক। সে এসে দেখুক যে তাকে একজন নারী খোঁজ করছে এবং ব্যাপারটা বাড়িময় কেমন উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে।
আসে আবদুল মালেক। এবং দেখে একটা ছিপছিপে যুবতি তাদের বাড়ির বসবার ঘরের হলুদ সোফার মধ্যে বসে আছে। তার পাশে দামি মোজাইকের মেঝেতে একটা কাপড়ের ব্যাগ রাখা। আকাশ থেকে পড়ে মালেক। কিছুকাল আগে এরকম এক যুবতিই তাদের বসবার ঘরে এসে ঢোকে কাজের খোঁজে। তারপর তো সবটাই জ্ঞান-হারানো কাহিনি। শুনে আকাশ থেকে পড়া মালেক উল্টো আবার আকাশে গিয়ে ওঠে এবং আবার সে পড়ে আকাশ থেকেই, দ্বিতীয়বার। বলে কি ইয়াকুব-বাড়ির লোকেরা! মেয়েটি তারই খোঁজ করে, অথচ জীবনে তাকে কখনও দেখেছে কি না মালেকের মনে পড়ে না। আকাশ থেকে পড়ে মিনাও! এই যদি হয় প্রকৃত আবদুল মালেক তাহলে সে-ও আজই প্রথম তাকে দেখল। সে স্থির নিশ্চিত ও হতাশ স্বরে বলে, আমি যারে খুঁজি সেই আবদুল মালেক এ না!
জেনে ইয়াকুব-বাড়ির লোকেদের যেন ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ে। তারা অন্তত সবাই নিজেদের একথা বলে আশ্বস্ত করতে পারে যে, পৃথিবীর সবচেয়ে সরল প্রকৃতির ছেলে এখনও আবদুল মালেকই। কোনো প্রতারণার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা দূরে থাকুক, তার কাছ ঘেঁষাও সম্ভব নয় প্রতারণা বলে কথিত জিনিসটার। ওদিকে ঘাম দিয়ে মিনার যেন জ্বর আসে। মালেককে দেখে এবং নিশ্চিত হয় যে, তাকে আবারও বেরোতে হবে মালেকের খোঁজে। তার আগে আবার ইয়াকুব সওদাগরের খোঁজে। সমস্ত অনিশ্চয়তা এবং তার পাশাপাশি মিনার পিপাসা এবং ক্ষুধা তাকে চূড়ান্ত নোটিশ দিতে থাকলে মিনার মাথার ভেতরটাতে একটা প্রবল ঘূর্ণন তাকে কাবু করে দেয়। তার মাথার মধ্যেই ইয়াকুব-বাড়ির বসবার ঘর এবং তার মধ্যে থাকা লোকজন এবং আসবাবপত্র সবকিছু ঘুরতে থাকে। মিনা জানে এটা ভূমিকম্প নয়, তার নিজেরই কম্প। সেই কম্পমানতা সরাসরি তার ওপরেই হামলে পড়ে, একমাত্র সে-ই যে সব উৎপাতের হেতু সে-কথাটাকে প্রমাণ করবার জন্য।
মিনা হড়হড় শব্দে বমি করতে শুরু করে। যদিও এমন সুন্দর দামি মোজাইকের মেঝেটাকে সে বমি করে নষ্ট করতে চায় নি। এই নিয়ে তিন-তিন ইয়াকুবকে পেলেও আসল ইয়াকুবকে তার পাওয়া হয় না। আবার তিনবারের পর মালেককে পাওয়া গেলেও শেষপর্যন্ত আবারও ইয়াকুব এবং আবারও মালেককেই তাকে খুঁজে বের করতে হবে। এমন জট সে খোলে কী করে! বরং তার চেয়ে বমি অনেক সহজ একটা কাজ বলে মনে হয়। মিনা বমি করতে-করতে দেখে সুন্দর মোজাইকের ওপরে ছিটকে পড়া তরল ও কঠিনের একটা মিশ্রণ ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে কেমন একটা মানচিত্র-মানচিত্র ভাব তৈরি করেছে। যেখানে অনেক কিছুকেই চেনা-অচেনা রাস্তাঘাটের মতোই দেখায়। তবু এটা তো সত্যই, মিনা শোনে তার ভেতর থেকে কেউ তাকে বলছে, এভাবে বসে থাকলে বমি কি আর তোমাকে ছাড়বে? তোমাকে তো একটা পথ খুঁজে বের করতেই হবে যেখানে থাকে ইয়াকুব সওদাগর এবং তার ছেলে আবদুল মালেক।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ জানুয়ারি ২০১৯/তারা
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন