ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

ডানা কাটা জাদুকাটা

এস এস জামিল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪২, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ডানা কাটা জাদুকাটা

এস এস জামিল: চারজন দুই বাইকে ভোরেই রওনা হয়েছিলাম। শোভন আর সিফাত বাইক ছুটিয়েছে মেঘালয় পর্বতমালা ছুঁয়ে। উঁচু-নিচু পথ, তবু উপভোগ্য যেন। পথে শীত গায়ে কাঁটা দিয়েছে বারবার, গুরুত্ব দিইনি। ঘণ্টা দেড়েকের পর হঠাৎ উঁচু টিলায় উঠে নেমে পড়লাম আমরা। সাইনবোর্ডে লেখা বারিকটিলা। এবার চোখ মেলে দেখার পালা। বারিকটিলার ওপরে নীল আকাশ, নিচে স্বচ্ছ সবুজ জলধারা।

নদীর একপাশে বিস্তীর্ণ বালুচর, অন্যপাশে সবুজ পাহাড়ের হাতছানি। উথাল-পাথাল ঢেউ নেই, তবু চোখের সামনে জাদুকাটা নদীর বিশালতায় সবার চোখে বিস্ময়। যেন ক্যানভাসে আঁকা কল্পনার স্বর্গরাজ্য। অসাধারণ স্বপ্নিল শান্ত এক পরিবেশ। বিস্ময়ে অভিভুত সবাইকে সিলেটি গাইড রইস ভাই বললেন, ‘জাদুকাটা নদী আসলে ডানা কাটা পরী।’

টিলাতেই চোখে পড়ল গির্জা। চারদিকে সবুজের মেলা, মেঘালয় পর্বতমালা। চুনা পাথরের সৌন্দর্য। বিশাল জলরাশি নিয়ে বয়ে চলা জাদুকাটায় মুগ্ধ দৃষ্টি মেলে দেখি। নদীতে কতশত মানুষ আর নৌকা। পাথর তোলা হচ্ছে নদী থেকে। তাতে করে নদীর সৌন্দর্যহানী ঘটেছে বেশ, সঙ্গে পরিবেশেরও ক্ষতি- জানালেন রইস ভাই। সবুজ স্বচ্ছ পানি দেখেই শোভন নামার আগ্রহ জানালো। সিফাত ও রইস ভাইও সায় দিলেন। 

 


তারপর এ অধমও বাদ গেল না। ঝাঁপিয়ে পড়ি সবাই। পাথরে টুকটাক আঘাত পেলেও গুরুত্ব দেই না কেউই। ঠান্ডা জলের তলে এক স্নিগ্ধ অনুভূতি কাজ করে। মনে হয়, অন্য কোথাও চলে গেছি। ঘণ্টাখানেক জাদুকাটায় ঝাপাঝাপি করে উঠতেই হয়। সন্ধ্যা নামছে। গুদারাঘাটে এসে নৌকায় বসতেই অদ্ভুত সৌন্দর্য তখন পশ্চিমাকাশে। কিছুক্ষণ ঘুরেই ফেরার পথ ধরি।

যেভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ সরাসরি বাস সার্ভিস রয়েছে। এনা, হানিফ, শ্যামলী, ইউনিকসহ অনেক বাস এ রোডে চলে। সুনামগঞ্জ থেকে সরাসরি জাদুকাটা যেতে পারেন। আবার টাঙ্গুয়ার হাওর হয়েও জাদুকাটা যাওয়া যায়। টাঙ্গুয়ার হাওর ঘুরে মনে ভালোলাগা তৈরি হবে। টেকেরঘাট থেকে জাদুকাটা যাওয়ার পথটুকু ভালো লাগার মাত্রা বাড়িয়ে দেবে বহুগুণ। আশপাশে আছে লাকমাছড়া, লাইমস্টোন লেক। সেসবও ঘুরে দেখতে পারেন। বাইক না থাকলে পর্যটকরা সাধারণত সিএনজি ভাড়া করে ঘুরে বেড়াতে পারবেন। 

 


যেখানে থাকবেন: সুনামগঞ্জ শহরে থাকতে পারেন। সেখানে বেশকিছু ভালো মানের হোটেল আছে। টাঙ্গুয়ার হাওড় হয়ে গেলে টেকেরঘাট হোটেলে থাকতে পারেন। সরকারি ব্যবস্থাপনায় টাঙ্গুয়ার হাওড় থেকে ৩ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে টেকেরঘাট চুনাপাথর খনি প্রকল্পের রেস্ট হাউজ আছে। সেখানেও থাকতে পারবেন। নৌকাতেও রাত কাটানো যায়। বাইক নিয়ে গেলে এসব এলাকা অপেক্ষাকৃত ভালোভাবে উপভোগ করতে পারবেন।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়