ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

যা আছে দুই জঙ্গির সুরতহাল প্রতিবেদনে

রফিকুল ইসলাম কামাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২১, ২৮ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
যা আছে দুই জঙ্গির সুরতহাল প্রতিবেদনে

রফিকুল ইসলাম কামাল, সিলেট : সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি পাঠানপাড়স্থ জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহলে সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডোদের অভিযানে চার জঙ্গি নিহত হয়েছে।

তন্মধ্যে সোমবার এক নারী ও এক পুরুষের লাশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। লাশ দুটির সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছে পুলিশ।

সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পুরুষ জঙ্গি আত্মঘাতী বিস্ফোরণে মারা গেছে। এ পুরুষকে কথিত কাওছার বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, নারী জঙ্গি গায়ে আগুন দিয়ে মারা গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ নারী জঙ্গি কথিত মরজিনা বেগম বলে ধারণা করছে পুলিশ।

সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুরুষ ব্যক্তির লাশ লম্বায় আনুমানিক ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি। লাশের মুখমন্ডল গোলাকার ও আগুনে পোড়ানো। লাশটির কান দুটি স্বাভাবিক ও মাথায় সামান্য চুল রয়েছে। লাশের ডান চোখ খোলা, উপরে ভ্রু রয়েছে। মুখে সামান্য দাড়িও দৃশ্যমান বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

নগরীর মোগলাবাজার থানার এসআই সোহেল রানার করা সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, লাশের দুই হাত শরীরের সঙ্গে মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় লাগানো দেখা গেছে। লাশের বুক থেকে তলপেট পর্যন্ত পুরোটাই ছিন্নবিচ্ছিন্ন। গায়ে কালো জামা ও পায়ে কালো জুতা রয়েছে। লাশটির বাম পায়ের মাংস টাকু বরাবর কাটা, দুই রান স্বাভাবিক রয়েছে, ডান পায়ে কালো প্যান্টের অংশ আছে।

লাশটি ‘জঙ্গি সন্ত্রাসীর প্রতীয়মান হয়’ উল্লেখ করে সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সন্ত্রাসী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে মারা গেছে।

সুরতহাল প্রতিবেদনে নারী জঙ্গির বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, নারী জঙ্গির উচ্চতা আনুমানিক চার ফুট। মাথায় সামান্য চুল রয়েছে, উপরের পাটির দাঁত দেখা যায়। লাশটির মুখমণ্ডল, দুই হাত ও দুই পায়ের গিরা পর্যন্ত সম্পূর্ণ পোড়ানো। লাশটি সম্পূর্ণই পোড়ানো এবং বাইরে থেকে কঙ্কাল দৃশ্যমান।

মোগলাবাজার থানার এসআই সুজাত দত্ত নারী জঙ্গির সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছেন।

তার তৈরি সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে, লাশের একটি পায়ে সামান্য মাংস রয়েছে এবং পায়ের তালুর নিচে আনুমানিক দুই ইঞ্চি কাটা। লাশটির বুকের গড়ন ও পা দেখে এটি নারীর লাশ বলে শনাক্ত করা হয়েছে।

এ নারীকে ‘জঙ্গি সন্ত্রাসী’ উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন তিনি।

নিহত হওয়া অপর দুই জঙ্গির লাশ পাওয়ার পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতালে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জেদান আল মুসা।

তিনি বলেছেন, নিহত চার জঙ্গির পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি এখনও। তাদের পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়েছে। ডিএনএ টেস্টে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিহত জঙ্গিদের মধ্যে শীর্ষ জঙ্গি মুসা বা অন্য কেউ রয়েছে কি না, তা নিশ্চিত নয়।

বর্তমানে আতিয়া মহল শান্ত রয়েছে। তবে বেলা ১টা ১০ মিনিটের দিকে চারটি বিকট শব্দ শোনা গেছে। এ ছাড়া বিকেল পৌনে ৫টার দিকে ফের প্রচণ্ড শব্দ শোনা যায়। সেনা কমান্ডোরা ড্রোন ব্যবহার করে আতিয়া মহলে ছড়িয়ে থাকা বিস্ফোরক শনাক্ত করে তা নিষ্ক্রীয় করছেন।

গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে আতিয়া মহলে অভিযান শুরু হয়। প্রথমে পুলিশ, র‌্যাব, সোয়াত, পরে সেনা কমান্ডোরা অভিযানে অংশ নেন। গত শনিবার সকাল থেকে সেনা কমান্ডোরা অভিযান চালাচ্ছেন। তাদের অভিযানে চার জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে সোমবার জানানো হয়েছে।



রাইজিংবিডি/সিলেট/২৮ মার্চ ২০১৭/কামাল/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়