ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

ওদের ভালোবাসায় রক্ষা পেল হুতুম পেঁচাটি

মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩০, ২৯ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ওদের ভালোবাসায় রক্ষা পেল হুতুম পেঁচাটি

মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদরের হাসপাতালের পাশ থেকে আজ বুধবার বিকেলে বিরল প্রজাতির হুতুম পেঁচা উদ্ধার করেছে দুই স্কুল ছাত্র।

মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী রওশন ইসলাম জানান, বিকেল ৪টার দিকে তিনি অফিসে দাপ্তরিক কাজ করছিলেন। এ সময় স্কুল ড্রেস পরা দুইজন স্কুল ছাত্র একটি হুতুম পেঁচা নিয়ে আসে। পূর্ণবয়স্ক পেঁচাটিকে কেউ আহত করেছে। হুতুম পেঁচাটির চিকিৎসা চলছে।

মহম্মদপুর সদরের আরএসকেএইচ ইনস্টিটিউশনের দশম শ্রেণির ছাত্র মিঠুন ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র জোহান ইসলাম জানায়, বিকেলে স্কুল ছুটির পর বাড়ি যাচ্ছিল। পথে সদর হাসপাতাল পাড়া এলাকায় জটলা দেখতে পেয়ে তারা দাঁড়ায়। এ সময় দুই-তিনটি শিশু বড় একটি অপরিচিত পাখি নিয়ে টানা-হেঁচড়া করছিল। তারা পাখিটি উদ্ধার করে উপজেলা পরিষদে নিয়ে আসে।

পাখা ছড়ানো অবস্থায় পাখিটির দৈর্ঘ্য আড়াই ফুট। ছাই রঙের পালকের মধ্যে সাদা ডোরাকাটা দাগ রয়েছে। কোনো কারণে গুরুতর আহত হয়ে পাখিটি শিশুদের হাতে ধরা পড়ে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাখিটি উড়তে পারছে না।

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, হুতুম পেঁচা এখন বিলুপ্তির পথে। এ পাখিটি রাতে বিচরণ করে বলে একে নিশাচর পাখি বলা হয়ে থাকে। পেঁচার হুদ হুদ; বুম...বুম ডাক রহস্যময় ও নানা কুসংস্কারের জন্ম দেয়।

হুতুম পেঁচা এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। কৃষকের গোয়াল ঘরে, বাঁশ ঝাড়ে এ হুতুম পেঁচার ছিল বিচরণ। নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন, ফসল আবাদ করতে জমিতে কীটনাশক ব্যবহারে হুতুম পেঁচা হারিয়ে যেতে বসেছে।

প্রাণীবিদদের মতে, এ হুতুম পেঁচার নাম কোটরে পেঁচা। ইংরেজি নাম স্পটেড আউলেট, বৈজ্ঞানিক নাম অ্যাথিনি ব্রামা, গোত্র স্ট্রিগিদি।

এরা জোড়ায় জোড়ায় থাকতে পছন্দ করে। সন্ধ্যা ও রাতে অন্য পাখির সঙ্গে গলা মিলিয়ে ডাকে। বিভিন্ন রকমের ক্ষতিকারক পোকা-মাকড় খেয়ে থাকে। পেঁচা সাধারণত গাছের কোটরে কিংবা দালানের ফাঁক-ফোকরে বসবাস করে। এদের প্রজনন কাল নভেম্বর থেকে মার্চের মধ্যে।

মহম্মদপুর উপজেলার ডা. মানবেন্দ্র মজুমদার জানান, প্রায় ১৬ প্রজাতির পেঁচা দেখা যায়। এর মধ্যে হুতুম পেঁচাকে দেশের প্রায় সব জায়গায় কম বেশি দেখতে পাওয়া যায়। খাবার ও বসবাসের পরিবেশ না থাকায় এ পাখি বিলুপ্তের পথে। পাখিটির চিকিৎসা চলছে।

মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী রওশন ইসলাম বলেন, পাখিটি সুস্থ হলে অবমুক্ত করা হবে।



রাইজিংবিডি/মাগুরা/২৯ মার্চ ২০১৭/মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন/বকুল 

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়