ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

‘বিচার ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতায় কিছু দোষী খালাস পাচ্ছে’

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০৭, ১৬ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘বিচার ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতায় কিছু দোষী খালাস পাচ্ছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিবেশ আপিল আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী বলেছেন, ‘আমাদের বিচার ব্যবস্থায় কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। এ সীমাবদ্ধতার কারণে অনেক দোষী খালাস পেয়ে যাচ্ছে।’

রোববার বিকেলে একটি হত্যা মামলার রায় ঘোষণার সময় এ মন্তব্য করেন তিনি।

ডাকাতির মালামাল নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে রাজধানীর শ্যামপুরে নান্নু নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনায় করা মামলার রায় হয় রোববার। রায়ে চাঁন মিয়া নামের এক আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মামলায় ১০ আসামির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারায় আদালত তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন।

রায় ঘোষণা শেষে বিচারক বলেন, ‘আমাদের বিচার ব্যবস্থায় কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। সীমাবদ্ধতার সুযোগে সাজাপ্রাপ্ত আসামির চেয়েও বেশি অপরাধ করা কিছু আসামি আমাদের আইনের দুর্বলতার সুযোগে আজ খালাস পেয়ে গেল। কিন্তু বিচার আজকে শেষ নয়। আরো একটা বিচার আছে ওপারে। সেই বিচারে হয়তো তারা এর ফল ভোগ করবে।’

খালাস পাওয়া ১০ আসামি হলো- হারুন অর রশিদ ওরফে জুয়েল, জসিম উদ্দিন, মো. ফারুক, চার্লি ওরফে নুরুল ইসলাম, আব্দুল কাদের, মোসা. রোজী, মতিউর রহমান ওরফে মতি, ওহাব, মিন্টু এবং সেন্টু।

রায় ঘোষণাকালে আসামিদের মধ্যে চাঁন মিয়া, জসিম উদ্দিন এবং হারুন অর রশিদ আদালতে হাজির ছিল। বাকিরা জামিনে নিয়ে পলাতক।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ১৯৯৯ সালের ১ আগস্ট শ্যামপুরের ওয়াসা পুকুর পাড়ে এক জোড়া ছেঁড়া জুতা এবং একটি রক্তাক্ত লুঙ্গি পড়ে থাকতে দেখেন এলাকাবাসী। বিষয়টি শ্যামপুর থানা পুলিশকে জানান এলাকাবাসী। পরে পুলিশ এসে পুকুরে খোঁজাখুঁজি করে কাউকে পায়নি। পরের দিন লাশটি পুকুরের পানিতে ভেসে ওঠে। ওই ঘটনায় ওই দিনই শ্যামপুর থানার এসআই সৈয়দ আব্দুর রউফ বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেন। এরপর মামলায় চাঁন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর চাঁন মিয়া আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তার জবানবন্দিতে ১০ জনের নাম উঠে আসে। জবানবন্দিতে চাঁন মিয়া উল্লেখ করে, মিন্টুর সাথে তার ভাবীর বাসা পাটেরবাগে যায় সে ও নান্নু। এরপর তারা চারজন গুলশানের একটা বাসায় গিয়ে দুজনকে জিম্মি করে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা, ৮ থেকে ১০ ভরি স্বর্ণ এবং কিছু মালামাল লুট করে। ওই মালামালের ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে নান্নু এবং মিন্টুর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মিন্টুসহ অন্যরা নান্নুকে শ্যামপুরের ওয়াসা পুকুরের পাড়ে নিয়ে হাত-পা বেঁধে রাখে। এরপর তার একটি হাত শরীর থেকে আলাদা করে ফেলে। এ সময় ওই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় এক লোক তাদেরকে দেখে ফেললে তারা তাকে ধাওয়া করতে থাকে। এদিকে যন্ত্রণায় নান্নু গড়াগড়ি করতে করতে পুকুরে পড়ে যায়।

ডিবি পুলিশে এসআই আব্দুল বাছেদ মামলাটি তদন্ত করে ২০০০ সালের ৩০ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর আদালত ২০০২ সালের ১৬ মে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ এপ্রিল ২০১৭/মামুন খান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়