ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

প্রেমের টানে থাইল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে তরুণী

এমএম আরিফুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০০, ১৮ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রেমের টানে থাইল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে তরুণী

নাটোর প্রতিনিধি : প্রেমের টানে থাইল্যান্ড থেকে নাটোরে এসেছেন এক তরুণী। প্রথমবার এসে ব্যর্থ হয়ে ফিরে গেলেও এবার তিনি সফল। প্রেমিকের পরিবারের সব বাধা পেরিয়ে প্রেমিককে বিয়েও করেছেন তিনি।

গল্পটি নওগাঁর আত্রাই উপজেলার আজাদ হোসেনের ছেলে মোবাইল মেকানিক অনিক খান (২২) ও থাই নাগরিক সুপুত্তো ওরফে ওম ওরফে সুফিয়া খাতুনের (৩৬)।

বুধবার নাটোর আদালতে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। অনিকের নাটোরের শাহগোলা বাজারে একটি মোবাইলের দোকান রয়েছে।তিনি নাটোরেই থাকেন। তার বাবা-মা নওগাঁ থাকেন।

অনিক জানায়, ফেসবুকে প্রথমে সুপুত্তো ওমের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয়। এরপর মোবাইলে কথা-বার্তা। অনিক খুববেশি লেখাপাড়া না জানলেও ভাঙা ভাঙা ইংলিশে কথা বলতে পারেন।

অনিক আরো জানায়, গত ফেব্রুয়ারিতে বাবা-মায়ের অনুমতি নিয়ে সুপুত্তো বাংলাদেশে ছুটে আসেন। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান অনিক। এতদিন যার সঙ্গে পরিচয় ছিল ভার্চুয়াল জগতে, বাস্তবে তাকে দেখে আরো ভালো লেগে যায়।

সুপুত্তো জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি অনিকের বাড়িতে আসেন। এরপর অনিকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে নিজেই বিয়ের প্রস্তাব দেন। সে যাত্রায় অনিকের পরিবারের লোকজন বিয়ের প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। মাত্র পাঁচদিনের ভিসা নিয়ে আসায় ‘না’ সূচক উত্তর নিয়েই বাড়ি ফিরে যান।

তিনি আরো জানান, এ মাসের প্রথম দিকে আবার তিনি ছুটে আসেন, পারিবারিক সম্মতি আদায়ে সফলও হন। তবে বিষয়টা খুব সহজ ছিল না। তার পরিবার রাজি থাকলেও অনিকের পরিবারের বিয়েতে ছিল আপত্তি। অবশেষে সব বাধা অতিক্রম করতে পেরে খুশি তারা।

অনিক খান বলেন, সুপুত্তো আমাকে একটা ভালো মোবাইল ফোন সেট উপহার দিয়েছে। দুজনের ফোনেই সব সময় ইন্টারনেট সংযোগ থাকে। আমরা ভিডিও কল করে দীর্ঘ সময় কথা বলি। এভাবেই পরস্পর পরস্পকে ভালোবেসে ফেলেছি।

অনিক আরো বলেন ‘ও (সুপুত্তো) আমার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমি ওর সঙ্গে সারা জীবন থাকতে চাই।’

সুপুত্তো বলেন, থাইল্যান্ডের সমাজে বহুবিবাহ একটা রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি এটা পছন্দ করি না। তাই বিয়ে করছিলাম না। হঠাৎ করে ফেসবুকে বাংলাদেশের অনিকের সঙ্গে পরিচয় হয়। ওর সরলতা আমাকে মুগ্ধ করে। ধীরে ধীরে ওর প্রতি আমার আস্থা জন্মে। আমি ওকে ভালোবেসে ফেলেছি। ওকে আপন করে নেওয়ার জন্য বারবার এ দেশে ছুটে এসেছি। এবার সে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। বিয়ে করে আমি এখন দারুণ সুখী।

ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠা প্রসঙ্গে ৩৬ বছর বয়সী সুপুত্তো জানান, পড়াশোনা শেষ করে তিনি প্রথমে ব্যাংকে চাকরি করতেন। সেটা ছেড়ে দিয়ে এখন ফাস্ট ফুডের ব্যবসা করেন। দোকানে বসে ফেসবুক ব্রাউজ করতে গিয়ে বাংলাদেশের ২২ বছরের তরুণ অনিক খানকে বন্ধুত্বের প্রস্তাব (ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট) পাঠান। প্রথমে দুজনের মধ্যে ফেসবুকে কথা হতো। পরে ফোনে কথাবার্তা চলতে থাকে। এক সময় পরস্পরের প্রেমে পড়ে যান তারা।

অনিকের বাবা আজাদ হোসেন বলেন, মেয়েটি খুব ভালো। আমাদের আপন করে নিয়েছে। আমরা গরিব, শিক্ষিতও না। কিন্তু এ নিয়ে ওর কোনো কষ্ট নেই।



রাইজিংবিডি/নাটোর/১৮ মে ২০১৭/এম এম আরিফুল ইসলাম/রুহুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়