বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে উপচে পড়া ভিড়

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর : গাজীপুরস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে ঈদের পরের দিন আজ মঙ্গলবার বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী ভিড় জমান।

পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, আজ পার্কে আনুমানিক ২০ হাজার দর্শনার্থীর সমাগম হয়েছে। যা ঈদের দিনের দ্বিগুণ। দর্শনাথীরা বেশি ভিড় করেছেন কোর সাফারি পার্কে।

কোর সাফারি পার্কে বাঘ, সিংহ, ভালুক, হরিণ, জেব্রা, জিরাফ, হাতি ইত্যাদি আলাদা আলাদা সীমানা প্রাচীরের ভেতর উন্মুক্তভাবে বিচরণ করে। এসব প্রাণী দেখতে দর্শনার্থীদের পার্কের নির্ধারিত মিনিবাস/গাড়িতে চড়ে যেতে হয়। যার কারণে পার্কের এ অংশ দেখতে সৃষ্টি হয় দর্শনাথীদের লম্বা লাইনের। দর্শনার্থীদের অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

পার্কের রেঞ্জার মো. মোতালেব হোসেন জানান, ঈদের দিন ১০-১২ হাজর দর্শনাথীর সমাগম হয়েছিল। আজ আনুমানিক ২০ হাজার দর্শনার্থী এ পার্কে আসেন। দর্শনাথীদের কোর সাফারি পার্ক দেখার জন্য এখন ২৮-৩০ আসনের ছয়টি মিনিবাস রয়েছে। এখনো অন্তত ১০টি গাড়ির প্রয়োজন। তিনি বলেন, কোর সাফারি পার্কে লিমিটেশনের মধ্যেই গাড়ি চলাচল করাতে হবে। কারণ বেশি গাড়ি হলে সেখানে গাড়ি চলাচলে অসুবিধা হবে।

তিনি বলেন, কোর সাফারি দেখতে হয় গাড়িতে করে। এখানে গাড়ির আসন অনুযায়ী দর্শনার্থী সুযোগ পান। ফলে লোক সমাগম বেশি হলে পার্কের এ অংশে দর্শনার্থীদের অপেক্ষা করতে হয়। অন্য অংশে লোক সমাগম বেশি হলেও সমস্যা হয় না।

তিনি জানান, পার্কের দেখভালের জন্য প্রযোজন ২০০ জনবল লোকবলের। সেখানে রয়েছেন মাত্র ৫০ জনের মতো। ২০১৫ সালে লোকবল চেয়ে পার্কের প্রকল্প কর্মকর্তা তপন কুমার আবেদন করেছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত লোকবল নিয়োগ হয়নি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কটি পাঁচটি অংশে বিভক্ত। সেগুলো হলো- কোর সাফারি, সাফারি কিংডম, বায়োডাইভার্সিটি পার্ক, এক্সটেনসিভ এশিয়ান সাফারি পার্ক এবং বঙ্গবন্ধু স্কয়ার। ছুটির বিশেষ দিনগুলো ছাড়া এ পার্কে স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিন গড়ে চার/পাঁচ হাজার দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে।

এ ছাড়া সাফারি কিংডমে রয়েছে ময়ূর, ধনেশ, ক্রাউন্ট ফিজেন্টসহ দেশি-বিদেশি নানা জাতের পাখির পাখিশালা, প্রজাপতি কর্ণার, কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্র, মেরিন একুরিয়াম, ইমু গার্ডেন, ময়ুর/মেকাউ ওপেন ল্যান্ড, লেকজোন ও কুমির পার্ক। প্রতিদিন পার্কের বিভিন্ন বন্যপ্রাণী দেখতে ভিড় জমায় হাজার হাজার দর্শনার্থী। পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে উঠে দর্শনার্থীরা সুবিশাল সবুজ প্রকৃতি দেখতেও ভিড় জমায়।

পার্কের এনিমেল কিপার মো. রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, পার্কে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর নিরাপত্তার জন্য এখানে স্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা জরুরি। তাছাড়া এখানকার গভীর বনাঞ্চলে মোবাইল নেটওয়ার্ক খুব দুর্বল। ফলে দর্শনার্থী ও পার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাইরে যোগাযোগ করতে  বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।

পার্কে প্রবেশ ফি- প্রাপ্তবয়স্ক জনপ্রতি ৫০ টাকা এবং ১৮ বছর বয়সীর ২০ টাকা। শিক্ষা সফরে আসা বা সাধারণ স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রবেশ মূল্য ১০ টাকা। গাড়িতে করে কোর সাফারি পার্ক পরিদর্শন প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিজনের টিকিট ১০০ টাকা। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৫০ টাকা।



রাইজিংবিডি/গাজীপুর/২৬ জুন ২০১৭/হাসমত আলী/বকুল