ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

গড়াই নদীর ভাঙনে হুমকির মুখে ১৩ গ্রাম

সোহেল মিয়া || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৩৬, ১৬ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গড়াই নদীর ভাঙনে হুমকির মুখে ১৩ গ্রাম

রাজবাড়ী প্রতিনিধি : রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত গড়াই নদীর অব্যাহত ভাঙনের ফলে যেকোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে দুই ইউনিয়নের ১৩টি গ্রাম।

গড়াই নদীর ভাঙন প্রতিরোধে কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা না নেওয়ায় পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে  উপজেলার নারুয়া ও জঙ্গল ইউনিয়নের ১৩টি গ্রামের বাসিন্দারা এখন ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে। দ্রুত কোনো পদক্ষেপ না নিলে যেকোনো মুহূর্তে বিলীন হয়ে যেতে পারে এসব গ্রাম। প্রতি বছর পানি বৃদ্ধি ও হ্রাস পাওয়ার সময় ব্যাপক হারে ভাঙনের শিকার হয় এ অঞ্চলের  বাড়ি-ঘরসহ  ফসলি জমি।

অব্যাহতভাবে গড়াই নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো ভাঙনের শিকার হলেও ভাঙন প্রতিরোধে কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এসব গ্রামের মানুষের মাঝে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গড়াই নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনের কবলে পড়েছে নারুয়া ইউনিয়নের মরাবিলা, কোনাগ্রাম, জামসাপুর, বাকসাডাঙ্গী, নারুয়া, সোনাকান্দর এবং জঙ্গল ইউনিয়নের পোটরা, আখপোটরা, পুষআমলা, সমাধিনগর, হাবাসপুর, বাঙ্গরদাহ ও তারালিয়া গ্রাম। বাকসাডাঙ্গি গ্রামের  যুবকরা স্বেচ্ছায় বালুর বস্তা ফেলে মসজিদ ও এলাকাকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য শেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গত বছর পানি হ্রাসের সময়ই নারুয়া ইউনিয়নের মরাবিলা ও কোনাগ্রামের  পাকা সড়ক ও নারুয়া খেয়াঘাট এবং জামসাপুর গ্রাম এলাকার বেড়িবাঁধটি  নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

মানুষের চলাচলের জন্য নারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে গত বছরই নতুন করে মাটির রাস্তা তৈরি  করা হয়েছিল। তবে এ বছরেও যেভাবে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে তাতে যেকোনো মুহূর্তে রাস্তাটি ভেঙে নদীগর্ভে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

গড়াই নদী তীরবর্তী জঙ্গল ও নারুয়া ইউনিয়নের বাসিন্দারা জানান, প্রতি বছরই গড়াই নদীর ভাঙনে জঙ্গল ইউনিয়নের পোটরা, আখপোটরা, পুষআমলা, সমাধিনগর, হাবাসপুর, বাঙ্গরদাহ, তারালিয়া এবং নারুয়া ইউনিয়নের  মরাবিলা, কোনাগ্রাম, জামসাপুর, বাকসাডাঙ্গী, নারুয়া ও সোনাকান্দ  গ্রামের ফসলি জমি, গাছপালা, বেড়িবাঁধের অংশবিশেষ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভাঙন প্রতিরোধে সিসি ব্লক বসানো হলেও তা কোনো কাজেই আসছে না। সিসি ব্লকগুলো এরই মধ্যে ভেঙে নদীতে চলে গেছে।

নারুয়া লিয়াকত আলী স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষক মো. বদিউজ্জামান জানান, প্রতি বছরই নতুন নতুন এলাকা নদী ভাঙনের শিকার হচ্ছে। এতে মানুষের বসত ভিটাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং কৃষি জমি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। নদী ভাঙনরোধে যদি এখনি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হয় তাহলে মানচিত্র থেকে যেকোনো সময় হারিয়ে যাতে পারে ১৩টি গ্রাম।

জঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নৃপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, গড়াই নদীর অব্যাহত ভাঙনে এলাকার কৃষি জমি প্রতি বছরই নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। ফলে কৃষক নিজ নামীয় জমি হারিয়ে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। দ্রুত এ বিষয়ে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, গড়াই নদীর ভাঙন থেকে ১৩টি গ্রাম রক্ষা করার জন্য এরই মধ্যে উপজেলা পরিষদ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবগত করা হয়েছে।

বালিয়াকান্দি উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা কর্মকর্তা মো. ইকবাল সরদার বলেন, গড়াই নদীর ভাঙন থেকে এলাকা রক্ষার্থে ইতিমধ্যে সংসদ সদস্য মো. জিল্লুল হাকিম মহোদয়ের সম্মতিক্রমে স্থায়ী প্রতিরক্ষা কাজ এবং ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ পুনরায় সংস্কারের জন্য বাজেট চেয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। আশা করছি বাজেট বরাদ্দ হলে নদী ভাঙন রক্ষার কাজ শিগগিরই শুরু হবে।




রাইজিংবিডি/ রাজবাড়ী/ ১৬ জুলাই ২০১৭/ সোহেল মিয়া/রুহুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়