ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

চলতি বছর বেসরকারিভাবে ২০টি বাল্যবিবাহ রোধ

আশরাফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪০, ১৭ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
 চলতি বছর বেসরকারিভাবে ২০টি বাল্যবিবাহ রোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি বছরের জানুযারি থেকে মে পর্যন্ত বেসরকারিভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ২০টি বাল্যবিবাহ রোধ করা হয়েছে।

সোমবার পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) এক তথ্য বিবরণীতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, উন্নয়নের বহুমাত্রিক ধারণার সম্পৃক্ততার অংশ হিসেবে পিকেএসএফ-এর সহযোগী সংস্থাগুলোর মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন স্তরে জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০১৩ সালে ‘সোশ্যাল অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড নলেজ ডিসেমিনেশন’ ইউনিট প্রতিষ্ঠা করে। এ ইউনিট অন্যান্য জনসচেতনতামূলক কাজের পাশাপাশি পিকেএসএফ-এর সমৃদ্ধি কর্মসূচিভুক্ত দেশের ১৬টি ইউনিয়নে নারী ও শিশুর অধিকার রক্ষায় বিশেষ করে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

পিকেএসএফ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারপারসন, শিক্ষক, ইমাম, কাজী, যুবসমাজের প্রতিনিধি, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ ২ হাজার ১২৮ জনকে ‘সামাজিক উন্নয়ন ও দায়বদ্ধতা’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। নারীর আত্মপ্রতিষ্ঠার অন্তরায় হিসেবে বিবেচিত বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে সমাজের প্রান্তিক পর্যায়ে আলোচনা সভা, প্রশিক্ষণ ও অ্যাডভোকেসি কর্মশালা চলমান রয়েছে। ১৬ ইউনিয়নে ৪০টি মাধ্যমিক ও সমমানের স্কুলের ৫৯৫ জন শিক্ষক ও ১০ হাজার ২৩৫ ছাত্রছাত্রীকে ওরিয়েন্টেশন প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া সহায়তা করা হয়েছে ‘কিশোরী ক্লাব’ গঠনে। যা বাস্তবে বাল্যবিবাহ রোধে ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে এবং সমবয়সীদের মাঝে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করাতেও সহায়তা করছে। এর পাশাপাশি যুবসমাজও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে এগিয়ে আসছে। এ সকল কার্যক্রমের ফলশ্রুতিতে চলতি বছরের জানুযারি থেকে মে পর্যন্ত ২০টি বাল্যবিবাহ রোধ করা সম্ভব হয়েছে।

নওপাড়া, পাঁচগাঁও, সীমান্ত, এলেঙ্গা, আইয়ুবপুর, দূর্গাপুর, গণিপুর, সুকুন্দী, বরকল, দেবীডুবা ও বড়তারা ইউনিয়নে এসব বাল্যবিবাহ রোধ হয়েছে।

ফাউন্ডেশনের তথ্য বিবরণীতে দুটো কেস স্টাডি উল্লেখ করা হয়েছে। একটি কেস স্টাডিতে এতে বলা হয়েছে, আব্দুল খালেক ও রোজিনা দম্পতির ১৪ বছর বয়সী মেয়ে সোহাগী। সে জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের গয়েশপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণিতে পড়ে। মেধাবী সোহাগীর স্বপ্ন পড়াশোনা হয়ে শিক্ষক হওয়ার। লেখাপড়ায় ভালো বিধায় ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের মাঝে সে জনপ্রিয়। কিন্তু  হঠাৎ একদিন তাদের বাড়িতে বিয়ের জন্য পাত্র পক্ষ হাজির হয়। তারা সোহাগীর মাকে প্রায় বোঝাতে সক্ষম হয় যে এই পাত্রের সঙ্গে সোহাগীর বিয়ে হলে সে সুখী হবে। সোহাগীর এই বিয়েতে অসম্মতি থাকলেও সে তার মাকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়। সোহাগী উপায়ন্তর না পেয়ে তার বন্ধুদের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করে। তারা কিছুদিন আগেই পিকেএসএফ-এর সহযোগী সংস্থা ‘ওয়েভ ফাউন্ডেশন’ দ্বারা পরিচালিত ‘বাল্যবিবাহ রোধে করণীয়’ শীর্ষক  ওরিয়েন্টেশনে অংশ নিয়েছিল। তারা দ্রুত বিষয়টি গ্রামের সমৃদ্ধির ওয়ার্ড কমিটি, স্কুল ম্যানেজমেন্ট কমিটি এবং শিক্ষকদের দৃষ্টিগোচর করে। ফলশ্রুতিতে তারা সোহাগীর জীবনে ভবিষ্যতে যে বিরূপ  প্রভাব পড়তে পারে সেটি বোঝাতে  সক্ষম হয়। সোহাগীর মা-বাবা বিষয়টি অনুধাবন  করতে পারে এবং সম্মিলিত উদ্যোগে বিয়েটি বন্ধ হয়। সোহাগী  এখন  তার ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের  জন্য আন্তরিকতা দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছে।

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ জুলাই ২০১৭/আশরাফ/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়