ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

রসিক নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়ন পেতে লবিং

নজরুল মৃধা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪০, ২২ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রসিক নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়ন পেতে লবিং

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর : নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বরের শেষ দিকে রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই মাঠে নেমেছেন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা। দলীয় প্রতীকে মেয়র নির্বাচন হওয়ায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীরা ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। মনোনয়ন পেতে নিজ দলের হাইকমান্ডের সঙ্গে যোগযোগ করার চেষ্টা করছেন। দল কাকে মনোনয়ন দেবেন এ নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।

আওয়ামী লীগের বর্তমান মেয়র সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান সফি, সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল, আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল ইসলাম মিলন ও জয়নুল আবেদীন নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন।

অন্যদিকে বিএনপির কাওছার জামান বাবলা, শহিদুল ইসলাম মিজু, জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, আবদুর রউফ মানিক ও এরশাদের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ, জাসদের মাসুদ-নবী-মুন্না, ওয়ার্কার্স পার্টির মাজিরুল ইসলাম লিটন, বাসদের আবদুল কুদ্দুস প্রচারণা চালাচ্ছেন।

এবারো আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচন করতে চান বর্তমান মেয়র জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সরফুদ্দীন আহম্মেদ ঝন্টু। তিনি নগরীতে ব্যানার ফেস্টুন করে তার আমলে উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে নগরীর বিভিন্ন স্থানে প্রচার চালাচ্ছেন।

দলীয় মনোনয়ন পাবেন এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচন করব। কারণ আমার আমলে অনেক উন্নয়ন কাজের টেন্ডার হয়েছে এবং সেগুলোর কাজ শেষের পর্যায়ে। এ সব কাজ শেষ হলে নগরীর চিত্র পাল্টে যাবে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আমি নির্বাচন করব।’

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য চৌধুরী খালেকুজ্জামানও নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন। তিনি নৌকা মার্কা পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তার সমর্থকরা মনে করছেন তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে বিজয়ী হবেন।

রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান সফিও প্রচার চালাচ্ছেন। ২০১২ সালে রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি হেরে যান। এবার তিনি নৌকা প্রতীক পাওয়ার জন্য ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন।

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল সিটির বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে ঘুরে নিজের পক্ষে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।

মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বারের প্রেসিডেন্ট রেজাউল ইসলাম মিলনও দীর্ঘদিন থেকে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।

সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সহ-সম্পাদক ও জেলা সদস্য রাসেক রহমানও প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।

আওয়ামী লীগ নেতা প্রাক্তন শিক্ষা কর্মকর্তা জয়নুল আবেদীনও প্রচারে নেমেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি জনগণের কল্যাণে কাজ করতে চাই। তাই আসন্ন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব।’

এদিকে মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ও  কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফাকে সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে জাপার প্রার্থী হিসেবে পাঁচ মাস আগেই পরিচয় করিয়ে দেন দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এরপর থেকেই তিনি সিটির প্রতিটি ওয়ার্ডে ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় করে ভোট প্রার্থনা করছেন।

তিনি বলেন, ‘এবার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আমি বিপুল ভোটে জয়লাভ করব।’ প্রথম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোস্তফা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দ্বিতীয় হয়েছিলেন।

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক প্রাক্তন পৌর মেয়র আবদুর রউফ মানিকও প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি টানা ৮ বছর পৌর মেয়র ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমার আমলে রংপুরে যতো উন্নয়ন হয়েছে তা অন্য কোনো মেয়রের আমলে হয়নি। তাই জনগণ আমাকে চায়। জনগণের উন্নয়নের কথা চিন্তা করেই আমি এবার নির্বাচন করব।’ তিনিও গত নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন করে হেরে যান।

এরশাদের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তার ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ প্রতিদিনই পাড়া মহল্লায় প্রচার চালাচ্ছেন। তিনি সংবাদ সম্মেলন ও মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।

মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন কাওসার জামান বাবলা।  তিনি গত সিটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ২৫ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। এবারো নির্বাচন করবেন বলে পোস্টার ব্যানার সাঁটিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘এবার আমার অবস্থান অনেক ভাল। প্রচারও আমি অনেক আগে থেকেই শুরু করেছি। আশা করি- দল আমাকে মনোনয়ন দেবে।’

রংপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজুও মেয়রপদে নির্বাচন করবেন বলে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনিও দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন।

ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মাজিরুল ইসলাম, জাসদ (আম্বিয়া) রংপুর মহানগর শাখার যগ্ম সম্পাদক মাসুদ-নবী-মুন্না, বাসদ রংপুর জেলা সমন্বয়ক আবদুল কুদ্দুসও প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।

রংপুর সিটি করপোরেশনে বর্তমানে ভোটার রয়েছে তিন লাখ ৮৮ হাজার ৪২১ জন। এর মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৯৬ হাজার ৬৫৯ এবং নারী এক লাখ ৯১ হাজার ৭৬২ জন।



রাইজিংবিডি/রংপুর/২২ জুলাই ২০১৭/নজরুল মৃধা/উজ্জল/রুহুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়