ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

খায়রুল হকের বক্তব্য আদালত অবমাননার শামিল : ফখরুল

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০১, ১০ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
খায়রুল হকের বক্তব্য আদালত অবমাননার শামিল : ফখরুল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ও আইন কমিশনের চেয়ারম্যান এ বি এম খায়রুল হকের বক্তব্যকে ‘অশালীন ও আদালত অবমাননাকর’ হিসেবে অভিহিত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সরকার বা আওয়ামী লীগ প্রতিক্রিয়া দেওয়ার আগে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা শুধু অশালীন নয়, আদালত অবমাননার শামিল।’

ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে এ বি এম খায়রুল হক এবং আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি।

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়কে ‘প্রধান দলিল’ হিসেবে অভিহিত করেন মির্জা ফখরুল।

ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় এ বি এম খায়রুল হক বলেন, ‘আমরা জেনে এসেছি, দিস ইজ পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ। কিন্তু এ রায়ের পরে মনে হচ্ছে, উই আর নো লংগার ইন দি পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ। উই আর রাদার ইন জাজেস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ।’

এ বি এম খায়রুল হকের ওই বক্তব্যে শাসকদলের নেতাদের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি শুনতে পান বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।

‘এ বি এম খায়রুল হক ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্য একই সুরে গাঁথা। অথচ ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় একটি ঐতিহাসিক ও দার্শনিক রায়। এ রায়ের মাধ্যমে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন আশার আলো দেখেছে,’ বলেন মির্জা ফখরুল।

সরকার অত্যন্ত সচেতনভাবে রাষ্ট্রের স্তম্ভগুলো ধ্বংস করে দিচ্ছে, এ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাসীনরা গণমাধ্যম এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যেভাবে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে, একইভাবে বিচার বিভাগকেও নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। তাই ষোড়শ সংশোধনী বাতিল হওয়ায় তাদের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। কারণ, আওয়ামী লীগ যে জোর করে ক্ষমতায় আছে, অপকর্ম করছে, এর চেহারা উন্মোচিত হয়েছে এ রায়ের মাধ্যমে।’

ষোড়শ সংশোধনী বাতিল নিয়ে আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আইনমন্ত্রী হিসেবে এ বিষয় বলা একেবারেই উচিৎ নয়। কারণ, উনার দায়িত্ব হচ্ছে আদালত যে রায় দেন তা বাস্তবায়ন করা।’

এ বি এম খায়রুল হকের বক্তব্য প্রসঙ্গে মওদুদ আহমদ বলেন, ‘পঞ্চম সংশোধনী ও ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তিনি যে অপরাধ করেছেন, এর জন্য জনগণের কাঠগড়ায় একদিন তাকে দাঁড়াতে হবে। পাশাপাশি বর্তমানে আইন কমিশনের পদে বসে এ ধরনের বক্তব্য সম্পূর্ণভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘন।’

ষোড়শ সংশোধনীর রায়ে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষা করা হয়েছে, দাবি করে প্রবীণ এই আইনজীবী বলেন, ‘এ রায়ে কোনো অপ্রাসঙ্গিক কথা রাখা হয়নি। প্রতিটি শব্দই প্রাসঙ্গিক। তাই তাদের উচিৎ হবে বিচার বিভাগের বিতর্কিত মন্তব্য বা ভাবমূর্তি নষ্ট না করে রিভিউ আবেদন করা।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আহমদ আজম খান, উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব হারুন অর রশিদ, আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানা উল্লাহ মিয়া, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ আগস্ট ২০১৭/রেজা/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়