ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘সংসদে উঠছে বস্ত্র আইন’

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:০৫, ২৭ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘সংসদে উঠছে বস্ত্র আইন’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বস্ত্র আইন আগামী অধিবেশনে সংসদে উঠবে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম।

রোববার সচিবালয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বস্ত্র নীতি-২০১৭ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে গঠিত উপদেষ্টা কমিটির প্রথম বৈঠকে তিনি এ কথা জানান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আইনটি জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হবে। ইতিমধ্যে আইনটি মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে। আইনটি পাস হলে বস্ত্র ও পোশাক খাতে শৃঙ্খলা ফিরবে।

তিনি আরো বলেন, সরকার উৎপাদনশীলতা, কর্মসংস্থান, রপ্তানি ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব বস্ত্র ও পোশাক খাতকে বিকশিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যাতে বস্ত্র ও পোশাক খাতকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সক্ষম ও শক্তিশালী করা যায়।

২০২১ সালের মধ্যে বস্ত্র খাতের টার্গেট পুরণ করা হবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, লক্ষ্য অর্জন করতে হলে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং এর স্টেকহোল্ডারগণ যেমন: বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ, বিটিটিএলএমইএ এবং বিজিএএমপিআইএকে নিবিড়ভাবে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

মির্জা আজম বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বস্ত্র খাত থেকে রপ্তানি আয় ৫০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে সরকার কাজ করছে। বিরাষ্ট্রীয়করণের মাধ্যমে বেসরকারি খাতে দেওয়া অনেক বস্ত্রকল বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। বেসরকারি খাতে দেওয়ার সময় যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছিল সেসব শর্ত ভঙ্গকারীদের কাছ থেকে বস্ত্রকল ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এসব বস্ত্রকল যেসব জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত, ব্যবসায়ীরা চাইলে পিপিপির (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ) মাধ্যমে তাদের লিজ দেওয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, দেশে বস্ত্র খাতে দক্ষ জনবল তৈরির জন্য প্রতিটি বৃহত্তম জেলায় একটি করে টেক্সটাইল কলেজ এবং প্রতিটি জেলায় একটি করে। ভোকেশনাল টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট নির্মাণ করা হবে।

সভায় বক্তব্য রাখেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী, বস্ত্র পরিদপ্তরের পরিচালক ইসমাইল হোসেন, বিটিএমসির চোরম্যান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মাহবুব আহমেদ জাকারিয়া প্রমুখ।

এ সময় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, এফবিসিসিআই, বিটিএমএ, বিকেএমইএ ও বিটিটিএলএমইএর প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বস্ত্র পণ্যের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ এবং মধ্য ও উচ্চমূল্য সংযোজিত রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে প্রাথমিক বস্ত্রশিল্পের অধিকতর উন্নয়ন, বস্ত্র উপখাতের জাতীয় অগ্রাধিকারভিত্তিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, বস্ত্র খাতে উৎপাদিত পণ্য সর্বাধিক প্রাধিকারপ্রাপ্ত শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা, মোস্ট ফেভারর্ড ন্যাশনাল স্ট্যাটাসের স্বীকৃতি আদায়, বস্ত্র খাতের বিভিন্ন উপখাতে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ, পরিবেশবান্ধব পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে কারখানাগুলোতে ইএফটি স্থাপনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক বিদ্যমান পরিবেশ আইন ও পরিবেশ বিধিমালা অনুসরণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

তাছাড়া টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক প্রতিষ্ঠা, বস্ত্র ও পোশাক খাতে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং তৈরি পোশাকের রপ্তানিবাজার সম্প্রসারণ, গবেষণা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জোরদার এবং বাজার পরিসংখ্যান সম্পর্কিত তথ্য ব্যবস্থাপনা সুদৃঢ়করণ, বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাসে দেশীয় বস্ত্রের প্রদর্শনী এবং জাদুঘর স্থাপন, বিদেশি ক্রেতা আকৃষ্ট করার জন্য বিদেশি বিনিয়োগ, বস্ত্রশিল্পের প্রচার ও প্রসারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

উল্লেখ্য, বস্ত্র নীতি-২০১৭ অনুযায়ী বস্ত্র ও পোশাক খাতে পরিকল্পিত শিল্পায়নে শিল্পোদ্যোক্তাদের শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠা ও কার্যকরভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়ন ও সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে উপদেষ্টা কমিটি গঠিত হয়। এ কমিটি ন্যূনপক্ষে ষান্মাসিক ভিত্তিতে সভায় মিলিত হবে এবং বস্ত্র নীতি বাস্তবায়ন সংক্রান্ত পর্যালোচনা করে সুপারিশ প্রণয়ন ও ক্ষেত্রমতে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ আগস্ট ২০১৭/নঈমুদ্দীন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়