আব্দুল জব্বারের মৃত্যুতে মন্ত্রিসভার শোক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী আব্দুল জব্বারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে মন্ত্রিসভা। এ সময় মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে আব্দুল জব্বারের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
৩০ আগস্ট বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন আব্দুল জব্বার। গত সাড়ে তিন মাস ধরে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। আব্দুল জব্বার কিডনি, হার্ট, প্রস্টেটের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।
আব্দুল জব্বার স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী মুক্তিযোদ্ধা। গত শতকের ষাট ও সত্তর দশকের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী।
আব্দুল জব্বার ১৯৩৮ সালের ৭ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার গান গাওয়া শুরু ১৯৫৮ সাল থেকে তৎকালীন পাকিস্তান বেতারে। প্রথম চলচ্চিত্রের জন্য গান করেন তিনি ১৯৬২ সালে। ১৯৬৪ সাল থেকে তিনি বিটিভির নিয়মিত গায়ক হিসেবে পরিচিতি পান।
চলচ্চিত্রে কণ্ঠ দেন প্রথম ১৯৬৪ সালে। সে বছর জহির রায়হান পরিচালিত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম রঙিন চলচ্চিত্র সংগমের গানে কণ্ঠ দেন তিনি। এরপর ১৯৬৮ সালে এতটুকু আশা ছবিতে সত্য সাহার সুরে তার গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু’ গানটি বেশ জনপ্রিয়তা পায়। ১৯৭৮ সালে সারেং বৌ ছবিতে আলম খানের সুরে তার গাওয়া ‘ও..রে নীল দরিয়া’ গানটি অসাধারণ জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ও প্রেরণা জোগাতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ ও ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’সহ অসংখ্য গানে কণ্ঠ দেন। তার গানে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আব্দুল জব্বার হারমোনিয়াম নিয়ে কলকাতার বিভিন্ন ক্যাম্পে গিয়ে গান গেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্বুদ্ধ করেন। ১৯৭১ সালে তিনি মুম্বাইয়ে ভারতের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য জনমত তৈরিতেও নিরলসভাবে কাজ করেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের ত্রাণ তহবিলে সে সময় বিভিন্ন সময় গণসংগীত গেয়ে প্রাপ্ত ১২ লাখ রুপি দান করেছিলেন।
সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৮০ সালে একুশে পদক ও ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার পান।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭/নঈমুদ্দীন/আসাদ/মুশফিক
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন