ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সিকান্দার ঝড়ে এলোমেলো সিলেট

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫৪, ২৪ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সিকান্দার ঝড়ে এলোমেলো সিলেট

ইয়াসিন হাসান, চট্টগ্রাম থেকে : বিশেষ বিশেষণে বিশেষায়িত করতে হবে সিকান্দার রাজাকে। না হলে অন্যায়ই হবে। অসাধারণ, অতিমানবীয়, অবিশ্বাস্য এগুলো তার জন্য কম। সাগর পাড়ের স্টেডিয়ামে চিটাগং ভাইকিংসের এ ক্রিকেটার যে ঝড় তুললেন, আবহাওয়া অধিদপ্তর বোলারদের জন্য ‘৯ নম্বর বিপদ সংকেত’ দিতেই পারত।

সিকান্দার রাজা কতটা ধ্বংসাত্মক ছিলেন তা একটা পরিসংখ্যানে স্পষ্ট হবে। ১০ ওভারে চিটাগং ভাইকিংসের রান ৮৪, শেষ ১০ ওভারে তারা পায় ১২৭ রান! ৬ রানে জীবন পাওয়া সিকান্দার রাজার ১০ ওভারে শেষে রান ছিল ৭। পরের ১০ ওভারে দলের অর্ধেকের বেশি রান করেন সিকান্দার রাজা। সেটাও ৮৮, বাকিদের অবদান মাত্র ৩৯!

বলার অপেক্ষা রাখে না পুরো দলের দায়িত্বটা নিজের কাঁধে নিয়ে একাই মাঠ মাতিয়ে যান সিকান্দার রাজা। ৯ চার ও ৬ ছক্কায় ৪৫ বলে সিকান্দার রাজা থামেন ৯৫ রানে। তাইজুল ইসলাম ও কামরুল ইসলাম রাব্বী বাদে প্রত্যেক বোলারকেই একটি করে অন্তত ছক্কা মারেন জিম্বাবুয়ের এ ক্রিকেটার। এর মধ্যে পেসার আবুল হাসান রাজু হজম করেন তিন ছক্কা। এছাড়া নাসির হোসেন, টিম ব্রেসনান ও গোলাম মুদাসের হজম করেন ১টি করে ছক্কা।

চতুর্থ উইকেটে সিকান্দার রাজাকে সঙ্গ দেন স্টিয়ান ভন জিল। দুজন ৭৩ রানের জুটি গড়েন। দক্ষিণ আফ্রিকার বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ভন জিল ৪০ রানে আউট হলে আরও তেঁতে যান সিকান্দার রাজা। পঞ্চম উইকেটে নাজিবুল্লাহ জারদানকে নিয়ে ৬৮ রানের জুটি গড়েন। যেখানে আফগান ক্রিকেটার নাজিবুল্লাহর অবদান মাত্র ১৮!



সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৫ রান দূরে থেকে কামরুল ইসলাম রাব্বীর বলে আউট হলেও ততক্ষণে চিটাগং ভাইকিংসের রান ২০৬। শেষ পর্যন্ত ২১১ রানের সংগ্রহ পায় চিটাগং। পাহাড় সমান সংগ্রহের শুরুটা এনে দিয়েছিলেন অধিনায়ক লুক রনকি। ২৫ বলে ডানহাতি এ ওপেনার করেন ৪১ রান। হতাশ করেন সৌম্য সরকার ও এনামুল হক বিজয়। সৌম্য ১ ও বিজয় ৩ রানে ফিরেন সাজঘরে।

এ ম্যাচের আগে সিলেটের বোলাররা মন জয় করেছিল ক্রিকেটপ্রেমিদের। কিন্তু এ ম্যাচে তাদের বোলিং ছিল ছন্নছড়া। সর্বোচ্চ ২ উইকেট পাওয়া কামরুল ইসলাম রাব্বী ৪ ওভারে দেন ৩৫ রান। আবুল হাসান রাজু ৪ ওভারে খরচ করেন ৪২ রান। প্রথমবারে মতো বিপিএল খেলতে নামা গোলাম মুদাসের ২ ওভারে দেন ৩১ রান।

২১২ রানের লক্ষ্য তাড়া করার জন্য প্রয়োজন ছিল দূর্দান্ত শুরু এবং বড় ইনিংসের। শুরুটা খারাপ ছিল না সিলেটরও। ওভার প্রতি ১০ করে রান তুলে পাওয়ার প্লেতে সিলেটের রান ১ উইকেটে ৬০। গুনাথিলাকা ১০ রানে ফিরে গেলেও ফ্লেচার ছিল নিজস্ব রূপে। ক্যারিবীয়ান এ ক্রিকেটার ৩৩ বলে তুলে নেন ফিফটি। দ্বিতীয় উইকেটে তাকে সঙ্গ দেন পাকিস্তানের বাবর আজম। ৮০ রানের জুটি গড়েন তারা।

কিন্তু এ জুটি ভাঙার পর নিভে যায় সিলেটের জয়ের প্রদ্বীপ। ৪৬ বলে ৭১ রান করা ফ্লেচারকে ফিরিয়ে চিটাগং শিবিরে স্বস্তি ফেরান তাসকিন। বাবর আজম ৩২ বলে ৪১ রান করে আউট হন ভন জিলের বলে। এরপর সিলেটের কেউ ভালো করতে পারেননি। শেষ দিকে কাজী নুরুল হাসান সোহানের ১৬ বলে ২৮ রানের ইনিংসে পরাজয়ের ব্যবধান কমে সিলেটের। ৪০ রানের পরাজয় বরণ করে সিলেট সিক্সার্স।



তাসকিন আহমেদ ৩১ রানে নেন ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন সৌম্য ও ভন জিল।

এটি চিটাগংয়ের দ্বিতীয় জয়। ঘরের মাঠে চিটাগং আরও তিন ম্যাচ খেলবে। তিন ম্যাচে জয় পেলে শেষ চারের আশা করতে পারবে তারাও। এদিকে নবম ম্যাচে এটি সিলেটের পঞ্চম পরাজয়। এখনও শেষ চারেই আছে তারা। তবে শেষ দিকের ম্যাচগুলোতে ভালো করতে না পারলে শেষ চারে নাও থাকতে পারে সিলেট সিক্সার্স।



রাইজিংবিডি/চট্টগ্রাম/২৪ নভেম্বর ২০১৭/ইয়াসিন/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়