খেজুর রস রক্ষায় বিষ দিয়ে পাখি নিধন
পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহর উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের বাঙ্গালা গ্রামে কীটনাশক প্রয়োগ করে পাখি নিধনের অভিযোগ উঠেছে এক খেজুর গুড় ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। খেজুর গাছে দানাদার কীটনাশক দেওয়ায় সেই গাছের রস পান করার পর মারা গেছে অনেক পাখি।
এলাকাবাসী জানান, নাটোরের লালপুর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে খেজুর গুড় ব্যবসায়ী নাসির হোসেন শীত মৌসুমে বিভিন্ন স্থানে গিয়ে খেজুর গাছ মালিকদের সঙ্গে চুক্তি করে গুড় উৎপাদন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি মৌসুমের শুরুতে চাটমোহরে উপজেলার বাঙ্গালা স্কুলপাড়া গ্রামে আসেন। তিনি গ্রামের মৃত আয়েন উদ্দিন সরদারের খেজুরের বাগান চুক্তিতে নিয়ে রস সংগ্রহ করার পর গুড় উৎপাদন শুরু করেন।
গত কয়েক দিন তিনি খেজুর গাছে দানাদার কীটনাশক ব্যবহার শুরু করেছেন। গাছের রস সংগ্রহ করার স্থানে তিনি ওই কীটনাশক প্রয়োগ করেন। এতে পাখি ওই সব গাছের রস পান করার কিছুক্ষণ পর ঝিমিয়ে মাটিতে পড়ে যায়। কিছুক্ষণ পর মারা যায়। এভাবে এ পর্যন্ত অনেক পাখি মারা গেছে।
শনিবার বিকেলে বাঙ্গালা স্কুলপাড়া গ্রামের খেজুর বাগানে গিয়ে এর সত্যতা মেলে। সেখানে অন্তত ১০টি খেজুর গাছ রয়েছে। গুড় উৎপাদনকারী নাসির হোসেন এ সব গাছে এসিআই কোম্পানির কার্বোফুরান জাতীয় দানাদার কীটনাশক ‘ব্রিফার ৫ জি’ প্রয়োগ করেন। আর এই গাছের রস পান করে শালিক, বুলবুলি, সাত ভায়রা, দোয়েলসহ বহু পাখি মারা গেছে। সেখানে মৃত কয়েকটি পাখি দেখা যায়। একটি বুলবুলি পাখিকে রস পান করার পর মাটিতে পড়ে যেতে দেখেন এই প্রতিবেদক।
আলাপকালে নাসির হোসেন বলেন, ‘‘পাখি খুব জ্বালায়। গাছ কাটার পরপরই সব পাখি এসে রস খাওয়া শুরু করে। ফলে রসও কম পাওয়া যায়। পাখির জ্বালাতনের হাত থেকে বাঁচতে কীটনাশক দেওয়া হয়।’’ পাখি মারা ঠিক কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘তা তো ঠিক না। কিন্তু কি করব বলুন?’’
এলাকার ছকির উদ্দিন মোল্লা ও সোলেমান মুন্সী বলেন, পাখি মারা ভালো নয়। তারা নাসির হোসেনকে নিষেধ করেছেন পাখি মারতে। সে বলেছে আর বিষ দেবে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার অসীম কুমার জানান, পাখি নিধনের বিষয়টি তার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাইজিংবিডি/পাবনা/১০ ডিসেম্বর ২০১৭/শাহীন রহমান/বকুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন