ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বাঘাইড় মাছের উৎসব পোড়াদহ মেলায়

একে আজাদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১৬, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বাঘাইড় মাছের উৎসব পোড়াদহ মেলায়

বগুড়া প্রতিনিধি : বাঘাইড় মাছের উৎসবের মধ্য দিয়ে বগুড়ায় শেষ হলো একদিনের ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা। ২০০ বছরের ঐতিহ্য এই মেলার আকর্ষণই ছিল বিশাল আকৃতির মাছ।

মাছের খ্যাতির জন্যই প্রতিবারের মতো এবারও মেলায় ছিল  হাজারো লোকের সমাগম। প্রতি বছর মাঘের শেষ সপ্তাহে গাবতলী উপজেলার ইছামতি নদীর তীরে পোড়াদহ মেলার আয়োজন করা হয়। মেলাকে ঘিরে স্থানীয়দের বাড়ি বাড়ি ছিল জামাই-ঝিদের মিলন মেলা।

কথিত আছে প্রায় ২০০ বছর আগে মেলাস্থলে ছিল একটি বিশাল বটবৃক্ষ। সেখানে একদিন হঠাৎ এক সন্ন্যাসীর আবির্ভাব ঘটে। পরে সেখানে আশ্রম তৈরি করেন সন্ন্যাসীরা। একপর্যায়ে স্থানটি পুণ্যস্থানে পরিণত হয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে। সমাগত হন দূর-দুরান্তের ভক্তরা। কালের আবর্তে স্থানটিতে লোকজনের উপস্থিতি বাড়তেই থাকে। এভাবে গোড়াপত্তন ঘটে পোড়াদহ মেলার। এখন ধর্মের গণ্ডি পেরিয়ে সব ধর্মের মানুষের মেলবন্ধনে পরিণত হয়েছে এ মেলা।

 



মেলাটি একদিনের। তবে উৎসবের আমেজ থাকে সপ্তাহব্যাপী। নতুন জামাই-বউ ও স্বজনরা মিলে এ উৎসব করেন। বরাবরের মতো এবারও মেলার আকর্ষণ ছিল বিশাল আকৃতির বাঘাইড় মাছ। মেলায় এবার উঠেছিল সর্বোচ্চ আড়াই মণ ওজনের বিশাল আকৃতির বাঘাইড়। যার কেজি প্রতি ১২০০ টাকা। তাই এর দাম হাঁকা হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। মেলার উৎসুক মানুষদের ভিড় ছিল এই মাছকে ঘিরেই। এত বড় মাছ কারো একার পক্ষে কেনা সম্ভব না। দাম যেটাই হোক, মাছ দেখেই তৃপ্ত হচ্ছেন বলে জালালেন দর্শনার্থীরা।

ওই মাছ ব্যবসায়ী আব্দুল হাই জানালেন, প্রতি কেজি মাছ ১২০০ টাকা। পুরো মাছ তো কেউ কিনবে না। তাই ক্রেতাদের সুবিধার্থে মাছটি কেটে বিক্রি করা হয়। আবার কয়েকজন মিলে যদি মাছটি কেনে সেভাবেই বিক্রি করা হবে।

বাঘাইড় মাছ ছাড়াও মেলায় রুই, কাতলা, মৃগেল, বোয়াল, সিলভার কার্প, বিগহেড, কালবাউস, পাঙ্গাসসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ উঠেছিল। মাছের পরে মেলায় বরাবর মতো আকর্ষণ ছিল বাহারি মিষ্টান্ন সামগ্রী। মাছ আকৃতির মিষ্টি, রসগোল্লা, সন্দেশ, জিলাপি, নিমকি, তিলের নাড়ু, খই, শুকনা মিষ্টির দোকানেও ছিল ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। এছাড়াও ছিল সার্কাস ও শিশুদের বিনোদনের ব্যবস্থা। তবে ফার্নিচার দোকানগুলোতে ক্রেতার আনোগোনা ছিল একেবারেই কম।

 



মেলার ইজারাদার ও ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জানান, ২০০ বছরের পোড়াদহ মেলাটি ঐতিহ্যবাহী মেলা। প্রতি বছরের মতো এবারও ৫ শতাধিক ব্যবসায়ী তাদের পসরা নিয়ে বসেছেন।

বগুড়া গাবতলী মডেল থানার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এ-সার্কেল) ফজল-ই-খুদা পলাশ রাইজিংবিডিকে জানান, মেলায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কোনোপ্রকার বিশৃঙ্খলা যাতে না হয় সেজন্য মেলাকে ঘিরে পুলিশি নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।



রাইজিংবিডি/বগুড়া/১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/একে আজাদ/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়