ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় স্ত্রীর পাশে সমাহিত হলেন নজরুল

তানজিমুল হক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২২, ২৩ মার্চ ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় স্ত্রীর পাশে সমাহিত হলেন নজরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী : নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলামকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়েছে।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজশাহী মহানগরীর গোরহাঙ্গা কবরস্থানে স্ত্রীর কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।

নিহত নজরুল ইসলাম নগরীর উপশহর এলাকার বাসিন্দা। বিমান দুর্ঘটনায় তার স্ত্রী আক্তারা বেগমও নিহত হন। মরদেহ দেশে আসার পর গত মঙ্গলবার আক্তারা বেগমকে দাফন করা হয়। তবে মরদেহ শনাক্তে জটিলতার কারণে নেপাল থেকে নজরুল ইসলামের মরদেহ আসে বৃহস্পতিবার বিকেলে।

এরপর মরদেহ প্রথমে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলায় গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। শুক্রবার সকাল ১০টায় সেখানে নিহত নজরুল ইসলামের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মরদেহ রাজশাহী এনে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে গোরহাঙ্গা কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।

উপশহর ক্রীড়া সংঘের অনুষ্ঠিত জানাজায় রাজশাহী সদর আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকার, জেলা প্রশাসক এসএম আবদুল কাদের, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি লিয়াকত আলী লিকুসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

দুপুরে ওই মাঠে মরদেহ নেওয়ার পর শোকাবহ হয়ে ওঠে এলাকার পরিবেশ। স্বজনদের মধ্যে কান্নার রোল পড়ে। কফিন ছুঁয়ে অনেকেই শেষ বিদায় জানান মুক্তিযোদ্ধা নজরুলকে। পরে পুলিশের একটি দল তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে।

নজরুল ইসলাম ছিলেন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তার স্ত্রী আক্তারা বেগম ছিলেন রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষক। বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হাসান ইমাম ও নজরুল ইসলাম দুই বন্ধু ছিলেন।

এই দুই বন্ধু সস্ত্রীক যাচ্ছিলেন নেপাল বেড়াতে। কিন্তু নেপালের মাটিতে পা রাখার আগেই বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন তারা। হাসান ইমামের স্ত্রীর নাম বেগম হুরুন নাহার ওরফে বিলকিস বানু। এই দম্পতি নগরীর শিরোইল এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।

নেপালে বিধ্বস্ত হওয়া ইউএস-বাংলার ওই বিমানে রাজশাহীর তিন দম্পতিসহ মোট সাতজন ছিলেন। অন্য তিনজন হলেন- রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইমরানা কবির হাসি, তার স্বামী রকিবুল হাসান ও নগরীর নওদাপাড়া এলাকার গোলাম কিবরিয়ার নিউইয়র্ক প্রবাসী মেয়ে বিলকিস আরা মিতু।
 


রাজশাহীর এই সাতজনের মধ্যে বেঁচে আছেন শুধু হাসি। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা চলছে তার। হাসির হাতের কয়েকটি আঙ্গুল কেটে ফেলতে হয়েছে বলে জানা গেছে। আর নিহত হাসান, তার স্ত্রী বিলকিস ও মিতুকে দাফন করা হয়েছে ঢাকায়। রকিবুলের মরদেহ দাফন করা হয়েছে তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার বাগুটিয়া গ্রামে।

গত ১২ মার্চ নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৭১ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণকালে বিধ্বস্ত হয় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট। এতে নিহত হন বিমানের পাইলট ও কো-পাইলটসহ ৫১ জন। এদের মধ্যে ২৬ জন বাংলাদেশি। তাদের স্মরণে ১৫ মার্চ দেশে পালিত হয় রাষ্ট্রীয় শোক।

 

 

রাইজিংবিডি/রাজশাহী/২৩ মার্চ ২০১৮/তানজিমুল হক/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়