ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

শূন্যরেখা থেকে গোপনে ৫ রোহিঙ্গা ফিরে গেছে

সুজাউদ্দিন রুবেল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০০, ১৫ এপ্রিল ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শূন্যরেখা থেকে গোপনে ৫ রোহিঙ্গা ফিরে গেছে

ফিরে যাওয়া পরিবারটি

কক্সবাজার প্রতিনিধি : মিয়ানমারের রাখাইন থেকে সেই দেশের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা এক রোহিঙ্গা পরিবার স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফেরত গেছে। নাইক্ষ্যংছড়ি তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে শনিবার রাতে গোপনে আকতার আলমসহ তার পরিবারের পাঁচ সদস্য মিয়ানমারে ফেরত যান।

ওই পাঁচ রোহিঙ্গার মিয়ানমার চলে যাওয়াকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বলে দাবি তোলা হয়। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এটিকে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নয়- বলা হয়।

শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন (আরআরআরসি) কমিশনার আবুল কালাম আজাদ বলেন, গত বছরের ২৫ আগস্টের পর তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় ছয় হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয়। তারা কখনো বাংলাদেশ অংশে আসেনি। শনিবার রাতে সেখান থেকে পাঁচ সদস্যদের একটি রোহিঙ্গা পরিবার মিয়ানমারে চলে যায়।

তিনি বলেন, এটি কোনোভাবেই প্রত্যাবাসন নয়। কারণ তারা কখনোই বাংলাদেশ অংশে আসেনি। তাই এই প্রক্রিয়াকে প্রত্যাবাসন বলা যাবে না। তবে এখন দেখার বিষয় হচ্ছে, এই পাঁচ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমার সরকার ফেরত নিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিচ্ছে কি না।

মোবাইল ফোনে কথা হয় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম সরওয়ার আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, মিয়ানমারে চলে যাওয়া পাঁচ রোহিঙ্গা শূন্যরেখার  মিয়ানমারের অংশ থাকতেন। সুতরাং এটিকে কোনোভাবেই প্রত্যাবাসন বলা যাবে না।

তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থানরত রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ বলেন, আকতার আলম গোপনে তার পরিবার নিয়ে মিয়ানমার চলে গেছেন। আকতার আলম মিয়ানমারে রাখাইনের একটি এলাকায় চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। তিনি মিয়ানমারের দালাল হিসেবে কাজ করতেন। তার পরিবারের অন্যরা হলেন, আকতার আলমের স্ত্রী সাজিদা বেগম, ছেলে তারেক আজিজ, মেয়ে শাহেনা আকতার ও শওকত আরা। 

তিনি বলেন, ‘‘তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থানরত এক হাজার পরিবার রয়েছি,  আমরা কোনোভাবে আমাদের অধিকার ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত মিয়ানমারে ফিরে যাব না। যতদিন পর্যন্ত মিয়ানমার আমাদের সেদেশের নাগরিক হিসেবে মেনে না নেবে, ততদিন শূন্যরেখায় অবস্থান করব।’’

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাহামুদুল হক চৌধুরী বলেন, রাতের আঁধারে গোপনে পাঁচ সদস্যের একটি পরিবার মিয়ানমারে চলে গেছে। এটিকে কীভাবে মিয়ানমার প্রত্যাবাসন শুরু হয়েছে বলে ঘোষণা দেয়? কারণ প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে। সেখানে মিয়ানমার, বাংলাদেশ ও জাতিসংঘ সম্মিলিতভাবে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার কথা। কিন্তু মিয়ানমার গোপনে পাঁচজন রোহিঙ্গা নিয়ে প্রত্যাবাসন শুরু হয়েছে বলে যে ঘোষণা দিচ্ছে, তা আন্তর্জাতিক মহলকে দেখানোর জন্য। এটির পেছনে মিয়ানমারের গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে।


রাইজিংবিডি/কক্সবাজার/১৫ এপ্রিল ২০১৮/সুজাউদ্দিন রুবেল/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়