ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মাদকবিরোধী অভিযান

‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৭ জন নিহত

বকুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১২, ২৩ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৭ জন নিহত

ডেস্ক রিপোর্ট : দেশে চলমান মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে বিভিন্নস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সাতজন নিহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তিরা মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশ জানিয়েছে।

রাইজিংবিডির নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিনিধি এবং সংবাদদাতারা এই সংক্রান্ত খবর পাঠিয়েছেন।

ফেনী : ফেনী শহরের কালিপালে রাত ১১টার দিকে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ী মো. ফারুক (৩৫) নিহত হয়েছে। নিহত ফারুক চট্টগ্রামের চন্দনাইশ এলাকার অলি আহাম্মদের ছেলে।

পৃথক অভিযানে ৩৩ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, একটি ওয়ান শুটারগান বন্দুক, ৫ রাউন্ড কার্তুজ ও একটি ট্রাক উদ্ধার করেছে র‌্যাব।

র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক শাফায়েত জামিল ফাহিম পিপিএম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব জানতে পারে চট্টগ্রাম থেকে কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী মাদকদ্রব্য বহন করে প্রাইভেটকারযোগে ঢাকা যাচ্ছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব শহরের দাউদপোল এলাকা চেক পোস্ট স্থাপন করে। মাদক ব্যবসায়ী ফারুক চেকপোস্ট ভেঙে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় র‌্যাবের সঙ্গে গোলাগুলি হয়। এতে ঘটনাস্থলে ফারুক গুলিবিদ্ধ হয়। পরে ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের গাড়ি তল্লাশি করে র‌্যাব ২২ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, একটি ওয়ান শুটারগান বন্দুক, ১০ রাউন্ড কার্তুজ উদ্বার করা হয়।

র‌্যাব জানান, নিহত ফারুক মাদক সম্রাট হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় মামলা আছে।

দুপুরে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের মহিপালে ট্রাকে তল্লাশি করে ১১ হাজার ৬৩০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে র‌্যাব। এ সময় দুই মাদক ব্যবসায়ী মো. হাসান (২৭) ও মো.  মনির হোসেন (৩২) কে গ্রেপ্তার এবং একটি ট্রাক জব্দ করা হয়।

জামালপুর : জামালপুর শহরের ছনকান্দা বালুরঘাট পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে রাত ৩টার দিকে মাদক ব্যবসায়ী ও পুলিশের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়।

এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাদক ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন বিদুৎ (৪০) নিহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে বিদেশি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি, এক হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও ১০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়। 

সদর থানার ওসি (তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম জানায়, গোপনে সংবাদ পান শেরপুর থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ পথে নৌকাযোগে সশস্ত্র ৪/৫ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী মাদকের চালান নিয়ে জামালপুর শহরে ঢুকছে। এতে অভিযানে গেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নৌকা থেকে নেমে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি শুরু করে। আত্মরক্ষায় পাল্টা গুলি চালালে গুলিবিদ্ধ হয়ে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন বিদুৎ নিহত হয়।

এ সময় সদর থানার ওসি নাছিমুল ইসলাম আহত হলে তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মোশারফ হোসেনের বিরুদ্ধে জামালপুর থানায় ডাকাতি ও মাদকের ১৬টি মামলা রয়েছে। তিনি শহরের বগাবাইদ গ্রামের মৃত নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

রংপুর : রংপুরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে শাহিন নামের এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে।

ভোরে নগরীর হাজিরহাট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত শাহিন মিয়া হাজিরহাট মনোহর গ্রামের সহিদার রহমানের পুত্র।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মাদক ব্যবসায়ী শাহিন মিয়াকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালালে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। এ সময় পুলিশ গুলি ছুঁড়লে শাহিন নিহত হয়। ওই সময় কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি রিভলভার ও ১২৯ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে। শাহিনের বিরুদ্ধে ১১টি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানায়।

কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোক্তারুল আলম নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রংপুর ডিবির ওসি সরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশি অভিযানে ৩৬ জন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও : জেলার সদর উপজেলার ভাতারমাড়ী ফার্ম এলাকায় ভোর ৪টার দিকে  বালিয়াডাঙ্গী ও পীরগঞ্জ থানার যৌথ অভিযানে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে।

নিহত মাদক ব্যবসায়ীর নাম আলতাফুর রহমান। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি সাজেদুর রহমানসহ দুই পুলিশ।

জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পীরগঞ্জ ও বালিয়াডাঙ্গী দুই থানা পুলিশের যৌথ অভিযানের সময় মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি চালালে পুলিশ পাল্টা গুলি চালায়। এ সময় মাদক ব্যবসায়ীদের গুলিতে আহত হয়ে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি সাজেদুর রহমানসহ দুই পুলিশ কর্মকর্তা।

কুমিল্লা : কুমিল্লায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তালিকাভুক্ত এক মাদক ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম ইছা নিহত হয়েছে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে আদর্শ সদর উপজেলার গোমতী বাঁধের কাছে টিক্কার চর ব্রিজ এলাকায় বন্দুকযুদ্ধ হয়।

পুলিশ জানায়, নিহত ইছা একই উপজেলার গাজীপুর গ্রামের আবদুল জলিলের ছেলে। তিনি চিহ্নিত ও তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী। পুলিশের বিশেষ অভিযানে মঙ্গলবার বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্যানুসারে ইছার সহযোগীদের আটক করতে অভিযানে নামে পুলিশ।

কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তানভীর সালেহীন ইমনের নেতৃত্বে গভীর রাতে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের একটি দল শহরতলীর টিক্কার চর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান নেয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ইছার সহযোগী মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় আত্মরক্ষায় পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়।

উভয় পক্ষের গুলি বিনিময়ে মাদক ব্যবসায়ী ইছা গুরুতর আহত হয়। তাকে উদ্ধারের পর কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া পথে মৃত্যু হয়। নিহত নূরুল ইসলাম ইছার বিরুদ্ধে মাদক আইনে সাতটি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

কুষ্টিয়া : পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ কুমারখালীতে মাদক ব্যবসায়ী ফটিক ওরফে গাফফার (৩৭) ও ভেড়ামারায় লিটন শেখ (৪০) নিহত হয়েছে।

পুলিশের দাবি, পৃথক ঘটনায় তাদের আট সদস্য আহত হয়েছে। দুই ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ অস্ত্র, গুলি ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে।

রাত ১টার দিকে কুমারখালী উপজেলার লাহিনী পাড়ার গড়াই নদীর পাড়সংলগ্ন ব্রিজের নিচে ও ভেড়ামারা হাওয়াখালী ইটভাটার কাছে বন্দুকযুদ্ধ হয়।

কুমারখালী থানার ওসি আব্দুল খালেক জানান, মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে একদল মাদক ব্যবসায়ী লাহিনী পাড়ার গড়াই নদীর পাড়সংলগ্ন ব্রিজের নিচে অবস্থান করছে- এমন গোপন সংবাদ পেয়ে কুমারখালী থানা পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য কর গুলি ছোঁড়ে। জবাবে পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে বন্দুকযুদ্ধের এক পর্যায়ে একজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় অন্য সব মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

পুলিশ জানতে পারে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ব্যক্তি শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী ফটিক ওরফে গাফফার। তিনি পুলিশের তালিকাভুক্ত একজন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। বন্দুকযুদ্ধে পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হলে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি ও ৭০০ পিস ইয়াবা ও ৫০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে।

নিহত ফটিক ওরফে গাফফার কুমারখালী উপজলার এলেঙ্গীপাড়া গ্রামের মৃত ওসমান গনীর ছেলে।

ভেড়ামারা মডেল থানার ওসি আমিনুর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে ভেড়ামারা হাওয়াখালী ইটভাটার কাছে একদল মাদক ব্যবসায়ী মাদক বেচাকেনা করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের টহল দল সেখানে অভিযান চালালে পুলিশকে লক্ষ্য করে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি চালায়। পুলিশও আত্মরক্ষায় পাল্টা গুলি চালায়। এ সময় সবাই পালিয়ে গেলেও মাদক ব্যবসায়ী লিটন শেখ গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে ভেড়ামারা হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি, তিন রাউন্ড গুলি, ৫০০ পিস ইয়াবা ও ২০০  গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করেছে। বন্দুকযুদ্ধে পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়।

নিহত লিটন শেখ উপজেলার নওদাপাড়া এলাকার মৃত গোলবার শেখের ছেলে। তিনি ভেড়ামারার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে একাধিক মাদক ও চোরাকারবারির মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানায়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ মে ২০১৮/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়