ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মওদুদের অভিযোগ ভিত্তিহীন, তার ক্ষমা চাওয়া উচিত

রেজাউল করিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০৪, ১৭ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মওদুদের অভিযোগ ভিত্তিহীন, তার ক্ষমা চাওয়া উচিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম : ‘নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে’ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের এমন অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি।

রোববার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে ড. হাছান মাহমুদ এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, মওদুদ আহমদ আগে থেকেই বিতর্কিত ব্যক্তি। তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে, এমন কথা বলে তিনি গল্প তৈরি করেছেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, গতকাল ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে কিছু মনগড়া অভিযোগ করে বিষোদগার করেছেন। মওদুদ আহমদের ভালো পারদর্শিতা আছে সুন্দর করে গুছিয়ে মিথ্যে বলার। সে কারণেই তিনি সব স্বৈরাচার সরকারের খুব প্রিয় মানুষ ছিলেন। তিনি জিয়াউর রহমানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, এরশাদ সাহেবেরও প্রধানমন্ত্রী এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এরশাদ সাহেবের পতনের মুহূর্তে এরশাদ তার হাতেই রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু যখন রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন তখন দুর্ণীতির অভিযোগে তার শাস্তি হয়েছিল। কিন্তু পল্লীকবি জসিমউদদীনের মেয়ের জামাতা হিসেবে পল্লীকবির অনুরোধে তার শাস্তি মওকুফ করা হয়েছিল। তিনি বহু আগে থেকেই বিতর্কিত মানুষ। তার ভূমিকা তার দলের মধ্যেই প্রশ্নবিদ্ধ। তার আচরণ তার দলের নেতারাই বলেন রহস্যজনক।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ব্যারিস্টার মওদুদের নিজ এলাকা কোম্পানিগঞ্জের নাজিরপুর ইউনিয়নে মানিকপুর গ্রামে তার যে বাড়ি সেই বাড়িতে তার সামনেই তার দলের নেতারা মারামারি করেছে। যখন একজন নেতার সামনে তার দলের নেতারা মারামারি করে তখন তার ওপর যদি কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা হয়। আর সেই দোষ সরকারের ওপর চাপানোর পারদর্শিতা রয়েছে বিএনপির। এর আগেও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি নিজেরা মারামারি করে তাদের সমাবেশ পণ্ড করেছে। সেই দোষও সরকারের ওপর চাপিয়ে দেওয়া চেষ্টা হয়েছে।

এমন অবস্থায় মওদুদের নিজ এলাকায় বিএনপি যেখানে বহুধা বিভক্ত এবং দলের নেতারা যখন মওদুদের সামনেই মারামারি করে তাই আইন-শৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে মওদুদ আহমদকে বাড়িতে অবস্থান করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। সেটিকে মওদুদ আহমদ যেভাবে কাহিনী সাজালেন তাতে মনে হয় তিনি রাজনীতির পাশাপাশি ছোটগল্পও লিখতে পারেন। ইতিপূর্বে তিনি বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে যে পরামর্শ দিয়েছেন তাতে মনে হয় তিনি ব্যারিস্টারের পাশাপাশি ডাক্তারিও জানেন।

ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, মওদুদ আহমদ অনেক বড় ব্যারিস্টার। তার মতো এত বড় ব্যারিস্টার ভবিষ্যতেও হয় কি-না সন্দেহ। কারণ তিনি গুলশানের যে বাড়িটি আইনি লড়াইয়ে হেরে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন সেই বাড়িটি একজন অস্ট্রিয়ান মহিলার নামে ছিল। এই মহিলার নাম ইন জে মারিয়া। ইন জে মারিয়ার মৃত্যুর তিন মাস পরের সই করা পাওয়ার অব অ্যাটর্নি সাবমিট করে ব্যারিস্টার মওদুদ ওই বাড়িটির মালিক হয়েছিলেন। যে ব্যারিস্টার মৃত্যুর পর কারো পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিতে পারেন তার মতো বড় ব্যারিস্টার অতীতেও ছিল না, ভবিষ্যতেও হবে না। মওদুদ আহমদ একজন বিতর্কিত মানুষ, সেই বিতর্ক থেকে মুখ ফেরানোর জন্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে কিছু মনগড়া অভিযোগ উপস্থাপন করেছেন।

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে উদ্দেশ করে বলেন ‘এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ উপস্থাপন করে কোনো লাভ হবে না। বরং সারাজীবন আপনার বিতর্কিত রাজনীতির জন্য, রাজনীতির মাঠে বিতর্কিত ভূমিকা সেজন্য আপনি জনগণের কাছে ক্ষমা চান। ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে কোনো মনগড়া অভিযোগ করবেন না।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক রাষ্ট্রদূত নুরুল আলম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মুহিবুল আলম চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রমুখ।

 

 

 

রাইজিংবিডি/চট্টগ্রাম/১৭ জুন ২০১৮/রেজাউল/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়