ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

মা ও ২ মেয়েকে হত্যার পরে বস্তায় ভরে ফেলা হয় পুকুরে

হাসান উল রাকিব || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১৮, ২৪ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মা ও ২ মেয়েকে হত্যার পরে বস্তায় ভরে ফেলা হয় পুকুরে

নিজস্ব প্রতিবেদক, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সিদ্ধিরগঞ্জে স্বামীর দ্বিতীয় সংসারের বিরোধের জেরে প্রথম স্ত্রী ও তার দুই মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যার পর তাদের লাশ বস্তায় ভরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল পুকুরে। ওই কিলিং মিশনে ছিল স্বামী মাসুদ দেওয়ান, দ্বিতীয় স্ত্রী শোভা আক্তার ও চাচাতো শ্যালক সবুজ ওরফে সোহেল।

রোববার বিকেলে কিলিং মিশনে থাকা গ্রেপ্তারকৃত সবুজ ওরফে সোহেল নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমামের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানববন্দি দিয়েছে। এছাড়া অপর ঘাতক স্বামী মাসুদ দেওয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হলে আদালত শুনানির জন্য সোমবার তারিখ নির্ধারণ করে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার দক্ষিণ শাশাআলী এলাকার খলিলুর রহমানের ছেলে মাসুদ দেওয়ান ও চাচাতো শ্যালক নেত্রকোনার খালিয়াজুরী থানার ফতুয়া এলাকার স্বপন মিয়ার ছেলে সবুজ ওরফে সোহেল।

নিহতরা হলো, মাসুদের স্ত্রী নোয়াখালীর সেনবাগের পদুয়া এলাকার আঞ্জুবী আক্তার (২৮) ও তার দুই মেয়ে ৭ বছর বয়সী মাঈদা আক্তার ও ১৫ মাস বয়সী মাহি।

রোববার বিকেল সাড়ে ৫টায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক বিবরণ জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-অঞ্চল) মো. শরফুদ্দিন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস সাত্তার, পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম, পরিদর্শক (অপারেশন) আজিজুল হক প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সিদ্ধিরগঞ্জের আটি হাউজিং মসজিদ গলির কবির মিয়ার বাড়ির ছয়তলার পশ্চিম-দক্ষিণ ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেয় মাসুদ দেওয়ান। সে তার প্রথম স্ত্রী আঞ্জুবী আক্তারের অমতে তারই বান্ধবী শোভা আক্তারকে বিয়ে করে। এ বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগেই ছিল। ওই ঝগড়ার জের ধরে সে তার দ্বিতীয় স্ত্রী শোভা আক্তার ও চাচাতো শ্যালক সবুজ ওরফে সোহেলকে সঙ্গে নিয়ে প্রথম স্ত্রী আঞ্জুবী আক্তারকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ওই পরিকল্পনা মোতাবেক গত ৯ জুন তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও চাচাতো শ্যালক মিলে প্রথমে আঞ্জুবী আক্তারকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে বড় মেয়ে মাঈদা ও ছোট মেয়ে মাহিকেও শ্বাসরোধে হত্যা করে। এরপর তাদের লাশ বস্তায় ফেলে সিদ্ধিরগঞ্জের একটি নির্জন স্থানে ও একটি পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়।

গত ১১ জুন বিকেল ৫টায় সিদ্ধিরগঞ্জের ভাঙ্গারপুল এলাকার ডিএনডি ইরিগেশন খালের পাশ থেকে ড্রামের মধ্যে আঞ্জুবী আক্তারের (২৮) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর গত ১৬ জুন ঈদের দিন আটি হাউজিংয়ের আলী মোহাম্মদের মাছের খামারে ভাসতে থাকা বস্তাবন্দি অবস্থায় ১৫ মাস বয়সী শিশু মাহির লাশ উদ্ধার করা হয়। ১৮ জুন আটি এলাকার একই খামারে ভাসতে থাকা একটি ব্যাগ থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় শিশু মাহিদার (৭) লাশ উদ্ধার করা হয়।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-অঞ্চল) মো. শরফুদ্দিন জানান, ঘাতক সবুজ ওরফে সোহেল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। স্বামী মাসুদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। অপর ঘাতক দ্বিতীয় স্ত্রী শোভাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।




রাইজিংবিডি/নারায়ণগঞ্জ/২৪ জুন ২০১৮/রাকিব/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়