ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

দখলমুক্ত জায়গা সুরক্ষায় কঠোর উদ্যোগ

রেজাউল করিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দখলমুক্ত জায়গা সুরক্ষায় কঠোর উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তীরের অবৈধ দখলে থাকা প্রায় আড়াইশ স্থাপনা উচ্ছেদের পর দখলমুক্ত জায়গা পুনরায় যাতে বেদখল হতে না পারে সে ব্যাপারে কঠোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।

গত এক সপ্তাহের অভিযানে চট্টগ্রামের বারিক বিল্ডিং মোড় থেকে সদরঘাট পর্যন্ত কর্ণফুলী তীর এলাকায় প্রায় ১০ একরের মতো জায়গা দখলমুক্ত করে উদ্ধারের পর সেসব জায়গায় স্থায়ী সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করছে প্রশাসন। এর পাশাপাশি সতর্কতামূলক ব্যানার সাইন বোর্ডও টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে।

উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্বদানকারী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিট্রেট তাহমিলুর রহমান জানান, ভূমিমন্ত্রীর কঠোর অবস্থানের কারণে জেলা প্রশাসন প্রথম ধাপের অভিযানে কর্ণফুলী তীরের প্রায় ১০ একরের মতো জায়গা দখলমুক্ত করতে পেরেছে। শিগগিরই দ্বিতীয় ধাপের অভিযান শুরু হবে। এর মধ্যে যেসব জায়গা উদ্ধার হয়েছে সেসব জায়গায় যাতে পুনরায় কেউ দখলের চেষ্টা করতে না পারে সে ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে রয়েছে জেলা প্রশাসন। সরকারের তথা জেলা প্রশাসনের ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত জায়গা হিসেবে এসব জায়গায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নির্দেশনা, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, সিডিএ, বন্দর কর্তৃপক্ষ, পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সার্বিক সহায়তায় কর্ণফুলীর তীর রক্ষায় বড় একটি উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয়েছে। এই সাফল্য ধরে রাখতে কাজ করছে প্রশাসন। এখন উচ্ছেদ অভিযানের ধবংসস্তুপের আবর্জনা পরিষ্কার করা হচ্ছে। একইসঙ্গে নতুন করে বসানো হচ্ছে সীমানা পিলার, নির্মাণ করা হচ্ছে সুরক্ষা প্রাচীর।
 


এই উচ্ছেদ অভিযানের ফলে কর্ণফুলীর সঙ্গে চট্টগ্রাম নগরীর যুক্ত ৫টি খালের মুখ দখলমুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়ে ম্যাজিট্রেট তাহমিলুর রহমান জানান, এর ফলে বৃষ্টির সময় পানি দ্রুত এসব খাল দিয়ে নদীতে চলে যাবে। ফলে নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন হবে।

প্রসঙ্গত, কর্ণফুলী নদী রক্ষায় আদালতের নির্দেশের পর ২০১৪ সালে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কর্ণফুলী তীরের সীমানা নির্ধারণের কাজ শুরু করে। নগরীর পতেঙ্গা থানার নেভাল অ্যাকাডেমিসংলগ্ন নদীর মোহনা থেকে চাঁন্দগাও থানার মোহরা এলাকা পর্যন্ত অংশে নদী তীরের অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে ২০১৫ সালে জরিপের কাজ শেষ করা হয়। এই জরিপে নদীর দুই তীরে প্রায় আড়াই হাজার অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে জেলা প্রশাসন।

প্রতিবেদনটি ২০১৫ সালের ৯ নভেম্বর উচ্চ আদালতে দাখিল করা হয়। এরপর ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ কর্ণফুলীর দুই তীরে গড়ে ওঠা স্থাপনা সরাতে ৯০ দিনের সময় বেধে দেন।

২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এক কোটি ২০ লাখ টাকা অর্থ বরাদ্দ চেয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। কিন্তু তৎকালীন সময়ে অর্থ বরাদ্দ অনুমোদন না হওয়ায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়নি। সর্বশেষ নতুন সরকারের ভূমিমন্ত্রী দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র এক মাসের মধ্যেই অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি নিশ্চিত করে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেন। তার নির্দেশেই গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় প্রথম ধাপের উচ্ছেদ অভিযান।




রাইজিংবিডি/চট্টগ্রাম/১৩ ফেব্রুয়ারি/ ২০১৯/রেজাউল/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়