ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

মাঠে বসেই ডিজিটাল সেবা পাচ্ছেন কৃষক

কাঞ্চন কুমার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:০৫, ২০ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মাঠে বসেই ডিজিটাল সেবা পাচ্ছেন কৃষক

কুষ্টিয়া সংবাদদাতা: মাঠে বসেই ডিজিটাল সেবা পাচ্ছেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষক।

কৃষির মানোন্নয়নে, কৃষকের দোরগোড়ায় কৃষি সেবা পৌঁছে দিতে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে মিরপুর উপজেলা কৃষি অফিস। মিরপুরের কৃষির উন্নয়নে ডিজিটাল পরামর্শ পদ্ধতি ব্যবহার করে ব্যপক সাড়া ফেলেছে। কৃষকদের সেবা দিয়ে ইতিমধ্যেই আস্থা অর্জন করেছে এই অফিসের কর্মকর্তারা।

ফসলের রোগবালাই, কোন সময়ে কোন মাসে ফসলের জন্য কি করনীয়- তাৎক্ষণিক পরামর্শ কৃষকদের মাঝে পৌঁছে খোলা হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেইজ। এই পেইজে কৃষির সকল তথ্য কৃষকের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে খুব সহজেই।

প্রতিনিয়িত কৃষি সচেতনতা বৃদ্ধিতে উপজেলা এবং ইউনিয়ন কৃষক তথ্য ও পরামর্শ কেন্দ্রে কর্মরত কর্মকর্তারা কৃষকদের ডিজিটাল সেবার মাধ্যমে পরামর্শ দিচ্ছে।

উপজেলার আমলা ইউনিয়নের শাহাপুর মাঠে গিয়ে দেখা যায়, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো: সাদ্দাম হোসেন বেশ কয়েকজন কৃষককে ডিজিটাল ট্যাবের মাধ্যমে কৃষি সেবা দিচ্ছেন। সেখানে তিনি বোরো জমিতে যাতে ব্লাস্ট রোগের আক্রমন না হয় এবং হলে কি কি লক্ষণ দেখা দিতে পারে- তার প্রতিকার সম্পর্কে কৃষকদের আগাম সতর্কতা দিচ্ছেন। সেই সাথে কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন অ্যাপস এর মাধ্যমে ফসল ব্যবস্থাপনা, রোগ, পোকা-মাকড় সম্পর্কেও ধারণা দিচ্ছেন তিনি।

দেখা যায়, মাঠে বসেই ডিজিটাল অ্যাপস এর মাধ্যমে নিজের ধানের জমিতে কোনো রোগ দেখা দিয়েছে কিনা- তা মিলিয়ে দেখছেন শাহাপুর এলাকার কৃষক খাইরুল মালিথা।

খাইরুল বলেন, ’মোবাইলে ধানের চাষ করা, পোকা লেগেছে কিনা, রোগ হয়েছে কিনা- এসব দেখা যায়। এই ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মোবাইল এর মাধ্যমে আমাদের শেখালেন ধানচাষে কোন সময় কি করতে হবে।’



কৃষক সাইফুল বললেন, ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল হইছে, তাই আমরাও এখন ডিজিটাল। কৃষি অফিসের লোকজন আমাদের মাঠে এসেই পরামর্শ দিচ্ছে। আমরাও আমাদের যে কোন অসুবিধা হলেই কৃষি অফিসে ফোন দিয়ে সমাধান পাই।’

কৃষক মনোয়ার মন্ডল বলেন, ‘আমার বেগুনের জমিতে পোকার আক্রমন দেখা দিয়েছিল। আমি কৃষি অফিসে গিয়ে তাদের বিষয়টি বলি তারপর তাদের পরামর্শ নিয়ে ভালো উপকার পেয়েছি।’

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো: সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন ফসল চাষের ক্ষেত্রে কৃষকদের যে কোন সমস্যা দেখা দিলে আমরা তাৎক্ষনিক তার সমাধান করতে চেষ্টা করি। নিরাপদ উপায়ে চাষাবাদ এবং আধুনিক চাষাবাদের পরামর্শ দেই। কৃষি বিভাগ বর্তমানে কৃষকদের দোরগোড়ায় কৃষি সেবা পৌঁছে দিতে জোর দিয়েছে। কৃষি কাজের সুবিধার জন্য বিভিন্ন অ্যাপস এর মাধ্যমে আমরা কৃষকের কাছে সেবা পৌঁছে দিচ্ছি।’

মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রমেশ চন্দ্র ঘোষ জানান, ‘বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কৃষি বিভাগও এগিয়ে রয়েছে। মিরপুর উপজেলায় ২৩টি ডিজিটাল ট্যাবে বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে এবং উপজেলার সকল উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক কৃষি সেবা নিশ্চিত করছি। এছাড়াও কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ার জন্য উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষক তথ্য ও পরামর্শ কেন্দ্রের মাধ্যমে আমরা সেবা দিচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘বতর্মানে অনেক কৃষক স্মার্টফোন ব্যবহার করছে। আমরা তাদের কাছে কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন অ্যাপস পৌঁছে দিচ্ছি, সেই সাথে ফেসবুক পেইজের মাধ্যমেও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সাথে মতবিনিময় এবং মাঠে গিয়ে কৃষকদের সেবা দেওয়ার দিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। উপজেলায় কর্মরত প্রতিটি উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাসহ সকলেই মাঠে গিয়ে হাতে কলমেও কৃষকদের আধুনিক চাষাবাদ সম্পর্কে জ্ঞান দেওয়া অব্যাহত রেখেছেন।’



রাইজিংবিডি/কুষ্টিয়া/২০ এপ্রিল ২০১৯/কাঞ্চন কুমার/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়