ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মৃত্যুতে মুক্তি মিলল ধর্ষণ যন্ত্রণার

শাহরিয়ার সিফাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৪, ১৭ জুন ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মৃত্যুতে মুক্তি মিলল ধর্ষণ যন্ত্রণার

নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল : ২০১৮ সালের ৯ জুন। টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার মাহবুব নামের বিকৃত রুচির এক যুবকের নজরে পড়ে আছিয়া নামের ৭ বছরের এক শিশু। পরে মাহবুবের ধর্ষণের শিকার হয় শিশুটি। দুঃসহ সেই যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে দীর্ঘ এক বছর পর মৃত্যুর কোলে ঢলে পরল সে।

সোমবার ভোর রাতে রাজধানী ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরপারে পাড়ি জমায় ৮ বছরের ফুটফুটে শিশুটি। তার আগে গত ১ বছর ধরে তাকে সহ্য করতে হয় ধর্ষণের ফলে গোপনাঙ্গে ইনফেকশনের যন্ত্রণা।

২০১৮ সালে ৯ জুন কালিহাতী উপজেলার মালতী গ্রামের দিনমুজুর আশরাফ আলীর মেয়ে আছিয়াকে ধর্ষণ করে একই এলাকার তায়েজ আলীর ছেলে বখাটে মাহবুব (১৫)। এর আগে প্রলোভন দেখিয়ে আছিয়াকে ডেকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায় মাহবুব। পরে তাকে ধর্ষণ করে।

এতে আছিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে এলেঙ্গার একটি বেসরকারি হাসপাতালে, পরে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর অবস্থার আরো অবনতি হলে তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়।

সেদিনই আছিয়ার বাবা আশরাফ আলী বাদী হয়ে মাহবুবকে আসামি করে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। ঘটনা ধামাচাপা দিতে এলাকার প্রভাবশালী মহল চেষ্টা করে বলে অভিযোগ করেছে ধর্ষিতার পরিবার। পরে তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৩০ আগস্ট মামলার চার্জশিট প্রদান করে পুলিশ। দায়েরকৃত মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর জামিনে বেরিয়ে আসে।

সোমবার দুপুরে আছিয়ার মরদেহ ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আনার পর সেখানে হৃদয় বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। শিশুর লাশ এক নজর দেখার জন্য ছুটে আসে এলাকার শত শত মানুষ।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত শিশু ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেলের অফিসার (পিও) বায়েজিদ বলেন, ধর্ষণের ফলে শিশুটির রক্তক্ষরণ হয়। তার মলদ্বার ও যৌনাঙ্গ ছিঁড়ে যায়। এতে আটটি সেলাই করার পরও তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে স্থানীয়দের আর্থিক সহায়তায় তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় এক বছর ঢাকায় অবস্থান করে চিকিৎসা নিচ্ছিল সে। তিনি আরো বলেন, এ ধরনের আক্রান্তরা মৃত্যু ঝুঁকিতে থাকে।

কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন জানান, ধর্ষণের ঘটনায় মাহবুবকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়েছে ও আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। পরে মামলাটি বিচারাধীন থাকায় জামিনে বের হয়ে আসে সে।



রাইজিংবিডি/টাঙ্গাইল/১৭ জুন ২০১৯/শাহরিয়ার সিফাত/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়