দক্ষিণের নদীতে ইলিশ নেই!
অলোক সাহা : ঝালকাঠি সংবাদদাতা: আশাতেই শুধু বুক বাঁধা, সারাদিন জাল ফেলেও এই ভরা মৌসুমে ২/৪টির বেশি ইলিশের দেখা পাচ্ছেন না দক্ষিণাঞ্চলের জেলেরা ।
কতই না আশা ছিল তাদের, মে মাসে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে আবার জাল নিয়ে নদীতে ছুটবেন। ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরবেন। কষ্টের দিনগুলোর পর একটু স্বচ্ছলতার মুখ দেখবে তার পরিবার। কিন্তু তা আর হলো কই? ঝালকাঠিসহ দক্ষিণাঞ্চলের অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র থেকে এবার ইলিশ যেন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
মৎস্য বিভাগের মতে, গত ১ জুন থেকে ইলিশের ভরা মৌসুম শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনও নদী থেকে জেলেরা ফিরছেন বিষন্ন মুখে। ঝালকাঠির সুগন্ধা, বিষখালী, গাবখান, মেঘনা কিংবা বরগুনা-পটুয়াখালীর সাগর মোহনা কোথাও ইলিশের হদিশ নেই।
অপরদিকে সাগরে মাছ ধরায় রয়েছে সরকারি নিষেধাজ্ঞা। জেলেরা নদীতে যাচ্ছে কিন্তু মৌসুম শুরুর দু’সপ্তাহ পার হলেও ইলিশের দেখা মিলছে না নদীর বুকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, গত মঙ্গলবার প্রায় ১৬ ঘণ্টায় দু’বার জাল ফেলে মাত্র চারটি ইলিশ পেয়েছেন জেলে অধির মালো। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ওই দুটি ইলিশের নিলামে দাম উঠে সাড়ে তিন হাজার টাকা।
তিনি জানান, গত দু’দিনে চারজন মানুষের খাওয়ার খরচই হয়েছে হাজার টাকার মতো। এখন বেশিরভাগ জেলের একই অবস্থা। ইলিশ ধরা পড়ছে না শুনে অনেক জেলে নদীতে নামছেন না। কেউ কেউ মহাজন, এনজিও’র কাছ থেকে ধারদেনা করতে শুরু করেছেন।
জেলেদের অভিযোগ, প্রভাবশালী মালিকদের কারণেই নদী এখন ইলিশ শুন্য। নিষিদ্ধ মৌসুমে যে হারে জাটকা আর মা ইলিশ ধরা হয়েছে সে কারণেই এখন আর ইলিশ মিলছে না।
মৌসুমের শুরু থেকেই মেঘনায় চলছে ইলিশের আকাল। জেলে নুরুল ইসলাম ও লতিফ রাঢ়ী জানান, জেলেরা ধার-দেনা করে দিন কাটাচ্ছেন। তবে জেলেদের আশা আগামি পূর্ণিমার ঢলে হয়তোবা ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করবে।
মৎস্য ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, গভীর সমুদ্রে সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এবং মেঘনাসহ উপকূলের নদীগুলোতে মৌসুমের শুরু থেকেই ইলিশ মিলছে না। মোকামে বর্তমানে গত বছরের তুলনায় তিন ভাগের এক ভাগ ইলিশও আসছেনা। এ কারণে দামও এখন আকাশচুম্বি।
রাইজিংবিডি/ঝালকাঠি/১৯ জুন ২০১৯/অলোক সাহা/টিপু
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন