অধ্যক্ষ লাঞ্ছিত: এখনো তদন্ত শেষ করতে পারেনি ছাত্রলীগ
রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিনকে লাঞ্ছিত এবং পুকুরে ফেলে দেয়ার ঘটনা তদন্ত করছে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগ। এ জন্য একটি কমিটি গঠন করে তিন দিন সময় বেধে দেয়া হয়। কিন্তু কমিটি সাত দিনেও তদন্ত শেষ করতে পারেনি।
গত ২ নভেম্বর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে টেনেহিঁচড়ে ক্যাম্পাসের ভেতরের পুকুরের পানিতে ফেলে দেয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। পলিটেকনিক ছাত্রলীগের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম সম্পাদক কামাল হোসেন সৌরভকে নিয়মের বাইরে গিয়ে পরীক্ষায় বসার সুযোগ না দেয়ার কারণে এই কাণ্ড ঘটানো হয়।
ঘটনার দিন রাতেই রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগ জরুরি সভা করে সৌরভকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ পাঠায় কেন্দ্রে। আর সেদিনই মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি কল্যাণ কুমার জয়ের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত শেষে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কমিটিকে নির্দেশ দেয়া হয়। শনিবার বিকেল পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি কল্যাণ কুমার জয় বলেন, আরো ব্যাপকভাবে ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে। তাই তদন্ত শেষ হয়নি। প্রতিবেদন জমার বিলম্বের কারণ সভাপতিকে মৌখিকভাবে জানিয়ে রাখা হয়েছে। তবে দু’-এক দিনের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ হবে।
মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি রকি কুমার ঘোষ বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন এখনো হাতে পাননি। প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ ব্যাপারে করণীয় ঠিক করা হবে। তিনি বলেন, ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতিমধ্যে তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে কামাল হোসেন সৌরভকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। পলিটেকনিকে ছাত্রলীগের কার্যক্রমও স্থগিত রয়েছে।
ঘটনার দিনই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে কমিটির প্রধান কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম মহাপরিচালক রওনক মাহমুদের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। এর আগে কমিটির সদস্যরা সরেজমিন তদন্ত করেন। তারা ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের টর্চার সেলের সন্ধান পান। দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র জব্দ করে পুলিশের জিম্মায় দেন। তবে তদন্ত প্রতিবেদনে কী উল্লেখ করা রয়েছে এবং কী কী সুপারিশ করা হয়েছে তা জানাতে চাননি সংশ্লিষ্টরা।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে লাঞ্ছনার ঘটনায় ২ নভেম্বর রাতে অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন সাত জনের নাম উল্লেখসহ ৫৭ জনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেছেন। এ পর্যন্ত পুলিশ নয় জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে এজাহারভুক্ত মূল অভিযুক্তরা এখনো অধরা রয়েছেন।
রাজশাহী/তানজিমুল হক/বকুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন