ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মাদ্রাসা থেকে জেডিসি পরীক্ষা দিচ্ছে হিন্দু শিক্ষার্থী

পঞ্চগড় সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:২৩, ১১ নভেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মাদ্রাসা থেকে জেডিসি পরীক্ষা দিচ্ছে হিন্দু শিক্ষার্থী

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় চলমান জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বী এক শিক্ষার্থী।

এই শিক্ষার্থীর নাম নয়ন। সে উপজেলার টেপ্রিগঞ্জ ইউনিয়নের প্রামাণিক পাড়া এলাকার রতন রায়ের ছেলে। স্থানীয় শেখ বাধা রেজিয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে এবার জেডিসি পরীক্ষা দিচ্ছে। বছরের শুরুর দিকে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হয় নয়ন। চলমান জেডিসি পরীক্ষায় কুরআন মাজিদ, আরবীসহ হয়ে যাওয়া সব পরীক্ষা ভালোই হয়েছে বলেও জানায় সে।

হিন্দু হয়েও মাদ্রাসা পরীক্ষায় অংশ নেয়ায় ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

অবশ্য এ ব্যাপারে তার পরিবারেরও কোন অভিযোগ নেই । তার বাবা রতন রায় বলেন, ‘ছোট থেকেই ইসলাম ধর্মকে জানার অন্যরকম আগ্রহ আমার ছেলের। এজন্যই সে মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। আমরা পরিবার থেকে কখনো প্রতিকূলতা দেখাইনি। আমরাও চাই সে ইসলাম ধর্মকে ভালো করে জানুক।’

ওই মাদ্রাসার সুপার মাওঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রাথমিক অবস্থায় আমি জানতাম না যে, নয়ন হিন্দু সম্প্রদায়ের। কারণ, তার মাদ্রাসায় দেয়া তথ্যে নিজের নামসহ বাবা-মায়ের নামের সামনে পিছনে কোন ধর্মীয় পরিচয় ছিলনা। পরীক্ষার রেজিষ্ট্রেশনের জন্য সে টুপি পাঞ্জাবি পড়া ছবি দিয়েছিল। তাছাড়া নয়ন, রতন এরকম নাম মুসলিমদেরও আছে।’

এবিষয়ে নয়নের সাথে কথা বললে সে জানায়, ‘আমি আমার পরিচয় গোপন রাখতে চেয়েছিলাম। কারণ, আমি সনাতন ধর্মের এটা জানার পর যদি শিক্ষকরা আমাকে মাদ্রাসায় ভর্তি না করান।’

ইসলাম ধর্মকে জানার এত আগ্রহ কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে নয়ন জানায়, ‘আমি সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলে পড়েছি। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় মাদ্রাসার সহপাঠীদের সাথে প্রাইভেট পড়তাম। তখন তাদের চালচলন, পড়ালেখা এবং ধর্মীয় বিষয়গুলো দেখে ইসলাম ধর্মের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়। তখন তাদের সাথে পরামর্শ করে মাদ্রাসায় ভর্তি হই। আর আমি মাদ্রাসা থেকেই উচ্চ শিক্ষা অর্জন করতে চাই।’

মাদ্রাসায় পড়লেতো আরবী জানা আবশ্যক এমন প্রশ্নের উত্তরে সে জানায়, ‘আমি আলাদা ভাবে প্রাইভেট পড়ে আরবী বিষয় মোটামুটি আয়ত্ব করেছি।’

এবিষয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ সলিমুল্লাহ বলেন, ‘এরকম কোন তথ্য আমি পাইনি। তাই এখন কিছু বলতে পারছি না।’


পঞ্চগড়/ মো. আবু নাঈম/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়