করোনায় নারীর মৃত্যু: চিকিৎসকসহ কোয়ারেন্টাইনে ১০
নারায়ণগঞ্জের বন্দরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকসহ ১০ জনকে কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়েছে।
ওই নারীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের এক ডাক্তার, অ্যাম্বুলেন্সের চালক, হাসপাতালের স্টাফসহ ১০ জনকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে রসুলবাগ গ্রামটিকে লকডাইন করা হয়েছে, সে এলাকা থেকে যাতে কোন মানুষ বের হতে না পারে, সেজন্য প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
গত ২৯ মার্চ সন্ধ্যায় ওই নারী শ্বাস কষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন। এসময় ওই নারী হার্টের রোগী এবং শ্বাস কষ্টে ভুগছেন বলে জানান। তখন ওই নারীর এক্সরে ও রক্ত পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট দেখে করোনা সন্দেহ হলে তাকে ঢাকা হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাপাতালে পাঠানো হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে কুর্মিটোলা হাসাপাতালে নিতে বলা হয়। কিন্তু পরিবারের লোকজন তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরদিন ৩০ মার্চ ওই নারী আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। কুর্মিটোলা হাসপাতাল ওই নারীর নমুনা সংগ্রহ করে রাখে।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জের সির্ভিল সার্জন ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘আইইডিসিআরে ২ এপ্রিল ওই নারীর নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজেটিভ আসে। বিষয়টি আমাদের জানানোর পর ওই এলাকায় গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে একশ পরিবারকে লকডাউন করা হয়। ওই নারীর প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানকারী জরুরি বিভাগের ডাক্তার, ইনজেকশন দেওয়ায় নিযোজিত ব্রাদার এবং প্যাথলজি বিভাগের তিনজনসহ মোট সাতজনকে হোমকোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে একজনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। এছাড়া যে প্রাইভেট ডায়োগনেস্টিক সেন্টারে এক্সরে করা হয়েছে, সেখানকার তিনজনকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুক্লা সরকার জানিয়েছেন, ‘ওই নারীর বাড়িসহ আশেপাশের একশ পরিবারকে লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে। পরিবারগুলোর সদস্যদের কাছে ইউএনও, সিভিল সার্জন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং ওসিসহ সবার মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়েছে, যাতে অন্য কারো শরীরে করোনা রোগের উপসর্গ দেখা দিলে তাৎক্ষণিক জানাতে পারেন। এর পাশাপাশি প্রত্যেক পরিবারকে চাল ডালসহ যে কোন সামগ্রী প্রয়োজন হলে ফোন করে জানালে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সরবরাহ করা হবে।’
এদিকে লকডাউন করা বন্দরের রসুলপুর এলাকা পরিদশন শেষে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খোরশেদ আলম জানিয়েছে, এইসব পরিবারের সদস্যরা ঘরেই থাকবেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে এবং এ পরিবারের সকল রকম প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করতে তারা কাজ করবে।
হাসান উল রাকিব/সাজেদ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন