ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

তথ্য হবে অবারিত: কলিন

|| রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০৮, ১৮ নভেম্বর ২০১২   আপডেট: ০৮:৪৫, ১১ আগস্ট ২০২০
তথ্য হবে অবারিত: কলিন

রাইজিংবিডি২৪.কম:

বিশ্বজুড়ে অনলাইনে চলছে নিত্যনতুন আয়োজন। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে সবার কাছে তথ্য অবারিত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবায় অনলাইনে এগিয়ে থাকা মেডএফএক্স প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কলিন ব্যারি তার ক্যারিয়ার শুরু নিয়ে একটি লেখা প্রকাশ করেছেন।

কলিন ব্যারির নিজের গড়া প্রতিষ্ঠান মেডএফএক্স বিভিন্ন সফটওয়্যার তৈরি করেন। এর মাধ্যমে মানুষের জন্য তথ্য সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়। বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য কলিন ব্যারির কলামটি অনুবাদ করে প্রকাশ করা হলো।

আমার বড় হওয়ার গল্পটা বলতে চাই না। সেটা খুব কষ্টের। শুধু বলে রাখি, আমার মা ছিলেন হাসপাতালের নার্স। বাবা ছিলেন একটি কমিউনিটি হাসপাতালের প্রশাসক। বনিবনা না হওয়ায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়।

আমার বয়স তখন সবে দশ। মা আবার বিয়েতে বসলেন। আমার সৎ বাবা ছিলেন বায়োক্যামিস্ট। তিনি প্রতিদিন আমাকে তার অফিসে নিয়ে যেতেন। সেখানেই কম্পিউটারের সঙ্গে প্রথম পরিচয়। এ অফিসে বসে আমি সারাদিন কম্পিউটার নিয়ে খেলতাম। নিজে নিজেই বিভিন্ন বিষয়ে জানার চেষ্টা করতাম। আমি নিজেই কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ নিয়ে পড়াশোনা শুরু করলাম। সে জন্য সৎ বাবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।

হুট করেই ছোটবেলায় আরেকটি বিষয়ের ওপর আমার আগ্রহ বেড়ে গেল। তা হলো মিউজিক। আমি এতই আগ্রহী হলাম যে, গিটার এবং পিয়ানো বাজানো শিখলাম। স্কুলের একটি ব্যান্ডেও গিটার বাজাতাম।

শুরুতেই বলেছি আমার বাবা একটি কমিউনিটি হাসপাতালে কাজ করতেন। প্রশাসনের সুবিধার জন্য তিনি সফটওয়্যার নিয়েও কাজ করার কথা ভাবতেন। সে জন্য ১৯৮৪ সালে তার বাসার গ্যারেজে সফটওয়্যার কনসাল্টিং ফার্ম দিয়ে বসলেন।

আমি সেখানে বাবার সঙ্গে কাজ করতাম। আমার যখন ১৪ বছর তখনই আমি একটি সফটওয়্যার বানিয়ে ফেলি। তা ছিল রোগীর সাক্ষাৎ এবং সেবাব্যয় বিষয়ের সব ধরনের তথ্য রেকর্ডে রাখার জন্য।

স্কুল পেরিয়ে যখন কলেজে যাবো তখন ভাবলাম কলেজে গিয়ে কি হবে? আমি তখন পাগলের মত প্রোগ্রামিং করছি। নিজেদের প্রতিষ্ঠান দাঁড় করানোর চেষ্টা করছি। আমি বাবাকে বললাম, কলেজের পড়াশোনা আমার আগ্রহকে উস্কে দিতে পারবে না। বরং কমিয়ে দেবে। বাবা বুঝলেন। তারপর কাজেই মনোযোগ দিলাম।

আমি আর বাবা শুরুতে প্রতিষ্ঠানের সব কাজ করতাম। প্রতিটি সফটওয়্যার ঠিক মত কাজ করে কি না সব আমরাই দেখভাল করতাম।

আমাদের ক্লায়েন্ট বাড়তে থাকলো। লাভজনক প্রতিষ্ঠানের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠানে রূপ নিলাম। বাবা হলেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান। আমি হলাম প্রধান নির্বাহী। প্রতিষ্ঠানের নাম দেওয়া হলো (MEDfx) মেডএফএক্স।

ওটা আমাদের সেরা সময় ছিল। কারণ যুক্তরাষ্ট্র তখন স্বাস্থ্যগত সব কিছু অনলাইনের মাধ্যমে করার উদ্যোগ নিল। যে কাজ আমরা নিজ এলাকায় বহু আগেই শুরু করেছিলাম।

তাই আমরা আরো ভালো মত কাজ শুরু করলাম। আমরা প্রতিষ্ঠানটি আরো বড় করলাম। বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি তথ্যনির্ভর ওয়েবসাইটের কাজ হাতে নিলাম। যেখানে সব ডাক্তার, হাসপাতাল এবং যেকোনো ক্লিনিকের তথ্য সংরক্ষিত থাকবে।

আমরা আরো একটি ওয়েবপোর্টাল বানালাম। যেখানে ডাক্তারদের তথ্যও দেওয়া হলো। সেই সঙ্গে রোগীর যেকোনো তথ্যও দেওয়া হলো। আবার সেই রোগীকে সরকারি ডাক্তার নাকি বেসরকারি ডাক্তারেরা দেখবে সেটাও উল্লেখ করে দেওয়া হলো।

ডাক্তারের সঙ্গে রোগীর যোগাযোগ স্থাপন হলো। অন্য যেকোনো স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানও এক্ষেত্রে সুবিধা পেতে থাকলো। একটা ওয়েবসাইটে সব তথ্য একসঙ্গে পেলে আমাদের সময়ও বাঁচে। খরচের বিষয়টিও আপনি আগে থেকেই জানতে পারবেন।

আমি চেষ্টা করেছি প্রযুক্তিকে কিভাবে মানুষের উপকারে কাজে লাগানো যায়। এর চেয়ে বেশি কিছুই করিনি। স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে ভালো কাজ করেও ব্যবসা করা যায়। এ মুহুর্তে বিশ্বে তথ্য উন্মুক্ত অবারিত সেখানে মানুষের হাতে তথ্য তুলে দিতেই হবে। আমি সে কাজটিই করার চেষ্টা করছি মাত্র।

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়