গণহত্যা দিবস পালনের প্রস্তাবে আলোচনা চলছে

সংসদ প্রতিবেদক : একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর নির্মম বর্বরতায় ‘অপারেশন সার্চ লাইটে’ নিহতদের স্মরণে ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস পালনের প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হয়েছে।

শনিবার জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে বিকেল তিনটার পর সংসদে এই প্রস্তাব উত্থাপন করেন সরকারদলীয় জোটের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সংসদ সদস্য শিরীন আখতার।

এরপর প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হয়। শিরীন আখতারের পরই আলোচনায় অংশ নেন সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। সংসদ নেতা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা নিয়ে সংসদের ভিডিও চিত্র প্রদর্শনের জন্য স্পিকারের অনুমতি নেন। এরপর ২৫ মার্চ গণহত্যা নিয়ে ভিডিও চিত্র প্রদর্শনী শুরু হয়।

অধিবেশনের শুরুতে সংসদীয় কার্যপ্রণালী-বিধি ১৪৭ তুলে ধরে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, সংসদের অভিমত এই যে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে বর্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যাকে স্মরণ করে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস ঘোষণা করা হোক এবং আন্তর্জাতিকভাবে এ দিবসের স্বীকৃতি আদায়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হোক।

শিরীন আখতার প্রস্তাব উত্থাপন করে বলেন, বাংলাদেশ হঠাৎ কুড়িয়ে পাওয়া কোনো খেলনা নয়। আন্দোলন সংগ্রামের ধারায় এ দেশের জন্ম। তাই ২৫ মার্চ দিনটি জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে ঘোষণা করার জন্য প্রস্তাব উত্থাপন করছি।

তিনি আরো বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, আজকের সুসভ্য বিশ্বসমাজ ও বিশ্বমানবতার অগ্রযাত্রার স্বার্থে অন্তত একটি দিন গণহত্যার মতো পৈশাচিকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জন্য নির্ধারিত থাকা প্রয়োজন। জনগণেরও আজ তা অন্তরের দাবি। ইতিমধ্যে মন্ত্রী শাজাহান খানের নেতৃত্বে ‘আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলন’, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিসহ বেশকিছু সংগঠন নানা কর্মসূচির মাধ্যমে এই দাবি করে আসছে। আমার জানা মতে তারা স্পিকার সমীপেও পত্র প্রেরণ করেছে। এ সকল বিবেচনায় গণহত্যার নির্মম শিকার বাঙালি ও বিশ্বের সকল হতভাগ্য মানুষের পক্ষ থেকে সংসদে এই প্রস্তাব পেশ করছি- ২৫ মার্চ দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে  ঘোষণা করা হোক।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে বর্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যাকে স্মরণ করে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস ঘোষণা করা হোক এবং আন্তর্জাতিকভাবে এই দিবসের স্বীকৃতি আদায়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হোক।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সংসদে এক অনির্ধারিত আলোচনায় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর নির্মমতার কথা স্মরণ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান। ওই দিন সংসদে এ বিষয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন সরকারদলীয় সাংসদ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাপরিষদ সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১১ মার্চ ২০১৭/নৃপেন/সাইফ