ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

বর্ষবরণে প্রস্তুত চারুকলা

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:১৫, ১৩ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বর্ষবরণে প্রস্তুত চারুকলা

ছবি : শাহীন ভূইয়া

আবু বকর ইয়ামিন : রাত পোহালেই বাঙালির সার্বজনীন উৎসব পয়লা বৈশাখ। বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে এবার প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হচ্ছে মঙ্গল শোভাযাত্রার। এবার এর আওতা ও আঙ্গিকে আনা হচ্ছে বৈচিত্র্য। ইতিমধ্যে বর্ষবরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

এবার মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ঘিরে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হচ্ছে রমনা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। সিসিটিভির মনিটরিং থাকবে চারুকলা ও টিএসসিসহ গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর এলাকাগুলো।

এদিকে বাংলা নতুন বছরকে বরণ করতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। শিল্পীরা তুলির আঁচড়ে রাঙিয়ে তুলছেন মাটির সরা, দেয়াল, মুখোশ ও ব্যানার। বর্ষবরণে এখন সাজ সাজ রব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। চারুকলা অনুষদে চলছে মঙ্গল শোভাযাত্রার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। নতুন বছরকে বরণ করতে পুরোদমে কাজ করে যাচ্ছেন ওই অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। শাহবাগে পা রাখলেই বোঝা যাচ্ছে সামনেই বড় উৎসব। নববর্ষকে বরণ করে নেওয়ার জন্য প্রকৃতিও যেন জারুল আর কৃষ্ণচূড়ায় নিজেকে সাজিয়ে নিয়েছে সেখানে। নানা রঙে রাঙানো হয়েছে চারুকলার দেয়ালগুলোকে।

 



চারুকলার পথে পা বাড়ালেই দেখা যাচ্ছে রংতুলি হাতে প্রাচীর রাঙানোর কাজ চলছে। প্রাচীরগুলোকে দেশীয় ঐতিহ্যবাহী নকশায় রাঙ্গিয়ে তুলছে শিক্ষার্থীরা।

চারুকলায় মঙ্গল শোভাত্রার প্রস্তুতি দেখতে এসেছেন দর্শনার্থীরা। চারুকলার বাইরেও রয়েছে উৎসবের আমেজ। ঘুরতে এসে চারুকলা শিক্ষার্থীদের তৈরি লোকজ জিনিসপত্র কিনে নিয়ে যাচ্ছেন অনেকেই। চারুকলার দেয়ালে দেয়ালে রঙের তুলিতে আঁকা হয়েছে আলপনা। মঙ্গল শোভাযাত্রা বাঙালির বর্ষবরণে এনেছে নতুন মাত্রা।

বৃহস্পতিবার চারুকলা অনুষদের ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা। ব্যাগ তল্লাশি, নিজের পরিচয় দিয়ে প্রবেশ করতে হচ্ছে সবাইকে। চারুকলা অনুষদের ভেতরে প্রবেশ করতেই প্রথমেই দেখা যায় সাজিয়ে রাখা সারি সারি ছবি এবং কাগজের তৈরি কৃত্রিম মাছ-পাখিসহ নানা কারুকার্যের দিকে। সাজানো হয়েছে নববর্ষের কার্ড। পটচিত্র সাজিয়ে রাখা হয়েছে এক পাশের দেয়ালে। চোখ ধাঁধানো রঙ্গে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নানান নকশা। বৈচিত্র্যময় এই জিনিসগুলো হতে পারে নববর্ষের উপহার। অনেকে ঘরের আসবাব হিসেবে আবার অনেকে নিজের প্রিয়জনকে উপহার হিসেবে দেওয়ার জন্য কিনে নিচ্ছেন শিক্ষার্থীদের তৈরি এসব কারুকার্য।

চারুকলার ভেতরে প্রবেশ করেই দেখা যায় চারিদিকে শুধু রঙ আর রঙ। রঙ এর সঙ্গে রঙ মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে নতুন কোনো রঙ। কিংবা কাজ করতে করতে শেষ হয়ে যাওয়া রঙ এর বাটিতে আবারও গুলিয়ে নেয়া হচ্ছে রঙ। এই গরমেও দিন রাত দলবেঁধে আনন্দের সঙ্গে নিরলস কাজ করছেন চারুকলার শিক্ষার্থীরা। নিজেদের স্মৃতি রোমান্থন করতে বর্তমান শিক্ষর্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন প্রাক্তনরাও।

 



মঙ্গল শোভাযাত্রার মূল আকর্ষণ হলো মুখোশ। মাটির ছাঁচে কাগজ পেস্টিং করে তৈরি করা মুখোশের আকৃতিগুলোর কিছু শুকানো হচ্ছে আবার কিছু রঙ করা হচ্ছে। বাঁশের কঞ্চি দিয়ে ফ্রেম তৈরি করে পেপার পেস্টিং করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রতিকৃতিতে। চারুকলার ভেতরের মাঠে চলছে দেশীয় মাটির এবং কাঠের পুতুলের নকশার আদলে বড় প্রতিকৃতি তৈরির কাজ। বাঁশের কঞ্চিগুলোকে দড়ি দিয়ে বেঁধে তার ওপর কাগজ বসানো হচ্ছে। পাশাপাশি চলচে রঙ করার কাজও।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ এপ্রিল ২০১৭/ইয়ামিন/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ