ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

রমজানকে সামনে রেখে ভোগ্যপণ্যের মজুদ বাড়ছে

রেজাউল করিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:০৫, ১৮ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রমজানকে সামনে রেখে ভোগ্যপণ্যের মজুদ বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম : দেশের সবচেয়ে বড় ভোগ্যপণ্যের বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে আসন্ন রমজানকে ঘিরে ছোলা, চিনি ও ভোজ্যতেলের মজুদ বাড়ছে।

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ব্যাপকভাবে আমদানি হচ্ছে ছোলা, মটর, চিনি, খেজুরসহ অন্যান্য ভোগ্যপণ্য।এবার আমাদানিতে খরচ বৃদ্ধি না পাওয়ায় এবং দেশের বাজারে চাহিদার বিপরীতে পর্যাপ্ত মজুদ থাকায় রমজানে ছোলা, চিনি, ডাল, মটর আর ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা নেই বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

খাতুনগঞ্জের ভোগ্যপণ্যের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোজার মাসকে সামনে রেখে বাজারে রমজানের প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের আমদানি ও মজুদ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আমদানি হচ্ছে ছোলা, মটর, ডাল, ভোজ্য তেল, চিনি, খেজুর ও পেঁয়াজ।

চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় ছোলা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান স্মাইল ফুড প্রোডাক্টসের কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ রাইজিংবিডিকে জানান, গত ৩ মাসে ছোলা আমদানিতে শীর্ষে রয়েছে স্মাইল ফুড। গতবছরেও আমদানিকৃত ছোলার প্রায় এক চতুর্থাংশ আমদানি করে এই প্রতিষ্ঠান। এবারও রমজানকে সামনে রেখে কয়েকটি জাহাজে ছোলা আমদানি হয়েছে অস্ট্রেলিয়া থেকে। চাহিদার তুলনায় এবার ছোলার আমদানি অনেক বেশি হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়া ছাড়াও মিয়ানমার থেকেও ছোলা আমদানি করছে আরো কয়েকটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে কয়েকটি চালানে কার্গোবোট ভর্তি ছোলা টেকনাফ বন্দরে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে। পাইপলাইনে রয়েছে আরো কয়েকটি ছোলার চালান। ছোলার পাশাপাশি চট্টগ্রামে চিনির আমদানিও বৃদ্ধি পেয়েছে।

চট্টগ্রাম অঞ্চলে চিনির চাহিদা পূরণ করে প্রধানত এস আলম সুগার রিফাইনারি। গত কয়েক মাস ধরে চিনি আমদানি কমে এলেও এখন বন্দরে একসঙ্গে চারটি জাহাজ থেকে অপরিশোধিত চিনি খালাস হচ্ছে। এই চারটি জাহাজে চিনি আনা হয়েছে এক লাখ ৮০ হাজার টন। এস আলমসহ কয়েকটি চিনি রিফাইনারি কারখানা এই চিনি আমদানি করেছেন। এর পাশাপাশি অশোধিত ভোজ্যতেলও খালাস হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরে একটি জাহাজে রয়েছে ১৮ হাজার টন ভোজ্যতেল।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস ও বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, চিনি, ছোলা খেজুরসহ রমজানে চাহিদা বৃদ্ধি পায় এমন প্রয়োজনীয় সব পণ্য আমদানি হচ্ছে প্রচুর। চট্টগ্রামকেন্দ্রীক এস আলম গ্রুপ, বিএসএম গ্রুপ, সিটি গ্রুপ, আবুল খায়ের গ্রুপ, আবদুল মোনেম লি.সহ বিভিন্ন গ্রুপ রমজানে বাজার ধরতে অত্যাবশ্যকীয় বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য আমদানি করেছে।

খাতুনগঞ্জের ভোগ্যপণ্য ব্যবসায়ী আবদুল মান্নান চৌধুরী জানান, এবারের রমজানে কোনো পণ্যের সংকট হবে না।পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকবে। দাম বৃদ্ধিরও তেমন আশঙ্কা নেই। রমজানের জন্য ভোগ্যপণ্যের আমদানি ও মজুদ মোটামুটি শেষ পর্যায়ে। তবে রমজানের আগ পর্যন্ত আরো আমদানি হবে। ট্যারিফ কমিশন ও সরকারি হিসাব অনুযায়ী দেশে ছোলার চাহিদা মাসে ১২ হাজার টন। তবে রমজানে তা ৫০ হাজার টন ছাড়িয়ে যায়। গতবছরে ছোলা আমদানি হয়েছে দুই লাখ ৫৩ হাজার টন। সেই ছোলা এ বছরেও মজুদ ছিল। এরপর গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত আমদানি হয়েছে আরো ৫৬ হাজার টন। চলতি মাসেও আসছে। চার্টার্ড জাহাজ এবং কন্টেইনারে আমদানি হচ্ছে ছোলা। রমজানে খেজুরের চাহিদা প্রায় ৩৫ হাজার টন। আমদানি হয়েছে ৫০ হাজার টনেরও বেশি।

ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গেছে, রমজান সামনে রেখে চাহিদা অনুযায়ী খেজুর আমদানি হয়ে গেছে। গত ডিসেম্বর থেকে খেজুর আমদানি শুরু হয়েছে। তাই রমজানে খেজুরের দাম স্বাভাবিক থাকবে বাজারে।

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাহবুবুল আলম রাইজিংবিডিকে বলেন, এবারের রমজানে জিনিসের দর স্বাভাবিক থাকবে বলে আশা করা যাচ্ছে। রমজানের অত্যাবশ্যকীয় সব ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ পরিস্থিতি ভাল।

রমজানের বাজার স্থিতিশীল রাখতে চট্টগ্রাম চেম্বারের পক্ষ থেকেও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে মাহবুবুল আলম মন্তব্য করেন।




রাইজিংবিডি/চট্টগ্রাম/১৮ এপ্রিল ২০১৭/রেজাউল/রুহুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়