ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

আগামী অর্থবছরে সম্ভাব্য রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ২,৭১,২৬০ কোটি টাকা

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০১, ২৭ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আগামী অর্থবছরে সম্ভাব্য রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ২,৭১,২৬০ কোটি টাকা

কেএমএ হাসনাত : আগামী ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে দুই লাখ ৭১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা। করের আওতা ও হার বাড়িয়ে রাজস্ব আদায়ের এই সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে যাচ্ছে সরকার। যা চলতি অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৮ শতাংশ বেশি।

সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এই আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে দুই লাখ ১০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। টাকার অঙ্কে আগামী অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬০ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা বেশি। অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, মূলত: মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট)- এর ওপর নির্ভর করে আগামী অর্থবছরে বিশাল অঙ্কের রাজস্ব আয়ের এই সম্ভাব্য টার্গেট দেয়া হচ্ছে। কারণ, আগামী অর্থবছরের শুরু থেকে ভ্যাটের নতুন হার কার্যকর করা হচ্ছে। এই হার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ শতাংশ। যদিও ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে এই ভ্যাটের হার নিয়ে আপত্তি রয়েছে। তারা বলেছেন, ভ্যাটের হার কোনো অবস্থায়ই ১০ শতাংশের বেশি হওয়া উচিত নয়। সরকার যে হার নির্ধারণ করেছে তা বাস্তবায়ন হলে সামগ্রিক ভাবে দেশের ব্যবসা ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পরবে। পাশাপাশি পণ্যমূল্য অত্যধিক বেড়ে যাবে।

তবে  বিষয়টি নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, আগামী ১ জুলাই থেকে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাটই ব্যবসায়ীদের দিতে হবে। সরকার মনে করছে, আগামী অর্থবছরে ভ্যাট থেকেই রাজস্ব আদায় হবে প্রায় লাখ কোটি টাকার মত। চলতি অর্থবছরে যা নির্ধারিত রয়েছে ৭২ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা।

অর্থ বিভাগ ও এনবিআর সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের যে দুই লাখ ৭১ হাজার ২২৬০ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তার মধ্যে কর রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ধরা আছে দুই লাখ ৪৪ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআর থেকে প্রাপ্তির প্রস্তাব করা হয়েছে দুই লাখ ৩৬ হাজার ২০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে যা ছিল দুই লাখ ১০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় তা সংশোধন করে নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৮৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

চলতি ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে মোট রাজস্ব প্রাপ্তি ধরা রয়েছে দুইলাখ ৪২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা। এর মধ্যে কর রাজস্ব আদায় ধরা আছে দুই লাখ ১০ হাজার ৪০২ কোটি টাকা। যার মধ্যে এনবিআর কর্তৃক রাজস্ব আদায়ের দুই লাখ ৩ হাজার ১৫২ কোটি টাকা রয়েছে।

অর্থ বিভাগের এককজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চলতি অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল তাকে উচ্চাভিলাষী বলা না হলে তা অর্জন করতে হলে যে সব উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন তা নেওয়া হয়নি। ফলে অর্থবছরের শেষ প্রান্তে এসে দেখা যাচ্ছে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কারণ, চলতি অর্থবছরের আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার ৪৪ দশমিক ৯ শতাংশ। যেখানে কর রাজস্ব আদায় হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার ৪৫ শতাংশ এবং কর বহির্ভূত রাজস্ব আদায় হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার ৪৩ দশমিক ৪ শতাংশ।

সূত্র জানায়. গত অর্থবছরের সঙ্গে রাজস্ব আদায়ের তুলনায় এবার আদায় কিছুটা কম হতে পারে। গত ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে আটমাসে রাজস্ব আদায় হয়েছিল লক্ষ্যমাত্রার ৫০ শতাংশ। যেখানে কর রাজস্ব আদায় হয়েছিল লক্ষ্যমাত্রার ৫০ শতাংশ এবং কর বহির্ভূত রাজস্ব আদায় হয়েছিল লক্ষ্যমাত্রার ৪৯ দশমিক ৩ শতাংশ। এই বাস্তবতায় রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রা ২৮ ভাগ কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে দুই লাখ ১০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ এপ্রিল ২০১৭/হাসনাত/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়