ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ইট ভাটার গ্যাসে পুড়েছে জমির ফসল

বাদশাহ সৈকত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫৮, ১৬ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ইট ভাটার গ্যাসে পুড়েছে জমির ফসল

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামে ইট ভাটার বিষাক্ত গ্যাসে পুড়ে গেছে শতাধিক একর জমির বোরো ধান। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কচুখেত ও বড়ই বাগান এবং বিভিন্ন প্রজাতির সহস্রাধিক গাছপালা।

জমির পাকা ধান পুড়ে যাওয়ায় ও অন্যান্য ফসলের ক্ষতি হওয়ায় দিশেহারা কৃষকরা।

জেলার সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়ায় সিএইচবি ব্রিকস নামের একটি ইট ভাটার ইট পোড়ানোয় সৃষ্টি হয় বিষাক্ত গ্যাস। এক সপ্তাহ আগে রাতের আঁধারে ওই গ্যাস ছেড়ে দেয় ভাটার মালিক। কৃষি জমির পাশে অবস্থিত এ ভাটার গ্যাস অন্যান্য বছর ফসল ওঠার পর ছাড়া হলেও, এ বছর ফসল না উঠতেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এতে আস্তে আস্তে ভাটার পাশে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পুড়ে গেছে চৌধুরীপাড়া, হাজিরডোবা ও বানির খামার গ্রামের শতাধিক একর জমির পাকা ও আধাপাকা বোরো ধানখেত। এছাড়াও কচুখেত ও বরই বাগান পুড়ে গেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ভাটা মালিকের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। তারা বলেছেন, নিয়মনীতি না মেনে কৃষি জমি ও বসতবাড়ির পাশে যত্রতত্র গড়ে ওঠা ইট ভাটা বন্ধ করে দেওয়া হোক।

ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়া গ্রামের খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘জমির পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার আগ মুহূর্তে ভাটার বিষাক্ত গ্যাসে ধান পুড়ে যাওয়ায় সারা বছরের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছি। এত কষ্ট করে টাকা পয়সা খরচ করে আবাদ করেও বউ বাচ্চা নিয়ে উপোস থাকতে হবে। আমি ভাটার মালিকের বিচার চাই।’

একই ইউনিয়নের হাজির ডোবা গ্রামের ফুলাল্লি মিয়া বলেন, ‘ভাটার বিষাক্ত গ্যাসে আমার তিন একরেরও বেশি জমির বোরো ধানখেত পুড়ে গেছে। আমি এর ক্ষতিপূরণ চাই।

ভোগডাঙ্গার বানির খামার গ্রামের আমিনুল ইসলাম ও আবুল হোসেন জানান, তারা দুজনে ১ একর জমি বর্গা নিয়ে বরইয়ের বাগান করেছেন। ইট ভাটার বিষাক্ত গ্যাসে গাছের সব কচি পাতা পুড়ে গেছে। এ অবস্থায় নতুন করে পাতা গজাতে পারবে না। তাই পুরোটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘ইট ভাটার গ্যাসে ক্ষতিগ্রস্ত ফসলি জমি পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের পরিমাণ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। কৃষকের ফসলের ক্ষতিপূরণ না দিলে ইট ভাটার মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ ব্যাপারে ইট ভাটার মালিক শাহীন চৌধুরী ভাটা থেকে ছেড়ে দেওয়া গ্যাসে ফসলের ক্ষতি হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘কৃষকরা যতটা অভিযোগ করছেন ততটা ক্ষতি হয়নি।’



রাইজিংবিডি/কুড়িগ্রাম/১৬ মে ২০১৭/বাদশাহ্ সৈকত/রুহুল/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়