ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

‘ভ্যাট আইন জীবনযাত্রায় নেতিবাচক হবে না’

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫৭, ২০ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘ভ্যাট আইন জীবনযাত্রায় নেতিবাচক হবে না’

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : নতুন ভ্যাট আইন ১২ বাস্তবায়নে কোনোভাবেই জনসাধারণের জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান।

শনিবার দুপুরে কাকরাইল আইডিইবি সম্মেলন কেন্দ্রে নতুন ভ্যাট আইন নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনায় সভাপতির বক্তব্যে চেয়ারম্যান এ মন্তব্যে করেন।

ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের সম্মেলন কক্ষে দেশের মিডিয়া বিজনেস এডিটর, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও সংবাদকর্মীদের সঙ্গে নতুন ভ্যাট আইন নিয়ে উন্মুক্ত এই আলোচনা করেন চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, ‘নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে কোনোভাবেই জনসাধারণের জীবনযাত্রায় নেতিবাচক চাপ ফেলবে না। কারণ নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য সম্পূর্ণ ভ্যাটের বাইরে রাখা হয়েছে। তাই বাজারে এই গুলোর দাম বাড়ার কোনো সুযোগ নেই।’

নতুন ভ্যাট আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘স্বচ্ছ, আধুনিক, ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি যোগাযোগবিহীন, সার্বক্ষণিক, সময়োপযোগী, সর্বোপরি দেশি-বিদেশি ব্যবসাবান্ধব ও চাহিদার উপযোগী এটি। বিভিন্ন আঙ্গিকে নতুন আইন পুরোনো আইনের চেয়ে উৎকৃষ্ট।’

আলোচনায় এনবিআর কর্মকর্তারা বলেন, ‘ভ্যাট আইন আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার ভিত্তিতে প্রণীত। এতে দেশীয় শিল্পের ন্যায্য সুরক্ষা, রপ্তানীমুখি খাতে সুবিধা, আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির ব্যবস্থা থাকবে। সাধারণ জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন বিষয়ে (মৌলিক চাহিদা, খাদ্য ও কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, বাসস্থান ইত্যাদি) বিষয়ে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া আছে। শিগগিরই কয়েক পৃষ্ঠার দীর্ঘ তালিকা প্রকাশ করা হবে। পুরোনো আইনে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য কোনো অব্যাহতি ছিল না। নতুন আইনে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত টার্নওভার হলে ভ্যাট দিতে হবে না।’

এ ছাড়া ৮০ লাখ টাকা পর্যন্ত টার্নওভার হলে মাত্র ৩ শতাংশ টার্নওভার কর দিতে হবে।

আলোচনায় ব্যবসায়ীদের সুবিধার বিষয়ে বলা হয়, ভ্যাট কর্মকর্তাদের অনুমতি ছাড়াই ব্যবসায়ী নিজের উৎপাদিত পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করতে পারবেন। বহুব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য মাত্র একটি নিবন্ধন নেওয়ার সুবিধা থাকছে। নতুন আইনে ভ্যাট কর্মকর্তাদের দায়বদ্ধতা বাড়ানো হয়েছে এবং অহেতুক শিল্প কারখানা পরিদর্শনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ভ্যাট কর্মকর্তারা সেবার মনোভাব নিয়ে ‘হালখাতা’ ও 'মেলা'র পরিবেশে দায়িত্ব পালন করবেন। এজন্য এনবিআর বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। আয়োজন করেছেন নিবন্ধন মেলাসহ আলোচনা সভার।

নতুন আইন সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাস্তবায়িত হবে। ফলে ব্যবসায়ীরা নিবন্ধনকরণ, রিটার্ন প্রদান, অনলাইন পেমেন্ট, রিফান্ড, ইত্যাদি সহজে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন করতে পারবেন। এতে ব্যবসার ও উৎপাদনের খরচ কমবে এবং জনসাধারণ উপকৃত হবেন। নতুন আইনে প্রচলিত আইনের মতোই ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায় হবে। এটা নতুনভাবে আরোপিত হচ্ছে না। বরং সব পণ্য ও সেবার মূল্য নির্ধারণে ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত করে হিসাব নির্ধারণের পদ্ধতি অনূসৃত হওয়ায় পণ্য ও সেবার মূল্য কমবে।

এ ছাড়া রেয়াত প্রদানের সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি থাকায় উদ্যোক্তা ও উৎপাদনকারীরা উৎপাদন খরচ কমাতে পারবেন। লাভবান হবেন তারা, জনগণও লাভবান হবেন। সামগ্রিকভাবে নতুন ভ্যাট আইন, সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। সবাই লাভবান হবেন। ১লা জুলাই ২০১৭ এ বাস্তবায়নের পরে কোনো সমস্যা হলে পরামর্শমূলক পদ্ধতিতে তার সমাধান বের করা হবে।

সভায় এনবিআর সদস্যা (শুল্ক ও ভ্যাট প্রশাসন) মো. রেজাউল হাসান, সদস্য (ভ্যাটনীতি) ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন, সদস্য ( কর প্রশাসন) আবদুর রাজ্জাকসহ কাস্টমস ও কর বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ মে ২০১৭/এম এ রহমান/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়